আমি ভ্রান্ত নাকি আমার চিন্তা --নাকি তোমরা
লিখেছেন লিখেছেন জাবেদ সাতকানিয়া ২৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০৪:৫৪:৩৫ বিকাল
সকলের একটাই প্রশ্ন তোমার কিসের এত কষ্ট. কিসের এত হাহাকার. সবতো ঠিক আছে. নেই কর্মের চাপ.নেই অর্থের তাড়না. তবুও কেন নিজে নিজে দিনদিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছ.
আমাকে যদি আমার মত করে চিন্তা করত তাহলে পৃথিবীতে কোন অমিল নামের শব্দ খুজে পাওয়া যেতো না.
মানুষ নিজ দৃষ্টিকোণ দিয়ে অন্যকে উপলব্ধি করতে পারেনা বলেই আমরা মিথ্যা কুসংস্কার বিচ্ছিন্নতা ভুলবোঝাবুঝিতে ডুবে আছি.
সুখের চরিত্র ও রূপ কষ্টের মত
অতিমাত্রায় বিস্তৃত নয়। অবস্থানও
তেমন প্রলম্বিত হয় না। মনের
মাঝে সুখের অবস্থান ক্ষণিকের জন্য।
সহবাসের সুখ যেমন ক্ষণস্থায়ী, আবার
কাউকে না পাবার কষ্ট
তেমনি সাড়া জীবনের।
মনে সুখের
স্থায়ীত্ব অল্প সময়ের জন্য,
বিস্তৃতি ও
ব্যপ্তিও খুব কম।
সুখের গন্ডি পার হলেই
যে কষ্ট আসবে এমন কোন কথা নেই।
আবার কষ্টের গন্ডি পার হলেই যে সুখ
আসবে সেরকম ভাবারও সুযোগ নেই।
তাই সুখকে বিশ্লেষণ করা বেশ কঠিন।
কারণ সুখের কোন নির্দ্দিষ্ট
সংজ্ঞা নেই।
কষ্টের সম্পূর্ণ বিপরীত
মেরুতে সুখের অবস্থান এটাও
বলা মুশকিল। মনে সুখ থাকলেও কষ্ট
থাকতে পারে, সুখ না থাকলেও কষ্ট
থাকতে পারে। আবার
উল্টোভাবে বলা যায়। কষ্ট থাকলেও
সুখ থাকতে পারে, কষ্ট না থাকলেও সুখ
থাকতে পারে। তাই কষ্টের সম্পূর্ন
বিপরীত অথর্ও সুখ নয়।
একজন সুখী মানুষের মনে কষ্ট ও সুখ
সহাবস্থান করতে পারে। তাই ওই
বিতর্কে যেতে মন চাইছে না। কিন্তু
কষ্টের প্রকাশ,
বিকাশ,
প্রভাব,
স্বভাব,
আবেদন,
নিবেদন,
মাত্রা,
তীব্রতা,
স্থায়ীত্ব,
স্থিতিশীলতা,
গ্রহণযোগ্যতা,
প্রত্যাখান,
প্রতিদান ও
লালন-পালন সকল ক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্য
মানুষের মধ্যে একরকম ভাবে থাকে না।
সর্বোপরি কষ্টের ধারণ,
সৃজন ও অনুধাবন
সবই মানুষের মানবিক ও মস্তিষ্কের
গুনাবলী ও উপাদানের উপর নির্ভরশীল।
কষ্ট প্রতিটি মানুষের বাহ্যিক ও
অন্তরীণ আচরণে ও ব্যবহারে পরিবর্তন
আনে। সহ্যশক্তি, সৌকর্য ও
সংবেদনশীলতা কষ্টের ব্যপকতার উপর
প্রভাব ফেলে। কষ্ট চলমান জীবনের
বাঁকে বাঁকে বৈচিত্র্য ও পরিবর্তন
আনে। এক মানুষের কষ্ট অন্য মানুষের
মনের উপর নানাভাবে প্রভাব ফেলে,
তাড়িত করে। অনেক কিছু
ভাবতে শেখায়,
বুঝতে শেখায়।
আমার জিভটা এখনো আমারই জিভ
আমরা গলাটা এখনো আমরাই গলা।
কেটে উপহার দেই নি কাউকে আমি
অভ্যাস আজও সময়ের কথা বলা।
একাধিকবার আমার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে যে
কোন কাজ আমার নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে উচিৎ মনে হলেও আমার সৎ সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তা অন্যায়.
আমি জানি যে আমরা উভয়েই নিজ নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক.
আর এইটুকু জানা থাকার জন্য আমার বিরোধী বা সমালোচকদের প্রতি আমি দুরভিসন্ধি আরোপ করিনা.
সাতটি হাতি দেখে মানুষ সাত রকমের বর্ণনা দেয়.কিন্তু নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে ওরা যুগপৎ ভ্রান্ত বা ভুল অথবা অভ্রান্ত বা সঠিক.
কোন মানুষকে চরমতম ধর্মান্ধতার জন্যও আমি নিন্দা করতে পারিনা ;কারণ তাঁকে আমি তাঁরই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করি.
এই উদার বিশ্বাসই আমাকে সঞ্জীবিত করে রাখে.
সত্যের বহুমুখিতা সম্বন্ধীয় এই মতবাদ আমার ভাল লাগে ও উপভোগ করি. এই নীতির জন্যই আমি মুসলমানকে মুসলমানের ও হিন্দুকে হিন্দুদের দৃষ্টিকোণ দিয়ে বিচার করতে শিখেছি.এটি আমার প্রতি আল্লাহর অসীম দান.
পূর্বে বিরুদ্ধপক্ষের অজ্ঞতাদৃষ্টে আমি ক্রুদ্ধ হতাম,
আজ আমি তাঁদের ভালবাসি ; কারণ সৌভাগ্যবশত অপরের চক্ষে নিজেকে দেখার দৃষ্টি আমি পেয়েছি.
আমি বুঝতে পারি যে আমার এই মানসিকতা অনেকের কাছে অস্বস্তিকর ; কিন্তু আমার নিজের কাছে এর মধ্যে কোন অসংগতি নেই.
সমগ্র জগতসৃষ্টিকে আমি আমার ভালবাসার পরিধির মধ্যে আত্মস্থ করতে চাই.
যেন সকলের প্রিয় হতে পারি ...
আমি কষ্টে ধৈর্য্যশীল,
যুদ্ধে লড়াকু সৈনিক,
রণে অপরাজেয়,
দানে মুক্তহস্ত,
দোয়ায় উদার,
ত্যাগে অনন্ত,
মনে প্রশস্ত,
সাধনায় নিরবিচ্ছিন্ন, হতে চায়.
\\জাবেদ//
বিষয়: বিবিধ
১০৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন