"ঢেঁকি " দেখা মিলে না এখন আর কোথাও।। কোথায় হারিয়ে গেলো? আসুন জানি ঢেঁকি সম্পর্কে।

লিখেছেন লিখেছেন ভোলার পোলা ০৬ আগস্ট, ২০১৪, ০৯:৫৩:২২ রাত

“ও বউ ধান

ভানেরে ঢেঁকিতে পার দিয়া, ঢেঁকি নাচে বউ

নাচে হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ ধান ভানেরে।”

গানটি একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। তবে অনেকের

কাছে গানটি এখনো প্রিয়। আবার প্রবাদ

বাক্যে প্রচলিত আছে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান

ভানে। ঢেঁকিকে নিয়ে অনেক গান ও প্রবাদ প্রচলিত

থাকলেও কালের বিবর্তনে ও যান্ত্রিক

আভির্ভাবের ফলে বহুল ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী এই

উপকরনটি এখন বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্তির পথে।

গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে একসময় ঢেঁকিতে ধান

ভাঙ্গার দৃশ্য চোখে পড়তো। এখন আর গ্রাম

বাংলায় ঢেঁকিতে ধান ভাঙ্গার দৃশ্য

চোখে পড়েনা, শোনা যায়না ঢেঁকির ধুপধাপ শব্দ।

শহরে তো বটেই আজকাল অনেক গ্রামের ছেলে-

মেয়েরাও ঢেঁকি শব্দটির কথা জানলেও

বাস্তবে দেখেনি। অনেকের কৌতুহল কেমন করে মেশিন

ছাড়া ধান থেকে চাল বের করা হতো?

আসলে ধানের খোসা ছাড়িয়ে চাল বানানোই ছিল

ঢেঁকির কাজ। ঢেঁকি হচ্ছে কাঠের তৈরি কল বিশেষ।

প্রায় ৬ ফুট লম্বা ও ২০ ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট

একটি ধড় থাকে ঢেঁকিতে। মেঝে থেকে ১৮

ইঞ্চি উচ্চতায় ধড়ের সামনে এক ফুট বাকি রেখে দুই

ফুট লম্বা একটি গোল কাঠের মাথায় লোহার

রিং পরানো থাকে। এটাকে মৌনা বলা হয়।

পিছনে দু’টি বড় কাঠের দন্ডের ভেতর

দিয়ে একটি হুড়কা হিসাবে কাঠের গোলাকার খিল

থাকে। এভাবেই তৈরি ঢেঁকি দিয়ে এক সময় ধান

ভাঙ্গার কাজ হতো ব্যাপপকভাবে।

ঢেঁকি দিয়ে শুধু ধান থেকে চালই নয়, পিঠা তৈরির

জন্য চালের গুড়াও তৈরি করা হতো। একসময়

গ্রামে গ্রামে নতুন ফসল তোলার পর ও পৌষ

সংক্রান্তিতে ঢেঁকির শব্দে মুখরিত

হয়ে উঠতো গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি। গ্রামের

সমভ্রান্ত পরিবারের বাড়িগুলোতে ঢেঁকিঘর

হিসাবে আলাদা ঘর থাকতো। গৃহস্থবাড়ির

মহিলারা ঢেঁকির মাধ্যমে চাল তৈরির কাজে ব্যস্ত

সময় কাটাতেন। গরিব মহিলারা ঢেঁকিতে শ্রম

দিয়ে আয় রোজগারের পথ বেছে নিতেন। ঢেঁকিতে কাজ

করাই ছিল দরিদ্র মহিলাদের আয়ের প্রধান উৎস।

আধুনিক যুগে সেই ঢেঁকির জায়গা দখল

করে নিয়ে বিদ্যুৎ চালিত মেশিন (ধান ভাঙ্গার

চালকল) এর মাধ্যমে মানুষ এখন অতি সহজেই

অল্প সময়ে ধান থেকে চাল পাচ্ছে।

যেখানে ঢেঁকি দিয়ে আগে মানুষ ধান

ভাঙতো দিনে সাত থেকে আট মন, এখন

গ্রামে গঞ্জে হাসকিং মিল ও অটোরাইস মিলের

মাধ্যমে দিনে কয়েক হাজার টন ধান

ভাঙিয়ে ঝকঝকে চাল তৈরি করছে। হাতের

কাছে বিভিন্ন যন্ত্র ও প্রযুক্তির ব্যবহার সহজলভ্য

হওয়ায় ঢেঁকির মতো ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই এখন

হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় হয়তো প্রাচীন এই

যন্ত্রগুলির দেখা মিলবে কেবল যাদুঘরে।

বিষয়: বিবিধ

১১৬৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

251694
০৬ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:২৫
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : ভোলার পোলা দেখি ভুলে যাওয়া জিনিসকে মনে করিয়ে দিল । Good Luck
০৬ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:৩৭
195793
ভোলার পোলা লিখেছেন : ধন্যবাদ বাহার ভাই। আসলেই ভাই। এখন আর আমি দেখিই না!!! .......
251700
০৬ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:৩৫
সজল আহমেদ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া
আমার মা অপারেসন থিয়েটারে !!
প্লিজ ভাইয়া বেশি কিছু আপনার কিছে চাইবনা ,শুধু চাইব একটু দুআ!!
আমার মায়ের জন্য একটু আল্লাহ্'র কাছে দুআ করুন ।
০৬ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:৩৮
195796
ভোলার পোলা লিখেছেন : সজল ভাই দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনার মা কে সুস্থ করে দেন।
০৭ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৪৯
195904
সজল আহমেদ লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলআমিন !
আমার মায়ের অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে ।
আজ আপনারা যারা আমার মায়ের জন্য দুআ করলেন এর প্রতিদানে আল্লাহ্ পাক আপনাদের পরকালে উত্তম প্রতিদান শান্তিময় জান্নাত দিক !

[এটা অপারেশন করে বের করা হয়েছে ।]
০৭ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:০০
195968
ভোলার পোলা লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ। শুনে ভালো লাগলো। আল্লাহ যাতে এই রোগ আর কাওকে না দিন। আমিন
251746
০৭ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:৪২
251747
০৭ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:৪৩
০৭ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:০১
195969
ভোলার পোলা লিখেছেন : খুবই ভালো লিখেছেন। আমি মোবাইল এ তাই পিকচার এড করি,নি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File