‘আসবি না, আসলে কোপাব’
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ১৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:২২:৩৯ দুপুর
‘আসবি না, আসলে কোপাব’ এটি কোন চলচিত্রের ভিলেনের ডায়লগ নয়। রাজধানীর কচুক্ষেতে মিলিটারি পুলিশ সদস্য সামিদুল ইসলামকে কুপিয়েছে যে যুবক, সে, ধাওয়াকারীদের উদ্দেশে বলতে থাকে, ‘কেউ সামনে আসবি না, আসলে কোপাব’ । তাকে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর হিরুরা বলতে থাকে ‘নেমে না এলে গুলি করা হবে’।
এভাবে হত্যাকান্ড ও হত্যাচেষ্টা নিয়ে এখন দুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে, দীপন হত্যাকান্ডের পরে হত্যাকান্ডের মোটিভ নিয়ে বুদ্ধিজিবী সমাজ নতুনভাবে ভাবতে শুরু করেছে। কোথায় যেন হিসেব মিলাতে পারছেন না সরকার ঘরনার সুশীল সমাজ। দীপনের পিতা বলছেন “আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই না ” তিনি বলেন “যারা দীপনকে (ফয়সাল আরেফিন) হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি তাদের বিচার চাই না। তারা ভালো থাকুক। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। জানি, বিচার চেয়ে কোনো প্রতিকার হবে না।
এত দিন রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থাপনায় বিরোধী মেরুর লোকজনের গুম, হত্যা হওয়ায় তারা বেশ ফুরফুরে ছিলেন। কিন্তু এখন মনে করছেন অন্যের জন্য ফাতা ফাঁদে, নিজেরাই যেন ফেঁসে যাচ্ছেন। হত্যাকারিদের সুনির্দিষ্টভাবে সরকার চিহ্নিত করতে পারেননি । দুই বিদেশী হত্যাসহ সাম্প্রতিক কোন হত্যাকান্ডের কূলকিনারা বের করতে পারছেন না চৌকস গোয়ান্দারা। নামমাত্র কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাচ্ছেন সরকার। আসল খুনিদের বের না করে “বড়ভাই” তত্ত্ব আবিষ্কার করছেন সরকারের কর্তাব্যক্তিরা।
প্রতিহিংসার রাজনীতি ও একদলীয় বাকশালী শাসন ফেরাতে ভিন্ন মেরুর রাজনৈতিক শক্তির নির্মূল প্রকল্পে হত্যার সংষ্কৃতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। কে, কাক, কেন হত্যা করছে তার কোন সদুত্তর নেই। আমরা যেন রাসূল(সঃ) এর বর্ণীত এই জামানায় এসে দাঁড়িয়েছি যখন হত্যাকারী জানবে না কেন সে হত্যা করছে, আর নিহত ব্যক্তি জানবে না কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “সেই সত্বার কসম ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ ! দুনিয়া খতম হবে না, যে পর্যন্ত না মানুষের নিকটে আসে এমন একটি যুগ ‘যখন হত্যাকারী জানবে না যে কী অপরাধে সে হত্যা করছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না যে কী অপরাধের কারণে সে নিহত হয়ে গেল’ ।” প্রশ্ন করা হলো- ‘এমন যুলুম কিভাবে হবে !’ তিনি বললেনঃ “সেই যুগটাই হবে হত্যার যুগ । এরূপ যুগের ‘হত্যাকারী ও নিহত উভয় ব্যক্তিই জাহান্নামী’ ।” (মুসলিম-৭০৪০)
আজ দেশে পাঁচ কিসিমের হত্যা জায়েজ হয়ে গেছে। প্রথমত গদি রক্ষায় রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থাপনায় হত্যাকান্ড, জুড়িশিয়াল হত্যাকান্ড, কট্টর আস্তিক দ্বারা কট্টর ইসলামবিদ্ধেষী নাস্তিক হত্যাকান্ড, আধা-নাস্তিক কর্তৃক পুরা বা আধা-নাস্তিক হত্যাকান্ড, আধিপত্যবাদ ও দলীয় কোন্দলের মাধ্যমে হত্যাকান্ড। এখন লোকমহলে সন্দেহ, রাজনৈতিক কুটচালে জঙ্গিবাদের নাম করে সরকার নিজেরাই পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে।
এই ধরনের নির্বিচার হত্যা নিম্মোক্ত হাদিসকে স্বরণ করে দেয়।
। আবু হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “সময় সংকীর্ণ হতে থাকবে, আর ‘আমল হ্রাস পেতে থাকবে, কার্পণ্য ছড়িয়ে দেয়া হবে, ব্যাপক হারে ফিতনার বিকাশ ঘটবে । আর ‘হারজ’ ব্যাপকতর হবে ।” সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘সেটা (‘হারজ’) কি ?’ নবী (সাঃ) বললেনঃ “হত্যা, হত্যা ।” (বুখারী-৬৪৭০)
বিষয়: বিবিধ
১১৩৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন