"ধর্ম যার যার , উৎসব সবার" ঈমান বিধ্বংসী প্রকল্প

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ০৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:১০:৩৩ রাত



শেখ হাসিনার দাবি হল তিনি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন, এমনকি তাহাজ্জুজও তাঁর কাযা হয় না। হিজাবের ক্ষেত্রেও খালেদা জিয়ার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে আছেন। তাঁর মূখরোচক কথার মধ্যে প্রচলিত আছে "মদিনা সনদে দেশ চালাচ্ছেন", "ক্ষমতায় গেলে ইসলাম বিরোধী কোন আইন করবেন না"। কিন্তু তাঁর কাজ ও কিছু উক্তি প্রকৃত পরহেজগারির প্রমাণ বহন করছে না। মূখে ইসলামের কথা বললেও কার্যত ইসলাম বিদ্বেষীদের সাথে তাঁর দহরম-মহরম সম্পর্ক বেশী। দল-মত নির্বিশেষে ইসলামিষ্টরা নির্যাতিত হচ্ছেন সর্বত্রই। দাড়ি-টুপি ওয়ালাদের সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে, তাঁরা হেনাস্থার স্বীকার হচ্ছেন। যেমন ইসলামী চত্বর হিসাবে খ্যাতি পাওয়া শাপলা চত্বরে হেফাজতের নিরীহ কর্মীদের উপর রাতের আঁধারে যেভাবে অমানবিক অভিযান চালিয়ে গণহত্যা সংঘটিত করা হয়েছিল ও মাদ্রাসা ছাত্রদের যেভাবে কান ধরে উঠ-বস করিয়েছিল তাতে হাসিনার উপর আলেম-ওলামাদের আস্থা-বিশ্বাসে ছেদ পড়ে, আলেমরা অপমানিত হয়েছেন।

হাল আমলের তাঁর সবচেয়ে বিতর্কিত মন্তব্য হল , "ধর্ম যার যার , উৎসব সবার"। এই উৎসবগুলো যদি হতো আমাদের বাঙ্গালি চেতনার জাতীয় উৎসব যেমন পহেলা বৈশাখ তাহলে হয়ত এত আপত্তি থাকত না। কিন্তু শেখ হাসিনা দুর্গা পূজাকে সবার উৎসব বলেছেন, যেখানে এই দেশে ৯০ ভাগ জনগণ মুসলিম। বিজ্ঞ আলেমরা শেখ হাসিনার এই ঈমান বিধ্বংসী প্রজেক্টের সমালোচনা করছেন কঠোরভাবে। আলেমদের মতে হিন্দুদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুসলমানরা যেতে পারেন না। কারণ এদের প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবে মুর্তি পুজা করা হয়। এহেন শিরিকী উৎসব কখনো সার্বজনীন হতে পারে না। দেব-দেবীর মুর্তিকে উৎসর্গিত পূজার প্রসাদ খাওয়াও হারাম ।

আল্লাহ বলেন, ওই সব প্রাণী যা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করা হয় তা হারাম' (সূরা মায়েদা-৩)

কিন্তু কিছু মুখোশধারী ইসলামবিরোধী গোষ্ঠি সাধারণ মুসলিমদের শেখ হাসিনার এই উক্তি দ্বারা প্রমাণ করতে চাচ্ছেন, হিন্দুদের পূজা উৎসবে গিয়ে তাদের সাথে দেব-দেবীদের সামনে প্রনাম করা, পূজার প্রসাদ খাওয়া ও দেবীদের কাছে কল্যাণ কামনা করা অসাম্প্রদায়িক চেতনার অংশ। এতে ঈমানের ক্ষতি হবে না। অথচ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ভিন্ন কথা।

আল্লাহ বলেন,

"আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে কিছু চাওয়া সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, এবং তুমি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডেকো না,যারা তোমার লাভ ও ক্ষতি সাধন করতে পারে না।আর যদি তাই করো তাহলে তুমি অত্যচারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে"। (সূরা ইউনুস: ১০৬)

কার্যত এভাবে মুসলমানদের ঈমানই নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। শিরকযুক্ত ও ঈমানবিহীন কোন ইবাদতই আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্য হবে না। শেষ বিচারে চিরস্থায়ী ক্ষতির স্বীকার হবেন যদিও তা তাদের কাছে এখন বোধগম্য হচ্ছে না।

আল্লাহ তায়ালা বলে, নিশ্চয় শিরক বড় জুলুম-সুরা লুকমান-১৩ ।

যে ব্যক্তি শিরক থেকে তাওবা করবে না, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না। বড় বিভান্তি হল পূজায় যাওয়া যে শিরক তা সাধারণ মুসলিমরা বুঝতে পারছে না, তওবা করার চেতনাই কেমনে আসবে? ফলে ঈমান হারা হয়ে মূল্যহীন ইবাদত করছে।

আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরিক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না,তা ব্যতীত অন্য যে কোনো অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন' (সূরা নিসা:৪৮)

আল্লাহ অন্যত্র বলেন, যে ব্যক্তি তাঁর(আল্লাহর) সাথে শিরক করবে, তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং সে চিরস্থায়ী জাহান্নামে অবস্থান করবে' (সূরা মায়েদা:৭২)

তবে ধর্মীয় উৎসব ব্যতীত অন্য কোন, যেমন বিবাহ ধরণের উৎসব হয় যেখানে ধর্মীয় বিষয় মূখ্য নয় সেগুলোতে অংশ নিতে আপত্তি থাকার কথা নয়।কিন্তু ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকা স্বর্থেও অসচেতন মুসলিমদের "ধর্ম যার যার , উৎসব সবার" নামক মুখ রোচক স্লোগান দ্বারা প্রতারিত করা হয় তা অদূর ভবিষ্যতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করবে। কারণ সচেতন মুসলিমরা ঈমান বিধ্বংসী শিরকের মত ষড়যন্ত্র কখনো মেনে নিবে না।তারা যেকোনভাবে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। সনাতন ধর্মী ভাইদের এই ব্যাপারে বেশী সচেতন হওয়া দরকার যেন দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে কোন ধরণের ছেদ না পড়ে।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্য,আমাদের ধর্ম আমাদের জন্য...।"(সুরা কাফিরুন:৬)।

শেখ হাসিনার কুরআনের এই আয়াত জানা না থাকার কথা নয়। যেহেতু হিন্দু ধর্ম সম্পূর্ণ শিরক নির্ভর ধর্ম তবুও রাষ্ট্রপ্রধান ও ধার্মিক হয়েও তিনি বারবার কেন দেশের মুসলিম জনগণকে উক্ত উক্তি দ্বারা বিভ্রান্ত করছেন তা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আমরা অযু ভাংগা, সালাত-সিয়াম ভংগার ব্যাপারে সতর্ক হলেও ঈমান ভাঙ্গার বিষয় গুলোর ব্যাপারে একেবারে বেখবর। ফলে হিন্দুদের পূজা উৎসবে গিয়ে প্রতি বছর যে সব মুসলিম ঈমান ধ্বংস করে আসছেন, তার দায় শেখ হাসিনা এড়াতে পারেন না।

বিষয়: বিবিধ

১১৮৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378465
০৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১২:৪৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : হিন্দু নিয়মে পুজার বেদিতে কোন অহিন্দু এমনকি নিচু জাতির হিন্দুর স্পর্ষ পড়লেই দেবি অশুদ্ধ হয়ে যায়। সেখানে কিভাবে সবার উৎসব হয়???
০৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০১:৩৮
313564
আব্দুল্লাহ আল রাহাত লিখেছেন : এত গভীরে গেলেন! হিন্দু ধর্মে মূর্তি পূজাই তো হারাম! মরার পর পুড়ানোর কোন বিধান এদের ধর্ম শাস্ত্রে নেই।
378474
০৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০১:৪১
বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ লিখেছেন : শিরকীদের শিরকী উৎসবে গেলে সেও ঐ দলেরই অন্তর্ভূক্ত হবে। এই ভাবে কেউ মারা গেলে নিশ্চিত ভাবে তার স্থান জাহান্নামে হবে।
378478
০৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৩:৫৮
স্বপন২ লিখেছেন :

ভালো লাগলো।
378492
০৯ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১০:৪০
হতভাগা লিখেছেন : সমস্যা আমাদের মুসলমানদের মধ্যেই ।

হিন্দুদের পূঁজায় অত্যুৎসাহী মুসলমানদের মজা করতে দেখা যায় ।

কোন হিন্দুকে কি একজন মুসলমান কুরবানীর দিন গরুর গোস্ত খাবার দাওয়াতে আনতে পারবে?
378494
০৯ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১১:৫২
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : চেতনা মধূর হয়ে যায়, ইসলামবিরোধী যখন হয়।

কোরবানী ঈদে হিন্দুরা গরুর গোশত খাবে এটা কি আমরা আশা করতে পারি? তখন চেতনা অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে না, কট্টর সাম্প্রদায়িক হয়ে যায়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File