রাষ্ট্রের ভাষা ও ধর্ম
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ২৫ মার্চ, ২০১৬, ০৭:৪২:০১ সন্ধ্যা
রাষ্ট্রের ভাষা
আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা বাংলা। দেশের সব নাগরিকের মাতৃভাষা বাংলা নয়, উপজাতিদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা। কিন্তু এর পরও রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার কারণ এই দেশের বেশীর ভাগ মানুষ বাংলাভাষায় কথা বলে। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিল, কারণ এই দেশের অধিকাংশ মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা, উর্দু নয়। ভাষা হিসাবে উর্দু আমাদের শত্রু ছিল না। কেউ উর্দুতে কথা বললে আপত্তি থাকার কথা নয়। আপত্তি ছিল রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার প্রচেষ্ঠার কারণে। ইসলাম বিরোধীরা বলছেন, রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ইসলাম অপ্রয়োজনীয়। সংবিধানে ইসলাম না থাকলেও ইসলামের কোন ক্ষতি হবে না। সংবিধানে ইসলাম থাকাতে অন্য ধর্মের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাহলে সংবিধানে রাষ্ট্র ভাষা থাকার কি দরকার, রাষ্ট্র কি কথা বলে? রাষ্ট্রভাষা বাংলা থাকায় কি উপজাতিদের ভাষার অমর্যাদা হয় না?
রাষ্ট্রের ধর্ম
একটা রাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষের ধর্ম রাষ্ট্রধর্মের দাবি রাখে। এটি গণতান্ত্রিক অধিকার হিসাবে বিবেচনা করা যায়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে কিনা থাকবে না এই ফয়সালার ভার জনগণের উপর ছেড়ে দিতে হবে। এর ফয়সালা দেওয়ার নৈতিক অধিকার কোন বিচারকের নেই। সরকার চাইলে গণভোট দিতে পারে। যেহেতু রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ইসলাম সংবিধানে আছে, তা বাতিল করতে জনরায়ের দরকার। কিন্তু সরকার জনমতকে উপেক্ষা করে আদালতকে ব্যবহার করে তা বাতিল করতে চায়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ৯০ ভাগ মুসলমানের দাবি। বিশ্বের অল্প কয়েকটা মুসলিম দেশ ব্যতীত সব মুসলিম দেশের রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ইসলাম স্বীকৃত। পশ্চিমা রাষ্ট্র মুসলিম দেশের মডেল হতে পারে না। পশ্চিমা বিশ্বের শতকরা ২০ থেকে ৪০ ভাগ নাস্তিক। অনেকে আস্তিক হলেও কোন ধর্ম চর্চা করে না। এই সব দেশে নাগরিকের প্রত্যাহিক জীবনে ধর্মের ভূমিকা নেই বললে চলে। তাই তাদের কাছে রাষ্ট্রধর্ম থাকা না থাকা নিয়ে উদ্রেগ নেই।
মুসলিম দেশে নাস্তিক ও ইসলামবিদ্বেষীদের সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন।কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধ তারা বেশ তৎপর ও প্রভাবশালী। তাই মুসলিম দেশে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ইসলাম না থাকলে ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করবে, এই ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে আনা যেতে পারে তুরষ্কের কামাল পাশার ধর্মনিরেপক্ষতা। ধর্মনিরেপক্ষতার নামে সেখানে ধর্ম মন্ত্রণালয়, মাদরাসা-মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শিশুদের ইসলামী শিক্ষা , হজ্জ-ওমরা নিষিদ্ধ করা হয়, নারীদের জন্য হিজাব পরিধান বন্ধ করে দেওয়া হয়,আরবী অক্ষরের ব্যবহার ,আরবীতে কুরআন পড়া, নামাজ পড়া ও আজান দেওয়া করা হয় নিষিদ্ধ, তুর্কী ভাষায় আরবী হরফে বাদ দিয়ে ল্যাটিন হরফ প্রচলন করা হয়, সরকারী লোকদের জামাতে নামায পড়া, ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী সালাম দেওয়াসহ আরবী ভাষায় নাম রাখা নিষিদ্ধ ছিল। এভাবে যেহেতু ইসলাম নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষীরা নানা ষড়যন্ত্র করেছিল এখনো করছে তাই মুসলিম দেশের সংবিধানে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে স্বীকৃত থাকা ইসলামপ্রিয় মুসলিম সমাজের জন্য ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে সামাজিক ও রাষ্ট্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
বিষয়: বিবিধ
৯৯২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন