সাহসী রাজনীতিবিদ সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী

লিখেছেন লিখেছেন ইয়াফি ২৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:০৫:৫৬ দুপুর



1990 এর শেষের দিকে যখন গণঅভ্যুত্থানে বর্তমান অবৈধ হাসিনা সরকারের দোসর স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়, সুযোগ-সন্ধানী স্হানীয় রাজনীতিবিদরা দিক-বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। কোন দলে গেলে সুবিধা হবে, নিরাপদ হবে, কারা ক্ষমতায় যাবে এই ভেবে। কক্সবাজার-4 আসনের অর্থাত উখিয়া-টেকনাফের বর্তমান অবৈধ সাংসদ আব্দুর রহমান বদির পিতা তখনকার জাতীয় পার্টির নেতা ও টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান এজাহার মিয়া ওরফে এজাহার কোম্পানী যিনি টেকনাফের জন্য এতবেশী প্রভাবশালী-প্রতাপশালী ছিলেন যে উঁনাকে টেকনাফের রাজা বললেও অত্যুক্তি হবেনা, তিনি বসলেন তাঁর সভাসদ নিয়ে কোন দলে গেলে সুবিধা হবে এই নিয়ে আলোচনার জন্য। ভাগ্য ভাল তিনি ঠাই করে নিলেন বিএনপিতে এবং ঐবারের অর্থাত 1991 সনের সংসদ নির্বাচনে (বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম তুলনামূলক নিঁখুত, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সংসদ নির্বাচন) বিএনপি ক্ষমতাসীন হল। এজাহার কোম্পানীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হাজী আব্দুল গণি সাহেব তিনিও জাতীয় পাটির নেতা পরে দুইজনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা ভুলে এজাহার কোম্পানী (যাঁর নির্বাচনে জেতার ও জিতিয়ে আনার জাদুকরী ক্ষমতা ছিল) এরশাদের সর্বশেষ সংসদে হাজী আব্দুল গণিকে কক্সবাজার-4 আসনের এমপি নির্বাচনে সহযোগিতা করেছিলেন। স্বৈরশাসনের পতনে এই হাজী আব্দুল গণি সাহেব বেছে নিলেন চট্রগ্রামের সিংহপুরুষ সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেবের নিজের গড়া তখনকার দল এনডিপি। আগেই উল্লেখ করেছি বাংলাদেশের ইতিহাসে গঠতে যাওয়া প্রথম তুলনামূলক নিঁখুত, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য 1991 সনের সংসদ নির্বাচনের উতসবমূখর নিবাচনী আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। হাজী আব্দুল গণি সাহেব যথারীতি কক্সবাজার-4 আসনের এমপি নির্বাচনে এনডিপির টিকেট নিয়ে আসলেন। তাঁর প্রধান নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করলেন টেকনাফ ডাক বাংলো মাঠে। দলের প্রধান সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেবকে প্রধান অতিথি করে আনলেন। কিংবদন্তী ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেব আসবেন শুনে টেকনাফের জনসাধারণ ব্যাপক উতসুক্য নিয়ে মাঠে উপস্হিত হলেন। প্রধান অতিথি সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেব যখন বক্তৃতা শুরু করলেন একটু পরে মঞ্চের পিছনে দেওয়ালের ঐপার থেকে কে বা কারা ককটেলের মত কিছু একটা বিস্ফোরক ফুটালে মাঠে উপস্হিত মানুষ আতংকিত হয়ে হই, হই করে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। বক্তৃতারত অনড় সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেব বলে উঠলেন

আপনারা সবাই বসে পড়ুন। লা ইলাহা ইল্লাহ পড়া মানুষ কেন এত তাড়াতাড়ি ভয় পাবে। কারা গুলি করতে চান আসুন সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পিঠ আনেক চওড়া
। তখন মানুষ নিরুদ্বেগ হয়ে মাঠে বসে পড়ে।

জাতীয় রাজনীতিতেও সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেব খুবই সাহসী ছিলেন। কাউকে কিছু বলতে হলে রাখডাক না রেখে বলে ফেলতেন। তিনি এমন এক দক্ষ পার্লামেন্টেরিয়ান ছিলেন সংসদের কার্যপ্রণালী সবচেয়ে ভাল বুঝার মধ্যে তিনি একজন। বৃহত্তর চট্টগ্রামে তিনি এতবেশী জনপ্রিয় ও সুপরিচিত ছিলেন অত্র এলাকার একাধিক আসন থেকে সাংসদ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। সেই 1991 সনের সংসদ নির্বাচনে তাঁর নিজ এলাকার অনেক দূরে কক্সবাজার-1 তথা চকরিয়া-পেকুয়া থেকে নির্বাচনে মুল প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি সর্বশেষ অর্থাত নবম সংসদে তাঁর নিজ আসনের বাইরে চট্টগ্রাম-2 অর্থাত ফটিকছড়ি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বলতেন তিনি সবসময় নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর এই শ্লোগানের পক্ষের রাজনীতি করেছেন। অর্থাত তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনো বাম-রামদের দলে ভিড়েননি। একসময় তিনি এদেশের প্রধান ইসলামী রাজনীতির দল জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন বলে শুনা যায়। শেষদিবসের বিচারকর্তা রাব্বুল আলামীন এই মহান রাজনীতিকের ভাল কাজগুলোর বদৌলতে জান্নাতের বাসিন্দা করে নিন! আমীন!

বিষয়: রাজনীতি

১৭২৮ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

351044
২৩ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৩৮
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : শেষদিবসের বিচারকর্তা রাব্বুল আলামীন এই মহান রাজনীতিকের ভাল কাজগুলোর বদৌলতে জান্নাতের বাসিন্দা করে নিন! আমীন!
২৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩৭
291498
ইয়াফি লিখেছেন : ধন্যাবাদ
351072
২৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২৯
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন৷
২৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩৮
291499
ইয়াফি লিখেছেন : ধন্যবাদ
351110
২৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১২:০৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ। তিনি ও তার পিতা চট্টগ্রামের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন।
২৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৭
291500
ইয়াফি লিখেছেন : চট্টগ্রামে অবকাঠামোগত অবদানের ক্ষেত্রে উঁনার পিতার সমকক্ষ অন্য কাউকে দেখছিনা! ধন্যবাদ
351169
২৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৬
বার্তা কেন্দ্র লিখেছেন : রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ। তিনি ও তার পিতা চট্টগ্রামের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন।
২৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
291501
ইয়াফি লিখেছেন : ধন্যবাদ
351207
২৪ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৩২
হতভাগা লিখেছেন : খুব রগরগে কথা বলায় পারদর্শী ছিল সাকা। ওআইসি প্রেসিডেন্ট পদে হেরে গিয়ে দেশে আসার পর হাসিনার বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব উনি খুবই নোংরা ভাষায় দিয়েছিলেন ।

বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে নোংরা কথার শুরু করেছেন এই সাকা ।
২৪ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৮
291562
ইয়াফি লিখেছেন : সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী সাহেবকে প্ররোচিত না করলে উঁনি সম্ভবত নিজ থেকে কথিত নোংরা কথা বলেননা। যা নয় সেটার দায় কারো উপর উদ্দেশ্যমূলক চাপালে তখন অনেকে ভারসাম্য হারিয়ে অনেক কিছু থাকে! সেটাকে গুরুতর দোষ ধরা যায়না। কিন্তু কিছু মানুষ আছে এরা জাত কুরুচিপূর্ণ। এরা কথায় কথায় যতবড় সামাজিক মর্যাদার মানুষ হোক ঠাট্টা-বিদ্রূপ-তাচ্ছিল্য ও অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করে। এরা হচ্ছে শুরু থেকে বেয়াদব।
353453
১০ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:১৪
চেতনাবিলাস লিখেছেন : সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ। আরও ধন্যবাদ আমার ব্লগে কমেন্ট করার জন্য।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০৭
294113
ইয়াফি লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
353908
১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : এক বোনের মন্তব্য, "ভাইয়া, আমার কাছে মনে হয়, এই ব্লগটা এখন অর্ধ মৃত"। তিনি যথার্থই বলেছেন, আপনাদের সম্মিলিত অনুস্পস্থিতি বিডিটুডের ভবিষ্যৎ নিয়ে পাঠকদের খুব ভাবাচ্ছে। আগের সেই সরগরম অবস্থা এখন আর নেই, এ আসেনা, ও আসেনা, সে আসেনা, তাই আমারও আসতে ভালো লাগে না, অতঃপর নিরুত্তাপ... এমন প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ।

প্লিজ, কারো দিকে আর তাকিয়ে থাকা নয়, কেউ আসুক অথবা নাই আসুক, আপনি আসছেন, লিখছেন, ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করছেন, এটাই নিশ্চিত করুন!
১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০২
294112
ইয়াফি লিখেছেন : ইনশাল্লাহ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File