তাহলে কি মীর কাসেম আলী খালাস পাচ্ছেন আগামীকাল?
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ০৭ মার্চ, ২০১৬, ০৫:৩০:৩৩ বিকাল
রায় কি হবে তা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে আদালত। কিন্তু আদালত, বিচারক ও বিচারকে প্রভাবিত করা হচ্ছে নানা পক্ষ থেকে নানা কৌশলে। এতো দিন সরকার পক্ষ থেকে বলা হতো জামায়েত বিচারকে বাধাগ্রস্ত করছে । কিন্তু জামায়াত আর আগের ধারায় নেই। জামায়াত তাদের নেতাদের প্রাণ একপ্রকার আওয়ামী লীগের হাতে তুলে দিয়েছেন, আর যা করার আল্লাহই করবেন। তাদের সহিংস প্রতিবাদ আর নেই। শীর্ষ নেতাদের বাদ দিয়ে পথ চলা শুরু করে দিয়েছে তারা ইতিমধ্যে। নতূন দলের গুঞ্জনও শুনা যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের মৃত্যু যেন অল্প কিছু সময়ের ফ্রেমে বাধা। কারো মুক্তির কোন সম্ভবনা নেই। জনপ্রিয় সাইদীকে আবার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। তাঁর হায়াত নিয়ে জামায়াতের সংশয় বেড়েছে। জামায়াত অহিংস হওয়ায় আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার একপ্রকার ইস্যু তৈরী করতে পাচ্ছে না। জনসমর্থনও থমকে আছে। শত চেষ্টা করেও বিএনপি-জামায়াতের মাঝে চিড় ধরাতে পারেনি, এই যেন মহা আক্ষেপ! নির্বাচন ও গণতন্ত্র প্রশ্নে হাসিনার ইমেজ তলানীতে যা প্রতিটি নির্বাচন প্রমাণ বহন করছে।
পতিত গণজাগরণ মঞ্চ আন্দোলনের মাধ্যমে আদালতকে প্রভাবিত করেছেন, তাদের আন্দোলনের ফসল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি।তারা আদালতের কাছে ফাঁসি চেয়েছে, ন্যায় বিচার চায়নি! এখন আবার মন্ত্রী কামরুল রীতিমত বিচারপতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন মীর কাসেম আলীর ফাঁসি বহাল রাখার জন্য। কামরুল বিচার মানেন যদি তাল গাছটা তার হয়! রায় নিয়ে মন্ত্রী কামরুলের ঘুম হারাম হয়ে গেছে, বুক বিধীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বিচারপতির মূখে গাঞ্জার গন্ধ পাচ্ছেন। আদালত ও প্রধান বিচারপতি নিয়ে অবমানাকর বক্তব্য ও উপদেশ দিচ্ছেন।
অবশ্য প্রধান বিচারপতিও অতি কথন করছেন যা আগে কোন বিচারপতি করেননি। সভা-সমাবেশে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন যার মাঝে রাজনীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধরীর রায়ের ব্যাপারে প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি বানানোর টোপ দেওয়া হয়েছিল বলে অনেকে বলছেন। কিন্তু টোপটা বিএনপি সঠিক সময়ে দিতে পারেনি। তখন থেকে সিনহার উপর আওয়ামী লীগের মাঝে কিছুটা সন্দেহ সৃষ্টি হয়। কিন্তু সেই সময়ের রায় আওয়ামী লীগকে আশাগত করেনি।
কিন্তু মীর কাসেম আলীর রায় নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা সংশয়। রাষ্ট্রপক্ষের ডকুমেন্টেই পাওয়া গেল বড় গরমিল। আসামী পক্ষের দাবি ঘটনার সময় মীর কাসেম আলী চট্রগ্রামেই ছিলেন না, তখন ছিলেন ঢাকায়, রাষ্ট্রপক্ষও তা স্বীকার করেছেন, তবে এটর্নী জেনারেলের যুক্তি হল ঢাকায় থেকে গিয়ে মীর কাসেম আলী অপরাধ করেছেন। কিন্তু তখনকার যোগাযোগের বাস্তবতায় প্রধান বিচারপতি সিনহার কাছে এই যুক্তি টেকে না। প্রধান বিচারপতি তা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, তাই মন্ত্রী কামরুল বুঝতে পেরেছেন যে, ন্যায় বিচার হলে মীর কাসেম আলীকে প্রধান বিচারপতি সিনহার হয় খালাস দিবেন নতোবা বিচারের পূন তদন্তে পাঠাবেন। তাই কামরুল সিনহাকে বিচারপতি পদ থেকে সরে যেতে বলছেন , বিএনপি-জামাতের এজেন্ট বানিয়ে দিচ্ছেন। “মীর কাশেম আলীকে ছাইড়া দিলে কলিজাটা ফাইটা যাইব” কামরুলের এমন আক্ষেপ প্রমাণ করে তিনি ফাঁসি চান, ন্যায় বিচার নয়।
যাই হোক প্রধান বিচারপতি কি আসলে মীর কাসেমী আলীর সাজা কমাবেন? নাকি কোন একটা অভিযোগে ফাঁসি রেখে দিবেন? আর এই আলোচনা-সমালোচনায় কি কোন ধাঁধা আছে? সম্প্রতিক ঘটনাবলী কি, “আমি দাঁড়াইয়া যাবো, আপনি বসাইয়া দিবেন, লোক দেখুক আমাদের সাথে কোন খাতির নাই” বহুল আলোচিত বিচারপতি প্রসিকিউটর সংলাপ মনে করে দে না!
বিষয়: বিবিধ
১০২৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন