বহুরুপী কবি সৈয়দ শামসুল হক
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:০১:৩৯ রাত
কবি সৈয়দ শামসুল হক মারা গেলেন। ছিলেন ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক। তাই শেষ জীবনে কদরও পেয়েছেন ভাল। কিন্তু মরার পর অন্য নাস্তিকদের মত ইসলামের জানাজা ও কবরে রাখার সম্মানের লোভ সামলাতে পারলেন না! অসাম্প্রদায়িক চেতনার সাথে এই কেমন স্ববিরোধিতা! নাস্তিকরা এত ভাবেন, কিন্তু তাদের ভাবনায় এখনো লাশ সৎকারের অসাম্প্রদায়িক পন্থাটা আবিষ্কার করতে পারলেন না। মরার পর সব নাস্তিক সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠেন! তারা কখনো কি ভেবে দেখেন লাশকে যখন কবরে রাখা হয় কি বলে রাখা হয়! ও আরবি তারবি বুঝি না! একদিনে কি আর জাত যায়!
সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণের জন্য পরিচিতি পেয়েছেন সব্যসাচী লেখক হিসাবে। রাজনৈতিক ও জীবন দর্শনে নানা বাক পরিবর্তন হওয়ায় অনেকের কাছে বহুরুপী হিসাবেও পরিচিত। আস্তিক থাকে নাস্তিক ইসলামবিদ্বেষী হয়ে ওঠা, পাকিস্তানপন্থী থেকে মুক্তযুদ্ধপন্থী। সবসময় সরকারের আনুকূল্য থেকে নানা সম্মাননা আদায় যা অন্য অনেক খ্যাতিমান লেখকরা পারেননি। তাঁর ইসলামবিদ্বেষী হয়ে ওঠার নমুনা হল- তিনি তাঁর ‘মরা ময়ূর’ নামক কাব্যনাট্যে ভোরের কাককে অনুরোধ করেছেন- ও কাক! তুই খুব জোরে কা কা কর, যাতে মুয়াজ্জিনের আজানটা আর শোনা না যায়!
পাকিস্তানের অখণ্ডতার পক্ষে বাঙ্গালি বুদ্ধিজিবীদের মধ্যে যারা বিবৃতি দিয়েছিলেন তাদের একজন নাকি সৈয়দ শামসুল হক! কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক-উপন্যাস লিখে রাজাকার তকমা থেকে বেছে গেলেন। নাস্তিক ও আওয়ামীপন্থী হয়ে ওঠায় মরণকালে নাস্তিক মিড়িয়া ও সরকারের কাছ থেকে সম্মান ও স্তুতির অভাব হল না। নাস্তিক থেকে ইসলামপন্থী হয়ে উঠা কবি আল মাহমুদ এই সম্মান ও স্তুতি পাবেন তো! এখনইতো মিড়িয়ার কাছে হারিয়ে গেছেন তিনি! আস্তিক হয়ে উঠা যেন মহা অপরাধ! তাঁর কৃতিত্ব আর স্বরণ করা হয় না।
সৈয়দ শামসুল হকের পাকিস্তান প্রেমের নমুনা পাওয়া যায়, ১৯৬৬ সালের জুন মাসে প্রকাশিত তাঁর "রণাঙ্গন" নামক একটি সংকলন যাতে ভারতের বিরুদ্ধে বলা হয় বলা
"সারা শহরে বিদ্যুতের মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই সংবাদ। ক্রুদ্ধ হয়ে উঠেছে জাতি। কী দু:সাহস এই পররাজ্য লোভী হিংস্র বর্বর ভারতের। একে একে হায়দ্রাবাদ, জুনাগড়, মানতাদাড়, গোয়া দখল করে কাশ্মীরের জনসাধারণের প্রতি দেয়া ওয়াদা খেলাপ করে পায়ের নীচে তাদের পিষে মারবার ঘৃণ্য আয়োজন করেও ক্ষুধা মেটেনি ভারতের। সে এখন পাকিস্তানের পবিত্র ভূমিতে তার নখর বিদ্ধ করেছে।”
এই সবের মাঝে সবচেয়ে বড় অভিযোগ পুরুষবিদ্বেষী তসলিমা নাসরিনের । তসলিমা নাসরিন তাঁর "ক" নামক নিষিদ্ধ বইয়ে সৈয়দ শামসুল হকের বিরুদ্ধে ফাঁদে ফেলে তাঁর দেহ ভোগের অভিযোগ করেছেন, যদিও শামসুল হক তসলিমাকে কন্যা হিসাবে জানতেন। ১৮+ কবিতা লিখার কারণে চটি লেখকের তকমাও লাগিয়েছেন কেউ কেউ।
১৮+ কবিতার নমুনা-
""যখন দু’স্তন মেলে ডেকে নিলে বুকের ওপরে,
স্বর্গের জঘন খুলে দেখালে যে দীপ্তির প্রকাশ
মুহুর্তেই ঘুচে গেল তৃষিতের অপেক্ষার ত্রাশ...
"যখন খুলছো তুমি দেহ থেকে শাড়ি ও শেমিজ,
তখন উদ্বেল কেউ হয়ে ওঠে কৃষি-প্রতিভায়…
বিষয়: বিবিধ
২৮৭৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন