রমজান মাসে শয়তান শিকল দিয়ে বাধা থাকে, কিন্তু তবুও কেন মানুষ গুনাহ করে?
লিখেছেন লিখেছেন সত্যির আলো ৩০ জুন, ২০১৪, ০৯:২৬:৫৩ রাত
SAHIH BUKHARI Volume 003, Book 031, Hadith Number 123.
Narated By Abu Huraira : Allah's Apostle said, "When the month of Ramadan starts, the gates of the heaven are opened and the gates of Hell are closed and the devils are chained."
আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেছেনঃ আল্লাহ্ এর রাসুল (সঃ) বলেছেন, “যখন রমযান মাস শুরু হয়, জান্নাহ এর দরজা খুলে দেয়া হয়, এবং জাহান্নাম এর দরজা বন্ধ করা হয় এবং শয়তানদের বেধে রাখা হয়।
এ হাদিস থেকে আমরা জানলাম যে যখন রমজান মাস আসে তখন শয়তানদের বেধে রাখা হয়। কিন্তু যদি শিয়তানকে বেধে রাখাই হয়, তবে এর পরেও কেন আমরা দেখি যে মানুষ গুনাহ করছে??
আসুন আমরা প্রথমে কোরানের আলোকে বুঝি যে মানুষ কেন পাপ করে। কুরান এ আল্লাহ্ আমাদের জানিয়েছেনঃ
And Shaitan (Satan) will say when the matter has been decided: "Verily, Allah promised you a promise of truth. And I too promised you, but I betrayed you. I had no authority over you except that I called you, so you responded to me. So blame me not, but blame yourselves. [১৪ : ২২]
যখন ব্যপারটার ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমিও তোমাদের ওয়াদা দিয়েছিলাম, কিন্তু এরপরে আমি তোমাদের সাথে বেইমানী করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথায় সাড়া দিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে দোশারপ কোরনা, কিন্তু নিজেদেরকেই দোশারপ কর।
এ আয়াতে আমরা জানলাম শয়তান আখেরাটে আমাদের কি বলবে, এবং আমরা জানলাম শয়তান কি করে আমাদেরকে কুমন্ত্রনা দিয়ে গুনাহ করায়। শয়তান আমাদের মাথায় এসে কুবুদ্ধি দেয় এবং ডাকে পাপ করতে। এরপর আমদের মাঝে অনেকেই তার ডাকের সারা দেই ও পাপ করি।
And so We have appointed for every Prophet enemies - Shayatin (devils) among mankind and jinns, inspiring one another with adorned speech as a delusion (or by way of deception). [Dr. M. M. Khan and Dr. M. T. al-Hilali] [6:112]
এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি- মানব ও জিনদের মধ্য হতে শয়তানদের। তারা একে অপরকে ধোঁকা দেয় কারুকার্যখচিত কথাবার্তা দিয়ে। [সুরাহ আনাম আয়াত ১১২]
এ আয়াতে আমরা জানলাম যে নবীদের জন্য শত্রু নিজুক্ত রয়েছে, মানব শয়তানেরা ও জিন শয়তানেরা। সুতরাং আমরা বুঝতে পারলাম শায়তান মানুষের মধ্যেও আছে এবং জিনদের মধ্যেও আছে।
আসুন এবার দেখি সুরাহ নাস এ আল্লাহ্ কি বলেছেনঃ
সুরাহ ১১৪ আয়াত ১ থেকে ৬
বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার,
মানুষের অধিপতির,
মানুষের মা’বুদের,
তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দিয়ে কেটে পরে,
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে,
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।
এ সুরাহতে আল্লাহ্ আমাদের শিখিয়ে দিলেন কুমন্ত্রনা থেকে কি করে হেফাযত চাব। নাস সুরাহ এর শেষ আয়াতে আমরা জানলাম যে কুমন্ত্রনা জিনদের মধ্য থেকে দেয় এবং মানুষ এর মধ্য থেকেও দেয়।
সুতরাং আমরা জানলাম যে মানুষ শয়তানদের কুমন্ত্রনা শুনে গুনাহ করে ফেলে।
কিন্তু মানুষকি শুধু শয়তানএর কুমন্ত্রনায় পরেই অন্যায় করে?
Have you seen him who takes his own lust (vain desires) as his ilah (god), and Allah knowing (him as such), left him astray, and sealed his hearing and his heart, and put a cover on his sight. Who then will guide him after Allah? Will you not then remember? [Dr. M. M. Khan and Dr. M. T. al-Hilali] [45:23]
তুমি কি তবে তাকে লক্ষ্য করেছ যে তার খেয়াল-খুশিকে তার উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে? আর আল্লাহ্ জেনে, তাকে পথভ্রষ্ট রেখে দিয়েছেন, আর তিনি মোহর মেরে দিয়েছেন তার শ্রবণেন্দ্রিয়ে ও তার হৃদয়ে, আর তার দর্শনেন্দ্রিয়ের উপরে তিনি বানিয়ে দিয়েছেন একটি পর্দা। কাজেই আল্লাহ্র পরে আর কে তাকে পথ দেখাবে? তবুও কি তোমরা স্মরণ করবে না? [জহুরুল হক] [45:23]
এ আয়াতে আমরা জানলাম সে সমস্ত মানুষের কথা জারা কিনা তাদের মনের ইচ্ছা ও খেয়াল খুশিকে উপাস্যরূপে নিয়েছে। এ ধরনের লোকেরা তাদের মনে জা চায় তাই করে। তাদের মনে যদি হারাম কিছুও করতে ইচ্ছা করে তবে তারা তাই করে। তাদের মনে যদি অশ্লীলতা করার ইচ্ছা জাগে তারা তাই করে। সুতরাং মানুষ গুনাহ নিজের মনের ইচ্ছা পূর্ণ করতে গিয়েও করতে পারে।
সুতরাং মানুষ গুনাহ করে, কারনঃ
১। শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দেয়, এবং সে কুমন্ত্রনায় অনেক মানুষ সাড়া দেয় ও গুনাহ করে। শয়তান মানুয়ের মধ্যেও আছে এবং জিন এর মধ্যেও আছে।
২। মানুষ তার নিজের মনের ইচ্ছা, লোভ, ইত্যাদি পূর্ণ করতে গিয়ে অন্যায় করে।
এবার আসুন আমরা বুঝি মানুষ কেন রোজার মাসেও গুনাহ করে। হাদিসে বলা আছে রোজার মাসে শয়তানদের বেধে রাখা হয়। আমরা জানি শয়তান জিন এর মধ্যে আছে এবং মানুষের মধ্যে আছে। হাদিসে বুঝান হয়েছে যে জিন শয়তাকনদের রোজার মাসে বেধে রাখা হয়। মানুষ শয়তানরা কিন্তু রোজার মাসে বাধা থাকে না। তারা বাকি ১১ মাস জেমনি ঘুরে বেড়ায়, নিজেরা গুনাহ করে এবং অন্য মানুষকে কুমন্ত্রনা দেয়; একি ভাবে রোজার মাসেও ঘুরে বেড়ায়, নিজেরা গুনাহ করে এবং অন্য মানুষকে কুমন্ত্রনা দেয় এবং অনেকে তাদের কুমন্ত্রনা শুনে গুনাহও করে।
আর একটা ব্যপার আমাদের বুঝতে হবে শয়তান জিনদের ব্যপারে। যে শয়তান জিন আমাদেরকে ১১ মাস কুমন্ত্রনা দেয় এবং বিভিন্ন খারাপ বুদ্ধি দেয়, আমাদের মাথায় এসে। এ ১১ মাসে শয়তান জিন পাপ করার বীজটা খুব ভাল করে বোপণ করে দেয় আমাদের মাথায়। সুতরাং রোজার মাসে জদিও শয়তান জিনেরা বাধা থাকে, কিন্তু তখনও কুবুদ্ধিগুল আমাদের মাথায় রয়েই যায়, সে কারণেই রোজার মাসেও আমদের গুনাহ করার ইচ্ছা জাগে এবং অনেক সময়ই আমরা তা করেও ফেলি। একটা উদাহারণ দিয়ে ব্যপারটা বুঝাই। বিদ্দুত ছাড়া ফ্যান চলে না আমরা জানি। আমরা একটি চলন্ত ফ্যানের বিদ্দুত যদি switch টিপে বন্ধ করে দেই, ফ্যানটা কিন্তু তবুও ঘুরতে থাকে।
আর এ ছাড়া আমরা জানি যে মানুষ অনেক সময় নিজের মনের ইচ্ছাকে পূর্ণ করতেও গুনা করে। রোজার মাসেও আমরা অনেক সময় নিজের মনের অন্যায় ইচ্ছাগুলকে পূর্ণ করতে গিয়ে গুনাহ করে ফেলি।
আসা করি বুঝাতে পেরেছি যে মানুষ কেন রোজার মাসেও গুনাহ করে।
ভুল ত্রুটি হলে আমাকে ক্ষমা করবেন। আর বানান ভুল এর জন্যেও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
বিষয়: বিবিধ
৩০৯৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তুই ব্লগে ইসলাম বিরধি মন্তব্য দিয়া কত টাকা পাছ মাসে??
প্রকৃত অর্থে- মুমিনের ৭২ বেশ্যার জান্নাত বরবাদ করার জন্য মুমিনের আল্লা স্বয়ং শয়তান পয়দা করেছেন। সুতরাং আল্লার শয়তান আল্লার মুমিনদের কাঁধেই ভর করে থাকে, অন্য কোথাও না। বুঝেন্না ক্যান, আপনার মত মুমিনের বাংলাদেশেই শয়তান ফরমালিনের ঘাটি বানিয়েছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন