গুম-খুনের শেষ কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন ইয়াফি ১৪ মে, ২০১৪, ০৭:৪৮:৩৫ সন্ধ্যা
দেশে বর্তমানে কোন গুম-খুনের সংবাদ জানাজানি হয়ে গেলে শেখ হাসিনার সরকারের লোকজনেরা না জানার ভান ধরে বা ডাহা অস্বীকার করে বা কখনো তারাও খুঁজে দেখার যে আশ্বাস দেয়, তা নিছকই অভিনয় ছাড়া কিছু নয়। শেখ হাসিনার সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী খান সাহেবের মতে দেশে কোন গুম-খুন হয়না। মামলা-মোকদ্দমায় জড়িত হয়ে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য নিজেরাই আত্নগোপন করে। আরেক মন্ত্রী আশরাফুলের মতে গুম বলতে কোন শব্দ নেই। অর্থাত কায়দা-কৌশল করে তারা এই গুম-খুন চালিয়ে যাবে। এর কোন প্রতিকার পাওয়া যাবেনা! রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে যখন গুম-খুন করা হচ্ছে তখন সমাজের দূর্বৃত্তরাও তাদের মতে এই সুবর্ণ সুযোগ নিতে চাইবে! তবে বর্তমানে রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা শেখ হাসিনা সরকারের খায়েস-আরামে বাগড়া দিতে পারে এমন কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তির আত্বীয়-স্বজন গুম হয়ে যাওয়ার পেছনে শেখ হাসিনার মহাপরিকল্পনার হাত আছে! শেখ হাসিনার ক্ষমতারোহণের প্রথম থেকে আজ অবধি উঁনার কার্যকলাপে এটাই প্রতীয়মান হয় ক্ষমতাকে নিষ্কন্টক দীর্ঘমেয়াদী করার মানসে তাঁর এক মহাপরিকল্পনা আছে। ৯ম সংসদ নির্বাচনের পরে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহিত হয়ে তাঁর সম্ভাব্য ভয়ের জায়গাসমূহ সাফাই করা শুরু করলেন। যার ফলশ্রুতিতে এদেশের মানুষকে তাঁদের গর্বের সন্তানদের বিডিআর বিদ্রোহের নামে করুণ বিদায় দেখতে হয়েছে। শেখ হাসিনা তাঁর মহাপরিকল্পনায় যাতে কোন ছেদ না ঘটে এজন্য শুরুতেই বিচারবিভাগকে বাগে আনতে ঢুকিয়ে দিলেন ৪৯ জনের রেকর্ডসংখ্যক বিরাট চালান! যাঁদের মধ্যে কোন প্রকার রাখঢাক না রেখে আছেন এককালের মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির খাস খামারায় পদাঘাতকারী আওয়ামী চালানে আন্দোলিত ব্যক্তি এবং পেশাগত সংগঠনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তি। হয়তো ঐ বিরাট বহরে জায়গা নেয়াদের এটাই প্রধানতম যোগ্যতা হিসাবে বাছাই করা হয়েছিল! পত্রিকান্তরে প্রকাশ শেখ হাসিনা তাঁর বিশ্বস্ত সুঠামদেহের অধিকারী একশ যুবককে নিয়ে ক্রুজার-১০০ গঠন করেছে। যারা ভারতের সামরিক বাহিনীর প্রধান প্রশিক্ষণকেন্দ্র দেরাদুনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চৌকষ বাহিনী কর্তৃক বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। যারা গুম-খুনে পারদর্শী! শেখ হাসিনার মহাপরিকল্পনায় এটা আছে কি প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিনাশকরণ, দেশের শাসনতন্ত্রকে আপন চাহিদামত সাজানো? প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিকপক্ষসমূহ মিছিল-মিটিং কিংবা রাস্তায় সমবেত হতে পারবেনা! তাদের কার্যালয়সমূহ খোলা রাখা যাবেনা! তাদের নেতৃবৃন্দ উপরের নির্দেশের মামলা-হুলিয়ায় নিয়ন্ত্রিত হবে! তাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে জনবিরুপ করার জন্য কুটকৌশল নেয়া হবে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিকভাবে হয়রানীর শিকার হবে। এলাকাভিত্তিক প্রভাববিস্তারকারী নেতা-কর্মী গুম হয়ে যাবে কিংবা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যাবে কিংবা পরিবারের সদস্যদের চোখের সামনে চিলে ছোঁ মারার মত নিয়ে ক্ষতবিক্ষত লাশ রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যাবে। যাতে উত্সুক জনতার কাছে এটাই বোধগম্য হয় যে যারা ঐ রাজনৈতিক দলে থাকবে তাদের অবস্হা এমনই হবে! অর্থাত এমন এক ভয়াবহ আবহের সৃষ্টি করা হবে যাতে কেউ শেখ হাসিনার বিরোধীমতের নাম উচ্চারণে সাহস না দেখায়! রাজাকার, অচ্ছুত দলে দলে হয় শেখ হাসিনার দলে যোগ দিবে, না হয় তাদের আপনসত্ত্বা বিকিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনার খাস লোকদের মোসাহেবী করে বেঁচে থাকবে! বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মতে দেশে বর্তমানে কেউ আওয়ামী লীগ না করলে তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই! দেশের শাসনতন্ত্র খুইয়েছে দেশের আপামর মানুষের প্রতি পাঁচ বছরের প্রতীক্ষার ক্ষণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন। শেখ হাসিনাকে জনগণকে আর তোয়াক্কা করার দরকার নেই! কারণ জনগণকে আর ভোট দিতে হবে না! সাজানো শাসনতন্ত্র এমন নির্বাচনের ব্যবস্হা করবে যাতে শেখ হাসিনাকে একসেকেন্ডের জন্য হলেও দেশের নির্বাহীপ্রধানের ক্ষমতা ছাড়তে না হয় যতদিন উঁনি ইচ্ছাপোষণ করবেন! ক্ষমতাকে নিষ্কন্টককরণের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার অস্বস্তি যতদিন না দুর হবে, (বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীর)গুম-খুন এভাবে চলতে থাকবে!
বিষয়: রাজনীতি
১২৬৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ব্লগে স্বাগতম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন