নারীর মর্যাদা, সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় পুরুষবিদ্বেষ ও বস্তুবাদী চিন্তা
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ০৮ মার্চ, ২০১৬, ০৩:০৬:৪১ দুপুর
নারীর মাথার উপর ইটের বুঝা তুলে দিয়ে নারীবাদীরা ভাবছে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। বেঁচে থাকার তাড়নায় আজ বৃদ্ধ বয়সেও নারীকে শ্রম দিতে হয়। ষাটোর্ধ নারীকে যখন সুইপারের কাজ করতে দেখি তখন মনে হয় এটাই কি নারী অধিকার অর্জন! এটাই কি নারী আন্দোলনের ফসল! এটা কি নিজ্ব বাড়ির কাজের চেয়ে সম্মানের কাজ! যে বয়সে সন্তানদের সেবা-যত্নে থাকার কথা সে বয়সে কাজের সন্ধানে বের হতে হয়। পশ্চিমাসহ আজ উন্নত বিশ্বে সন্তানের কাছে অনেক দরিদ্র মায়ের কোন মর্যাদা নেই। তাই তাদের স্থান বিদ্যাশ্রম। আর স্ত্রীরাতো হাতের ময়লা। আজ নারীদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে অধিকার আদায়ের জন্য নারীর একমাত্র পথ ইটের বুঝা মাথায় তুলে নেওয়া! কিন্তু এটা হওয়া উচিত ছিল সর্বশেষ পদক্ষেপ। আর প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত ছিল মানসিকতার পরিবর্তন। নারীবাদীরা মানসিকতার পরিবর্তনের জন্য কতটা তৎপর?
নারীর জন্য এহেন আন্দোলন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করে, যার ফলে অর্থের মাপকাঠিতে সম্পর্ক নির্ধারিত হচ্ছে। টাকা নাইতো ভালবাসাও নাই। ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা প্রসার ঘটছে।
সমাজে নারীর প্রভাব ও ক্ষমতা বাড়লেও পুরুষ সমাজের কাছে নারীর মর্যাদা ও সম্মান সমভাবে বাড়েনি। আইনগত ক্ষমতাকে অনেক নারী নানা ভাবে অপব্যাবহার করছে, যা পুরুষের কাছে নারীর ব্যাপারে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি করে দিচ্ছে।
শিক্ষিত নারীরা ভাল ও মর্যাদাপূর্ণ জব করলেও অশিক্ষিত শ্রমিক নারীদের উপর সম-অধিকারের নামে পুরুষের সমান কর্মভার তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে কি বাড়ির কাজ পুরুষরা করছে? বাড়ির কাজের দন্ধ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। শ্রমজীবী নারীরা কি আসলে তাদের স্বামীর কাছে সমাদর, অধিকার ও মর্যাদা পাচ্ছে? এমন অনেক ঘটনা আছে স্ত্রীর শ্রমে অর্জিত অর্থ স্বামী নিয়ে নিচ্ছে, সাথে দুটো লাথিও দিচ্ছে। এই কর্মভার নারীকে স্বাবলম্বী করলেও স্বামীর কাছে কার্যকর মর্যাদা অর্জন করে দিতে পারছে না।
নারী অধিকার আদায়ের জন্য জরুরী হল জনসচেতনতা। পারস্পরিক অধিকার বিষয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সচেতনতা ও বোধ উদয় হলে এই সমস্যার সামাধান কেবল সম্ভব। এই ক্ষেত্রে মুসলিম সমাজে ইসলাম নারীদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। ইসলামে নারীকে কত উঁচুতে স্থান দেওয়া হয়েছে তা নারীবাদীদের বুঝতে হবে। সম্মান ও মর্যাদা ইসলামে অর্থনৈতিক সামর্থের উপর নির্ভর করে না। কিন্তু নারীবাদীরা অর্থনীতি ভিত্তিক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই সব নারীবাদীরা মূলত পুরুষবিদ্বেষী। তারা পুরুষকে খাটো করে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ বেচে নিয়েছে যা পুরুষ শাসিত এই বিশ্বব্যবস্থায় কখনো সম্ভব নয়। নারীরা যদি পুরুষের চেয়ে শক্তিশালী হত প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে এই বিশ্বে পুরুষরা নারীর অধিনস্থ হয়ে থাকত। সুতরাং বাস্তবতার বাহিরে গিয়ে পুরুষ বিদ্বেষ ছড়িয়ে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
বিষয়: বিবিধ
১৭০০ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ময়লা ঘরে, বাইরেতো নয়। ঘরের চেয়ে বাইরে অনেক মজা, তাই বলেই খালি বাইরে যায়।
এরা অধিকার টধিকারের কিচ্ছু বুঝেনা। এদেরকে ঘরে কিছু করার, খেয়ে পরার সুযোগ দিলে, এরা বাহিরে যাবেনা। উপরতলার মানুষের চাইতে এদের কাছে ইজ্জত সম্ভ্রমের দাম অনেক বেশি। পেটের তাগিদেই এরা মাথায় ইট তুলে নেয়।
কুরআনে বলা হয়েছে, স্ত্রীরা স্বামীর ঘর দেখভালো করবে, নিজে এবং ঘরের সম্পদ হেফাজত করবে, কেননা স্বামীরা তাদের জন্য ব্যয় করে।
কিন্তু এখন মেয়েরাও কামাই করে, স্বামির টাকার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে হয়না। তাই তারা ঘরে থাকতে বাধ্য নয়। আসলে ভাই, তারা শুধু অর্থনোইতিক ব্যাপারটাই দেখে, শান্তি শৃঙ্খলার বিষয়টা দেখে না। এই জন্য স্বামী স্ত্রী দুজনেই ঘরের বাহির হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে সাংসারিক উন্নতি আসলেও সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা, পারিবারিক বন্ধন ইত্যাদি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এটাই নারীবাদীদের আন্দোলনের ফসল।
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন