বান্দরবান ভ্রমণ – “মেঘলা”
লিখেছেন লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু ১৭ জুলাই, ২০১৪, ১২:০৬:২৫ দুপুর
২৫ জানুয়ারি রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়ি। একটি মাহেন্দ্রা গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে সারা দিনের জন্য বেরিয়ে পড়ি খাগড়াছড়ি ভ্রমণে। একে একে দেখে ফেলি “আলুটিলা গুহা”, “রিছাং ঝর্ণা”, “শতবর্ষী বটবৃক্ষ” আর “ঝুলন্ত সেতু”।
পরদিন ২৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি থেকে রাঙ্গামাটির দিকে রওনা হই একটি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে। পথে থেমে দেখে নিই “অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”। ২৭ তারিখ দুপুরের পরে পৌছাই রাঙ্গামাটি। বিকেল আর সন্ধ্যাটা কাটে বোটে করে কাপ্তাই লেক দিয়ে “সুভলং ঝর্ণা” ঘুরে।
২৮ তারিখ সকাল থেকে একে একে দেখে এলাম ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার। দুপুরের পরে বাসে করে রওনা হয়ে যাই রাঙ্গামাটি থেকে বান্দারবানের উদ্দেশ্যে। রাতটা কাটে বান্দরবানের “হোটেল ফোরস্টারে”।
পরদিন ২৯ তারিখ সকালে একটি জিপ ভাড়া করে নিয়ে চলে যাই নীলগিরিতে। নীলগিরি থেকে ফেরার পথে দেখে নিলাম শৈলপ্রপাত। বিকেলটা কাটিয়ে দিলাম নীলাচলে সূর্যাস্ত দেখে।
৩০শে জানুয়ারি সকালে সবাই ঘুম থেকে উঠি কিছুটা দেরি করেই, আজকে রাতেই ফিরবো ঢাকা, বাসের টিকেট কেনাই আছে। সকালের নাস্তা সরলাম সেই রি-সং সং রেস্টুরেন্টে। তারপর সেখান থেকে দুটি সি.এন.জি নিয়ে চলে আসলাম মেঘলাতে।
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবান শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের খাদে বাধ নির্মাণ করে কৃত্রিম হ্রদের সৃষ্টি করে এটি তৈরি করা হয়েছে। প্রবেশের টিকেট মূল্য ১০ টাকা। ঢালু একটা পথ ধরে নামতে হয় প্রথমেই।
{মেঘলার ম্যাপ}
এখানে রয়েছে শিশু পার্ক, নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা আছে, রয়েছে ২টি ঝুলন্ত সেতু এবং একটি মিনি চিরিয়াখানা, আছে একটি ওয়াচ টাওয়ারও, আর আছে একটা ক্যাবল কার (নাম মাত্র)। বিশ্রাম এর জন্য বেশ কটি বসার যায়গা আছে।
আমরা প্রথম বাম দিকের ঝুলন্ত সেতুটি পার হয়ে একটি ছাউনির নিচে বসলাম বিশ্রামের জন্য। বাচ্চা আর মেয়েরা সমনের দিকে গেলো দেখার জন্য, সাথে রইলো স্বপন। ইস্রাফীলও গেলো কিছুক্ষণ পরে।
কিচ্ছু ক্ষণের মধ্যেই বসির প্রকৃতির ডাকে সার দেয়ার জন্য অস্থির হয়ে গেলো। সমনেই একটা টয়লেটের সাইন আছে দেখেছি আমি, ঐদিকেই যেতে বললাম। আমি এক-এক কাঠের বেঞ্চিতে শুয়ে আছি, মাথার উপরে ছনের ছাউনি।
সমনেই জলের উপর দিয়ে শীতল বাতাসের কোমল পরশ নিচ্ছি গায়ে। কিন্তু কেউই আর ফিরছে না। বসে থাকতে থাকতে শেষ পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা পরে ফোন দিয়ে জানলাম ওরা আছে চিরিয়াখানার কাছে।
অর্থাৎ এরা অলরেডি পুরো মেঘলা এক চক্কর ঘরে এসে পরেছে!! আমি ৪৫ মিনিটের পথে পা না বাড়িয়ে উল্টো পথে ১০ মিনিটের কম সময়ে পৌঁছে গেলাম চিরিয়াখানা কাছে।
ওরা সবাই হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত। তাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে কিছুটা মসয় রেস্ট নিয়ে আবার আমরা হাটা শুরু করি ফেরার পথে।
ঘুরা পথে যাওয়ার সময় এখন থেকে চমৎকার মিষ্টি আনারস কিনে এনে ছিল আমার জন্য।
আগামী পর্বে দেখা হবে স্বর্ণ মন্দিরে।
পূর্বের পর্বগুলি -
“খাগড়াছড়ির পথে”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – প্রথম পর্ব”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – আলুটিলা গুহা”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – রিছাং ঝর্ণা”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শতবর্ষী বটবৃক্ষ”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”।
“রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার”।
“রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার”।
“বান্দরবান ভ্রমণ – নীলগিরি”।
“বান্দরবান ভ্রমণ – শৈলপ্রপাত”।
“বান্দরবান ভ্রমণ – নীলাচল”।
প্রথম প্রকাশ : ঝিঁঝি পোকা
এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।
বিষয়: বিবিধ
১২০৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মেঘলার কেবল কার টি আরো বেশি জায়গা নিয়ে করলে খুবই আকর্ষনিয় হতো। তবুও পর্যটন স্পট হিসেবে মেঘলা বেশ আরামদায়ক। কিন্তু কিছু লোক সেখানে মাইক বাজিয়ে পিকনিক করে সেটা বিরক্তিকর।
খুব ভালো লাগ্লো...
মন্তব্য করতে লগইন করুন