যখন দায়ীর চেয়ে মুফতি বেশী
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ১৪ জুলাই, ২০১৬, ১০:৩৮:১০ সকাল
মওলানা হাসানুল হক ইনু বলেছেন, “পিস টিভি বহু ক্ষেত্রে মুসলমান সমাজের কোরান, সুন্নাহ, হাদিস, বাংলাদেশের সংবিধান, দেশজ সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না।”, এই ফতোয়া দেওয়ার জন্য মুফতি ইনু কোন মাদ্রাসায় পড়েছিলেন? কোন আলেমের ছহুবতে গিয়েছিলেন? দেখেন মুফতিফিরির কি অবস্থা নাস্তিকও মাথায় টুপি দিয়ে ফতোয়া দিতে পারেন! এই দায় কার উপর বর্তাবে? এদেশের আলেমদের উপর নয় কি?
কওমীপন্থী যে আলেমরা পিস টিভি বন্ধে আনন্দে মিষ্টান্ন খাচ্ছেন, ইসলামবিদ্বেষীদের পরবর্তী পদেক্ষেপ কি জানেন তো? মুফতি শামিম আফজল আপনাদের জন্যও সুসংবাদ নিয়ে এসেছেন, জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মুফতি ইনু খুতবা লিখে দিবেন, আর আপনারা তা তোতাপাথির মত পড়ে যাবেন। খুতবা যদি সরকার লিখে দেয়, তাহলে বিটিভিতে জুমার দিনে খুতবার অড়িও ক্যাসেট বাজাইলে তো হয়? মসজিদে মোল্লা দিয়ে পড়ানোর কি দরকার? শামিম আফজালের মত ইসলামবিদ্বেষী লোক খুতবা নিয়ন্ত্রণের সহস দেখায়। ফরিদ উদ্দিন মাসুউদের মত সরকারী নাস্তিক পুজারী বিতর্কিত ব্যক্তি ইসলামের আড়তদারি নিয়ে নিছে। এই দায় কার উপর বর্তাবেন? কেন এই মুনাফেক টাইপের সরকারী কথিত আলেমের এত দৌরাত্ব্য?
কওমীপন্থী আলেমদের একটা বড় সমস্যা হল তারা সব সময় ঠেকে শিখে। বিচক্ষণতা ও দূরদর্শীতার চর্চা কম করে। একটা সময় ইংরেজী শিক্ষা তাদের কাছে বড্ড পাপ মনে হত, কিন্তু কোরান পল্টাইনি, হাদিস পাল্টাইনি, কিন্তু তাদের মত পাল্টাইছে। টিভি দেখা হারাম ছিল, কিন্তু এখন আর হারাম বলছে না। একসময় ইন্টারনেট হারাম ছিল, কিছু বছর আগেও উনাদেরকে পেসবুক ইউটিউবে পাওয়া যেত না, কিন্তু এখন সরব !
তাহলে কেন ধরে নেব না কিছুকাল পরে তারা জাকির নায়েকের গুরুত্ব বুঝে তার পক্ষে ফতোয়া দিবেন না? বুঝবেন যখন তাদের গলাও টিপে ধরা হবে!
ইসলামপন্থী ও আলেমদের নিজেদের মধ্যে মত বিরোধের অন্যতম করণ হল আমরা সবাই মুফতি হতে চাই, সত্যকারের দায়ী নয়। মুফতি কেন? এখানে জ্ঞানের জাহির করা যায়। অন্যের উপর নিজের মত চাপানো যায়? নিজেদের মুরিদ পাওয়া যায়। অথচ আল্লাহ যতটা না মুফতি তার চেয়ে বেশি দায়ী। আল্লাহ কুরানের বেশী অংশ ব্যয় করেছেন মানুষকে তাঁর দিকে আহবান করে, আজাবের ভয় দেখিয়ে, জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে। আর এর ফাঁকে ফাঁকে কিছু উপদেশ বাণী শুনিয়েছেন। আর আল্লাহ দায়ী হওয়ার আহবান করেছেন।
"ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভালো কথা আর কার হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি আহবান করেছে, সৎ কাজ করেছে এবং বলেছে, আমি অনুগতদের একজন" (সূরা হামীম আসসাজদাহ : ৩৩)।
বলঃ হে আহলি কিতাব! এসো এমন একটি কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই ধরনের ৷ তা হচ্ছেঃ আমরা আল্লাহ ছাড়া কারোর বন্দেগী ও দাসত্ব করবো না৷ তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবো না৷ আর আমাদের কেউ আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও নিজের রব হিসেবে গ্রহন করবে না ৷ যদি তারা এ দাওয়াত গ্রহণ করতে প্রস্তুত না হয়, তাহলে পরিষ্কার বলে দাওঃ ‘‘তোমরা সাক্ষী থাকো, আমরা অবশ্যই মুসলিম। (৩.সূরা আল-ইমরান:৬৪)।
বন্দেগী ও দাসত্ব করবো না, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবো না, আর আমাদের কেউ আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও নিজের রব হিসেবে গ্রহন করবে না । এই তিনটি কথা যদি কেউ মেনে নেয় আমরা কি তার এমনভাবে বিরোধিতা করতে পারি যা হয় উৎপাটিত খেজুর বৃক্ষের মত? না কখনো নয়।
কেননা আমরা জানি না আসলে কে সঠিক পথে আছে কিংবা কে পথভ্রষ্ট । আমরা অনুমান করে কথা বলি যা সত্যের মাপকাটিতে অতি মুল্যহীন।
"নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ভাল জানেন, কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে। সূরা আল-কামার-৩০
বিষয়: বিবিধ
১০৭৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন