সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসঃ ঝরে পড়ে অজস্র নিরীহ প্রাণ।
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ১৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:৪৯:২৭ দুপুর
আমরা নির্দয় হয়ে যাব : ওঁলাদ , প্রশ্ন তোমরা কখন সদয় ছিলে? প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। এই হামলা পশ্চিমা শক্তির আফগান সিরিয়া লিবিয়া, ইরাক ও প্যালেস্টাইনে তাদের সন্ত্রাসের চাষাবাদের ফসল। প্যারিসের জনগণকে এটা বুঝতে হবে। এই উপলব্ধি যত দ্রুতই হবে তাদের জন্যে তত মঙ্গল। মনে রাখতে হবে সন্ত্রাসকে নির্মূল করা যায় না, তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। আফগান সিরিয়া লিবিয়া, ইরাক ও প্যালেস্টাইনের জনগণেও মানবতা ও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। ফিলিস্তিনি শিশুদেরকে ‘পাথর ছোঁড়ার’ অভিযোগে গুলি করে হত্যা করা হয়। যখন ইসরাইল কারণে অকারণে বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করে ফিলিস্তিনি জনগণের উপর,তখন মানবতা ঘুমায়। প্যারিসে সন্ত্রাসী এই হামলা প্যারিসের জনগণের বিরুদ্ধে পশ্চিমা স্যাকুলার ও খ্রিষ্টান শাসকগোষ্ঠীর খাল কেটে কুমির আনা।
বিশ্বে প্রতিনিয়ত এমন হত্যাকান্ড ঘটছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে মার্কিন পরিকল্পনায় ড্রোন হামলায় সন্দেহভাজন জঙ্গি দমনের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করা অব্যাহত রেখেছে। কয়েকজন সন্দেহভাজন জঙ্গি হত্যার নামে আকাশ থেকে বোমা মেরে নিরীহ মুসলিম নারি-পুরুষ-শিশু হত্যাকে জায়েজ করে ফেলেছে।
সিরিয়ায় মানবাধিকার(গণতন্ত্র?) প্রতিষ্ঠা করতে আসাদ সরকারকে উৎখাতের নামের তিনলক্ষ নিরীহ জনগণ হত্যা করা হয়েছে ও হত্যাকান্ড অব্যাহত রয়েছে। লক্ষ লক্ষ জনগণকে বাস্তুহারা করেছে। সিরীয় শরণার্থীদের ইউরোপমুখী যাত্রায় অমানবিক সলিল সমাধি ও ইউরোপের তাদের গ্রহণ না করার মানসিকতা মানবতাবাদী মুখোশ পরা খৃষ্টান শাসকদের স্ববিরোধী মুখোশ উম্মুচিত হয়েছে। শিয়া-সুন্নি দ্বন্ধ ছাড়া সিরিয়ায় কোন ইসলামী ও গনতান্ত্রিক এজেন্ডা নেই। সিরিয়ায় মার্কিন-সৌদি আগ্রাসনের মুল লক্ষ শিয়া শক্তি ইরানকে কব্জায় নিয়ে আসা। এই একটি জায়াগায় মধ্যপাচ্যের রাজনীতির মূল খেলোয়াড় সৌদি আরব, প্রভাবশালী তুরষ্ক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। এরদোগান মনে করেছিল ফ্যাসিবাদী আসাদকে সরাতে পারলে সিরীয় মুসলিম ব্রাদারহোড়ের নেতৃত্বে সুন্নিপন্থী কোন সরকার গঠিত হবে। কিন্তু এরদোগানের এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের খয়েশ বুমেরাং হয়েছে। আর এই দিকে সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে ভুলের কাফফারা দিচ্ছেন।
ইতিহাসের প্রত্যেক দানবীয় হত্যাযজ্ঞের যুক্তি আছে । প্যারিসে এমন দানবীয় হত্যাকান্ডেরও একটা যুক্তি আছে। এই যুক্তি সবার কাছে যুক্তিযুক্ত হবে না। কিন্তু কোন কিছু বিশ্বজগতে অকারণে ঘটে না। এই সব দানবীয় হত্যাকান্ডে সত্যিকারের কারণ নির্ণয় না করতে পারলে বিশ্বে এমন হত্যাকান্ড ঘটতে থাকবে যার কোন মানবিক যুক্তি খোঁজে পাওয়া যাবে না।মনে রাখতে হবে অমানবিকতা হতে অমানবিকতার জন্ম হতে পারে,হিংসা থেকে সৃষ্ট হয় হিংসা। শত্রুকে আপনি ঢিল মারবেন, শত্রু আপনাকে চুমু দিবে না।
মানব ইসিহাসে প্রথম হত্যাকান্ড কাবিল কর্তৃক হবিলের হত্যার কারণ সবার জানা। ফেরাউনের শিশু হত্যাকান্ডের কারণ ছিল মুসা(আঃ) কে খথম করা, কিন্তু আল্লাহ মুসা(আঃ) কে তার কোলে লালন করেছেন। এগুলো আদি ইতিহাস।
সভ্য যুগে, খৃষ্টান জঙ্গি হিটলার ৬০ লক্ষ নিরীহ ইহুদি হত্যা করেছেন। তার যুক্তি ছিল ইহুদিরা বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিবে। আজ কল্প বিজ্ঞানে একটা প্রায় বলা হয় “ ভিন্ন গ্রহ থেকে এলিয়নরা এসে বিশ্বের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিবে”। আফগান হামলায় নিরীহ আফগানীদের হত্যার মার্কিন যুক্তি ছিল আফগান তালেবান সরকার সন্দেহভাজন টুইন টাওয়ার হামলাকারী উসমা বিন লাদেনকে মার্কিন সরকারের হাতে তুলে দেয় নাই।
সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে- এ অভিযোগের ভিত্তিতেই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইরাকে সামরিক হামলা চালিয়েছিল। প্রমাণ ছাড়া কেবল অভিযোগের ভিত্তিতে গনহত্যাকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যুক্তিযুক্ত মনে করেছিল। কিন্তু এ অভিযোগ পরবর্তী সময়ে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সাদ্দাম সরকারের পতনের পর দেশটিতে জাতিগত সহিংসতা মধ্যে উত্থান ঘটে ইসলামিক স্টেটের।
একটা দেশ, তার সন্তান ও মানবতার সাথে এটি ছিল পশ্চিমাদের খেলনা ও প্রতারণা। এর মাসুল তাদের দিতে হচ্ছে। এই দানবীয় আইএসএস তাদের খেলনার মাঠে তাদের খেলার ফলাফল। এই খেলার আরো ফসল পশ্চিমাদের ঘরে উঠবে।
বিষয়: বিবিধ
১০২৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এসব প্রতিশোধ থেকে নিজেদের বাঁচাতে হলে ওদের নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে , নীতির পরিবর্তন করতে হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন