জামায়াত কেন বলির পাঠা?
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ১২ জুলাই, ২০১৫, ০৬:৪৬:২৮ সন্ধ্যা
জামায়াত-শিবির শব্দদ্বয়কে বাংলার ভোগবাদী সুবিধাবাদী দেশপ্রেমীরা এতই কচলাইতেছে যে, এটি এখন ভদ্র গালিতে পরিনত হয়েছে। কাউকে স্বাধীনতাবিরোধী না বলে জামায়াত-শিবির বলে চালিয়ে দিলে হয়।
সৌদি আরবে প্রবল প্রতাপশালী চর্মোনাইয়ের পীরের ভাই ১ মাস ২৮ দিন সৌদিতে জেল খাটেন , দেশে ফিরে পেলেন মুরিদদের লাল-গালিচা ফুলের শুভেচ্ছা। আর তার এই কারাভোগের দায়ভারটা চাপালেন জামায়াত-শিবিরের কাঁধে।তিনি বললেন- জামায়াত-শিবির তাঁকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল।
পীর সাহেব যখন ভোগবাদী সুবিধাভোগীদের মত সন্দেহের বিষয় সত্যের কোটায় ফেলে মুরিদদের উদ্দশ্যে বক্ত্যব্য দেন-তখন জনাব পীর সাহেবের প্রতি কিছু মানুষের হাস্যরসের সৃষ্টি না হয়ে পারে না ।
এখন দেশের সকল অপকর্মের হোতা বানানো হচ্ছে জামায়াত-শিবিরকে। বোনাস হিসাবে বিএনপির নামও আসে। ইনু আর হাসান মাহমুদের সারাদিনের কাজ হল খালাদা জিয়াকে গালি দেওয়া। যে কোন শক্তি অপকর্মের জন্য ভয়-ভীতি তোয়াক্কা করে না। হত্যা লুট-পাট করেই দায়ভারটা তুলে দেন জামায়াত-শিবির এর কাঁধের উপর। প্রকৌশলী অভিজিত রায় হত্যা, ওয়াশিকুরসহ ব্লগার হত্যার দায় যথারীতি জামায়াতের উপর।
সম্প্রতি নীতিভ্রষ্ট আব্দুল গাফফার(আগা) চৌধুরী আল্লাহ সোবহানু তায়ালার নিরান্নবই নামে খোঁজে পেলেন দেবতাদের নাম।আর তা নিয়ে দেশে তার বিরুদ্ধে তুল-কালম শুরু হয়ে গেছে। আর আগা চৌধুরী যথারীতি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের দায়ভার তুলে দিলেন জামায়াত-শিবিরের উপর। মুখোশধারী এই সব ইসলামবিদ্ধেষী নাস্তিক আগা চৌধুরীরা অজ্ঞতার জন্য এমন মন্তব্য করছেন এমন নয়, এটা পরিকল্পিত ইসলামের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা। খ্যাতনামা হতে তারা সব সময় ইসলামকে ব্যবহার করেছে। সরকারের পা-চাটা কলামিস্ট আগা চৌধুরীর লেখার মূল উপজীব্য ছিল জামায়াত-শিবিরের আড়ালে ইসলাম বিদ্ধেষ ও গুণী ব্যক্তিদের চরত্রহরণ। বিশিষ্ট কিছু গুণী ব্যক্তি পরলোকগমন করলে-উনাকে নিয়ে এমন কিছু লেখা লেখেন, তার আর সত্যায়ন বা প্রত্যাখান করার জন্য মৃত ব্যক্তি বর্তমান থাকেন না।
কেউ প্রকাশ্যে জামায়াত সমর্থন করার কথা স্বীকার করে না ,তার কারণ করলে মুক্তিযোদ্ধাও রাজাকার বনে যায়।
মুলত জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ততার মত বিব্রতকর প্রশ্ন আসলে জামায়াতপন্থী বুদ্ধজীবীরা “আমাকে জামায়াত বানানো হয়েছে” ভলে এড়িয়ে যান।
এমন প্রশ্নে জন্মদিনে জামায়াত গরণার এক কালের বাম্পন্থী বাংলা ভাষা্র প্রধান কবি আল মাহামুদ প্রিয়.কমকে “আমাকে জামায়াত বানানো হয়েছে” বলে এড়িয়ে যান।
ইসলামি ব্যাংক , ইবনে সিনা এই সব খ্যাতনামা জামায়াতপন্থি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশ্ন করত-আপনাদের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক কি -তাদের উত্তর হবে এদের(জামায়াতের) সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই ।
দেশের কওমী ধারার কোন ইসলামী দলকে যদি বলা হয় জামায়াতে সম্পর্কে মন্তব্য করুন -- উনারা বলবে -- জামায়াত -- মওদুদী ফেতনা-ফেতনা--আস্তাগফিরুল্লাহ। কিন্তু জামায়াতের আয়োজিত ইফতার মাহাফিলে উনারা ঠিকই দাওয়াত নিয়ে হাজির হয়।
তাবলীগ জামায়তের এক মুরিদ এর সাথে এক ছোট ভাইয়ের দেখা, শিবিরের কথা তুলতেই বলে উঠলেন-- আস্তাগফিরুল্লাহ!!, আস্তাগফিরুল্লাহ!!
কোন জামায়াত-শিবিরের কোন কর্মীকে পুলিশ আটক করলে- সে বলবে আমি জামায়াত-শিবির করি না।
পারত পক্ষে এখন কেউ নিজেকে জামায়াতের পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করতে চান না। কেউ জামায়াতের আইকন হয়ে গেলে আর কি করার, তিনি সাধ্যমত প্রতিউত্তর দেন।
দেশেই জামায়াত মার্কা আলেমের অভাব নেই। হয়ত তারা জামায়াতের ট্যাগ নিজেদের গায়ে লাগাতে চান না, কিন্তু জামায়াতকে কড়াভাবে সমর্থন দেন অগোচরেই। বঙ্গবন্ধুর অন্ধ ভক্ত বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী জামায়াতি পত্রিকায়(নয়া দিগন্ত) কলাম লিখে জামায়াতের টাকায় চলেন- তাদের পত্রিকায় তাদেরই সমালোচনা করে। তাই তিনিও রাজাকার!!
এক ক্যাম্পাসের জামায়াত-শিবিরবিরোধীরা বলে, আসলে রাজশাহীর শিবিরগুলো খারাপ, রাজশাহীর শিবিরবিরোধীরা বলে চট্রগ্রামের শিবির খারাপ।– বন্ধু তুই ভাল, কিন্তু তোর দলের অই নেতাগুলো খারাপ। আসলে শিবির ভাল- কিন্তু এই জামায়াতের রাজাকার গোলাম আজম খারাপ। গোলাম আজমের সঙ্গ যারা পেয়েছেন তারা বলেন, গোলাম আজম মানুষ ভাল, চৌকষ, কিন্তু স্বাধীনতার বিরোধীতা তাকে সর্বনাশ করেছে।
বিষয়: রাজনীতি
১১৮২ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ @মেজর রাহাত
ভাই একেবারে বাস্তব একটা কথা তুলে ধরেছেন, এমনকি এই কথা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতিকেও বলতে শুনেছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন