মাধবপুর লেক ভ্রমণ
লিখেছেন লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু ০২ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৪:৪৯:৫২ বিকাল
১৯শে অক্টোবর ২০১৪ইং তারিখে সিলেটের একটা ফ্যামিলি-ফ্রেন্ড ভ্রমণের আয়োজন করেছিলাম। আমাদের গাড়ি ছাড়া হল ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে। পথে তখনও কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। পথের ধারের চিরোচেনা গ্রামবাংলার আবহমান দৃশ্যাবলী দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলি। “শ্রীমঙ্গলের পথে” চলতে চলতে আমরা যখন লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে পৌছাই তখন ঘড়িতে সময় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট। “লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ভ্রমণ” শেষে ১২টা ১০মিনিটে রওনা হলাম মাধবপুর লেকের উদ্দেশ্যে।
লাউয়াছড়া থেকে মাধবপুর লেকের দূরত্ব ভানুগাছা হয়ে ১৫ কিলোমিটার আর ঢাকা থেকে ২০০ কিলোমিটার।
লাউয়াছাড়াতে অনেকটা সময় ৭ রঙ্গা চায়ের পিছনে সাত পাঁচ ভেবে নষ্টা করার কারণে ঠিক করলাম লেকে বেশি সময় থাকবো না। অবশ্য লাউয়াছড়া থেকে মাধবপুর লেকে পৌছতে খুব বেশি সময়ও লাগে না। লাউয়াছড়া থেকে বেরিয়ে আবার চলা শুরু হল আমাদের। অচেনা রাস্তায় লোকজনদের জিজ্ঞাসা করতে করতে এগিয়ে চললাম। যদিও পথ অল্প কিন্তু অচেনা রাস্তায় বারবার থেমে জিজ্ঞাসা করতে করতে এগুতে হচ্ছে বলে সময় লেগে যাচ্ছে বেশী।
এ রাস্তা সে রাস্তা ঘুরতে ঘুরতে এক সময় আবার থেমে জিজ্ঞাস করতে একজন বলল আমরা লেকের রাস্তা পিছনে ফেলে এসেছি। আবার গাড়ি ঘুরিয়ে পিছিয়ে এলাম সমনেই দেখতে পেলাম একটি চিকন ইট বিছানো রাস্তা এপথেই যেতে হবে, সমনেই আবার রাস্তায় পিচ আছে।
এবার এসে থামলাম যায়গা মত সময় তখন ১২টা ৪৫ মিনিট। গুগল মেপে আগেই দেখেছি কিছুটা হেঁটে লেকের কাছে যেতে হবে, কিন্তু যেখানে থেমেছি তার সামনেই গেইট গাড়ি এখানেই থামবে। লেক কোথায়! সাইনবোর্ডে লেখা আছে ন্যাশনাল চা বাগান। তাহলে নিশ্চয় চাবাগানের ভিতরে এই লেক হবে, গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করলাম সবাই এই রাস্তাই গেট পেরিয়ে চলে গেছে একেবারে লেক পর্যন্ত।
আমাদের সাথে সাথে দুজন লোক চলতে শুরু করলো, বুঝতে পারলাম এরা সাথেই যাবে আর ফেরার পরে কিছু টিপস চাইবে। অল্প একটু হাঁটা রাস্তা। রাস্তার বাম দিকে বড় বড় চা গাছ, দেখে মনে হচ্ছিলো কমলা বাগান। সাথের লোকটিকে জিজ্ঞাসা করতেই সম্পূর্ণ নতুন একটা তথ্য জানতে পারলাম।
যেগুলিকে আমরা কমলা বাগান মনে করেছি সেই চা গাছগুলিকে রাখা হয়েছে বিচ হিসেবে। এই গাছগুলি থেকে ফুল হয়, ফুল থেকে ফল আর ফল থেকে বীজ, সেই বীজ থেকে নতুন গাছ। আমি জানতাম চা গাছ পাতা থেকে এক বিশেষ ধরনের কলমের মাধ্যমে জন্মায়। বীজ থেকে চা গাছ জন্মায় এটাই আমার জানা ছিল না।
দেখলাম গাছগুলিতে সাদা সাদা ছোট ছোট ফুল ফুটে আছে। ছোট কমলার মতই আর ছোট ছোট গাড় সবুজ কিছু ফলও ধরে আছে। রাস্তার ডান দিকেই আছে দেখলাম পাতা থেকে কলম করা চারার শেড, সারি সারি কলম করা চা চারা সেখানে।
রাস্তার শেষেই একটু উঁচু পার। উঁচু পারে উঠতেই চোখের সামনে দেখতে পেলা টলমলে চলের বিশাল লেক।
লেকের মাঝে ফুটে আছে শাপলা। প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা এই লেক, পাশের পাহারের উপর থেকে দেখতে নিশ্চয় অসাধারণ লাগবে। একে বেকে অনেকটা ভিতরের দিকে চলে গেছে। আমরা পাহারেও উঠবো না আবার ভিতরেও যাব না। এই সামনেই কিছুটা সময় বসে কাটিয়ে দিয়ে চলে যাব এখান থেকে।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য অনেকটা দূরের পথ সেই মাধপকুন্ড ঝর্ণা।
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই লেক মেীলভিবাজার শমশের নগর রোড দিয়ে ঢুকার একটি রাস্তাও আছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন