যারা সমাজে দ্বীন কায়েমের কথা বলছে তারা বাড়াবাড়িই করছে!

লিখেছেন লিখেছেন ইয়াফি ১৯ নভেম্বর, ২০১৪, ০৬:৩৩:২৯ সন্ধ্যা

ইসলামী দুনিয়া নামের একজন ব্লগারের “খলিফা ও খেলাফত” নামক পোষ্ট পড়তে গিয়ে বহুদিন ধরে উদ্রেগ হওয়া মনের এক প্রশ্ন আবার সামনে এল ইসলামে খেলাফত কায়েম আবশ্যকীয় কর্ম কি? কোন কোন কোরআন তফসীরকারককে রাজনৈতিক ইসলামের উপর বেশী জোর দিয়েছেন বলে দোষারূপ করা হয়। সেটা কেন হবে? মন্তব্য নিজ অভি়জ্ঞতাসমেত প্রশ্নাকারে করতে গিয়ে দেখা গেল মন্তব্যের আকার বড় হচ্ছে। তাই ভাবলাম এইবিষয়ে আলাদা পোষ্ট দিলে কেমন হয়! বিদ্বগ্ধ ব্লগাররা আলোচনা করবেন। ইসলামী দুনিয়া নামের ব্লগার ভাইকে সাদর আমন্ত্রণ।

বড় বড় উলামাগণ খেলাফত কায়েমকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না কেন? উপমহাদেশে ইসলামের আঁতুড়ঘর দেওবন্দ মাদ্রাসা ভিত্তিক খেলাফত কায়েম আন্দোলনের সিলসিলা নেই কেন? দেশের অন্যতম বৃহত ক্বওমী মাদ্রাসা পটিয়া মাদ্রাসা-ফারেগ (Patiya Madrasa Graduate) একজন আলেম, যিনি পরবর্তীতে বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়ে বিশ্ববিখ্যাত আল আজহার থেকেও ডিগ্রী নেন, বললেন হাদীস শরীফে এসেছে রাসুলে আকরাম (সাঃ) বলেছেন উঁনার ওফাতের পর খেলাফত শুধুমাত্র ত্রিশ বছর টিকে থাকবে। অর্থাত উক্ত আলেম বুঝাতে চাচ্ছেন আমরা চেষ্টা করলেও খেলাফত আর প্রতিষ্টা করা যাবেনা। কারণ আল্লাহর রাসুল বলে দিয়েছেন। তখন আমি বললাম এটাতো আল্লাহর রাসুলের ওফাত পরবর্তী পৃথিবীর অবস্হা কি হতে পারে তার একটা ইংগিত হতে পারে। হাদীস শরীফে এটাও এসেছে কেয়ামতের আগে সুদের কারবার খুব বেড়ে যাবে। তারমানে আমাদের সবাইকে এখন সুদের কারবারে জড়িত হতে হবে যেহেতু আল্লাহর রাসুল বলেছেন? এবার উক্ত আলেম বললেন না খেলাফত কায়েমের চেষ্টা বাদ দেয়া যাবে না। তবে তিনি নিজে এধরণের কোন আন্দোলনে বা নূন্যতম সহযোগিতায়ও নেই। এদিকে দেশের বৃহত্তম ক্বওমী মাদ্রাসা হাটাহাজারী মাদ্রাসার সম্মানিত মহাপরিচালক আল্লামা শফী সাহেবও বলেছেন তাঁর আন্দোলনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নাই। অর্থাত দেশের শাসনতন্ত্র কোন নীতিতে চলবে তা নিয়ে উঁনার নির্লিপ্ততা রয়েছে। কোন কোন আলিয়া মাদ্রাসায় দেখা যায় ছাত্রগণ এমন রাজনীতিক দলের লেজুড় রাজনীতি করছে যারা খেলাফত কায়েমের বিরোধিতা করে! এখন সাধারণ মুসলমানের মনে এটা আসতে পারে, যারা সমাজে দ্বীন কায়েমের কথা বলছে তারা বাড়াবাড়িই করছে! ইসলাম ধর্মে এধরণের কোন নির্দেশনা নেই! কারণ বড় বড় উলামাগণতো এধরণের কোন আন্দোলনে নাই। বরং তারা সমাজের খেলাফতবিরোধীদের নেতা-নেত্রীদের আধ্যাত্তিক পৃষ্টপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আয়-উন্নতি, জেলমুক্তির জন্য দোয়া দরুদ করেন। দেশের কোন এক এলাকায় দেখা গেল ক্ষমতাসীন দলীয় বর্তমান এমপি এলাকার সচ্ছল ব্যক্তি, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জবরদস্তিমূলক একশ, দু’ শ (এমপি সাহেব যা নির্ধারণ করে দেন)বস্তা চাল কিংবা সমপরিমাণ টাকা তার চ্যালা-চামুন্ডাদের মাধ্যমে আদায় করে তার কিয়দংশ স্হানীয় সাংবাদিক, রিপোর্টারদের ডেকে এলাকার দরিদ্র মানুষদের বিলি করেন। প্রতিবার এমপি সাহেব চাল বা শীতবস্ত্র বিতরণের ফটো কিংবা বিতরণ পরবর্তী দরিদ্রের সাথে ফটো সেশনে তোলা ফটোসমূহ নিজ ফেইস বুক একাউন্টে তুলে দেন। এলাকার নামকরা এক ক্বওমী মাদ্রাসার প্রভাবশালী মুহতামিম (মহাপরিচালক) সাহেবের মতে এমপি সাহেব খুব জায়েজ কাজ করছেন! কারণ ঐ লোকগুলো দরিদ্রদের সাহায্য করেনা। তাই এমপি সাহেব তাদের থেকে নিয়ে দরিদ্রদের সাহায্য করছেন! এই এমপি সাহেব কিন্তু দেশব্যাপী একজন ইয়াবা সম্রাট হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে ইয়াবা চালানের মুল স্বত্বভোগী এবং যার পরিবারের সদস্যগণ, নিকটাত্বীয়গণ ও ঘনিষ্টজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা কারবারী। এমপি সাহেব হলফনামায় উল্লেখিত সম্পত্তির চাইতে বর্তমানে 351 গুণ বেশী অবৈধ অর্জনের দায়ে সম্প্রতি দুদকের মামলায় গ্রেফতার হয়ে কয়েকদিনের জন্য জেলে অবস্হান করেন। বর্তমানে এমপি সাহেব মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট কর্তৃক স্হায়ী জামিনে আছেন। জেলে থাকাবস্হায় স্হানীয় আলেমগণ যা তত্পরতা দেখালেন তাতে এমপি সাহেব তাঁর অপকর্মের জন্য নির্ভার থাকতে পারেন! এলাকাটি ক্বওমী মাদ্রাসা অধ্যুষিত অঞ্চল। উক্ত মুহতামিম সাহেব, যিনি আবার দেশে ফকীহুল মিল্লাত খেতাবে পরিচিত প্রবীণ আল্লামার সাক্ষাত সাগরেদ, নিজ মাদ্রাসা ও অন্যান্য মাদ্রাসা কর্তৃক আমন্ত্রিত হয়ে দোয়া মাহফিল ও খতমে কোরআন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। উক্ত দোয়া মাহফিল ও খতমে কোরআন অনুষ্ঠানে মুহতামিম সাহেব বললেন কোরআন-হাদীস অনুসারে এমপি সাহেব একজন শুদ্ধ তরিকার মুসলমান। একজন মুসলমান অন্য মুসলমানের জন্য দোয়া করা জরুরী। দোয়ার মাধ্যমে বিপদাপদ দূর হয়ে যায়। এমপি সাহেব সবেমাত্র এ্যরেস্ট হয়েছেন, উনার মামলার শুনানী হয়নি, এখনো দোষী সাব্যস্ত হন নাই। এ অবস্হায় আমরা দোয়ার মাধ্যমে উঁনাকে মুক্ত করে আনতে পারি........। এমপি সাহেবের মুক্তির পর আবার শোকরানা অনুষ্ঠানও হয়েছে। এ তত্পরতায় দু-একটি আলিয়া লাইনের মাদ্রাসাও ছিল। এখন এলাকার সাধারণ মুসলমানগণ কেন সত্, আল্লাহভীরু নেতার কথা চিন্তা করবেন? কেন তারা ইসলামী সমাজ ব্যবস্হার কথা চিন্তা করবেন? ওটাতো বাড়াবাড়ি! আলেমগণ কি কম বুঝেন!

বিষয়: বিবিধ

১৭০৭ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

285942
১৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১৯
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী হুকুমত কায়েম সম্ভব নয়, এই দায়সারা গোছের অমীয় বানী শুনিয়েই তারা আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলায় ব্যাস্ত আছেন, সমাজ ও রাষ্ট্রপরিচালনায় ইসলামি আবহ তৈরীর নূন্যতম উদ্যগ তাগের মধ্যে নেই। মসজিদ মাদ্রসা আর খানকার চার দেয়ালে যারা বন্দি থাকে তাদের দ্বারা আকাশের উপরের আর জমিনের নিচের বয়ান করাই সম্ভব ইসলামি হুকুমতের হেকমত বুঝা তাদের দ্বারা সম্ভব নয়।
২০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৫৭
229507
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : ভাইজান, আমরা যদি আকাশের উপর আর যমিনের নিচের কথা বলতাম, তাহলে এক খলিফার নেতৃর্তে খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলতাম না। ইসলামী হুকুমতের হেকমত আমাকে একটু বঝার প্লিজ।
285948
১৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৪৮
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : ভালো লাগলো , আপনার কথায় যুক্তি আছে, এই রকম জ্ঞানী গুণী আলেমদের পকেটে ১০০০টাকার একটা নোট ডুকিয়ে দিলে,বদীর মত শয়তান গুলোকে ফেরেশতা হিসাবে ঘোষণা দিবে। ৫০০টাকার নোট দেখলে ফতুয়া ১৮০ ডিগ্রীতে গুরে যায়। এদের কারনে আজ নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে তামাশা করার সাহস করে।
286097
২০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৫৯
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : লেখক সাহেব আপনাকে অনুরোধ করব,
মুসলিমরা কোরআন হাদীস মানে, কোন ত্বগুত/মোনাফেক সরকারের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত আলেমের কথা মানে না। তবে হ্যা যদি কোরআন ও হাদীসের সাথে মিলে গেলে মানতে পারি। আর কোরআন হাদীসে পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজে অধ্যয়ন করুন। ধন্যবাদ।
২০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
229513
ইয়াফি লিখেছেন : কোন ত্বগুত/মোনাফেক সরকারের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত আলেমের কথা বাদ দেন! অন্যান্য হক্কানী দাবীদার আলেমদের কি হল?
286188
২০ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৩২
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : হক্কানী আলেমদের নাম বলুন শুনি।
২০ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৭
229666
ইয়াফি লিখেছেন : ফকীহুল মিল্লাত আল্লামা মুফতি আব্দুর রহমান, আল্লামা সুলতান যওক নদভী, আল্লামা শাহ আহমদ শফি (দাঃবাঃ), আল্লামা আব্দুল হালিম বোখারী এরকম আরো হাজারো ক্বওমী তথা দেওবন্দী সিলসিলার উলামা বাংলার জমিনে আছেন যাঁদের অগাধ দ্বীনি জ্ঞান আছে। কিন্তু রাষ্ট্র তথা সমাজের প্রতি দ্বীনের দাবী আদায় হচ্ছে কি?
286238
২০ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৮
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : এদের কে কিসের ভিত্তিতে হক্কানি বলা হচ্ছে?
২৩ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২২
230551
ইয়াফি লিখেছেন : সম্মানিতদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File