ইতিবাচক মানসিকতাঃ আমরা চাইলেই পারি, পারব
লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ১৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৯:৪৩:২৭ রাত
যে কোন ভালো উদ্যোগ বা কাজে আমাদের একরকম অনীহা কাজ করে। শুরুতে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। চলুন আগে একটা গল্প শুনি।
এক লোক প্রতিদিন সমুদ্রের তীরে মর্নিং ওয়াক করতে যায়। সমুদ্রের ঢেউ যখন বালু তীরে আছড়ে পড়ে সাথে বয়ে নিয়ে আসে অনেক স্টারফিশ। ঢেউগুলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় আর স্টারফিশগুলো বালুতটে পড়ে থাকে। পরে সূর্যের তাপে এগুলো ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়।লোকটা চলতে চলতে এক একটা স্টারফিশ হাতে তুলে নেয় আর দূর সমুদ্রের পানিতে ছুঁড়ে মারে। উনার পিছনে পিছনে মর্নিং ওয়াক করা আরও দুজন প্রতিদিন এই কাণ্ড দেখে আর হাসে।
একদিন জিজ্ঞেস না করে থাকতে পারল না,
- ভাই, শয়ে শয়ে স্টারফিশ। আপনি ২/১ টা ছুঁড়ে মেরে কি লাভ হচ্ছে? খামোখাই পণ্ডশ্রম।
লোকটা উত্তর না দিয়ে হাসল। তারপর আরও ২ পা সামনে গিয়ে একটা স্টারফিশ তুলে নিয়ে পানিতে ছুঁড়ে দিয়ে বলল,
- আমার পণ্ডশ্রমে এই ফিশটার তো লাভ হল। অন্তত ওর জীবনে তো বদল আনতে পারলাম। আর আপনারা আমাকে নিয়ে হাসি তামাশা না করে এই কাজটা করলে আরও কয়েকটা স্টারফিশ এর জীবনে ও পরিবর্তন আসত।
এই গল্পের সমাপ্তি ৩ রকম হতে পারে,
- পিছনে চলা দুজন বাঁকা হাসি দিয়ে অন্যপথ ধরতে পারে।
- উনাকে উৎসাহ দিয়ে গল্প করতে করতে আগের মত প্পথ চলতে পারে
- উনার সাথে যোগ দিয়ে আরও স্টারফিশ এর জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে।
সমাপ্তি টানা আমাদের হাতেই, তাই না? আমার বিশ্বাস আপনিও চাইলেই পারবেন। সমালোচনা করার চেয়ে ইতিবাচক মানসিকতা বেশি জরুরী এই পরিবর্তনের জন্য। কিভাবে?
একটা উদাহরন চোখের সামনেই আছে। সাকিবকে ৬ মাসের জন্য দেশে আর ১৮ মাসের জন্য বিদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে শুরু হয় জনমত গঠন। প্রথমে ঢাকায় মানববন্ধনে মাত্র কয়েকশ লোক আর চট্টগ্রামে মাত্র গোটা পঞ্চাশেক মানুষ জমায়েত হয়েছিল। এছাড়াও পত্রিকা, ব্লগ সবখানে চলতে থাকে প্রতিবাদ আর সমালোচনা। এসবগুলোর যোগফল হল চাপে পরে বিসিবির নতি স্বীকার আর এখন কিনা সাকিব দলের ভাইস ক্যাপ্টেন। বিদেশের নিষেধাজ্ঞা ও জানুয়ারি হতে উঠে যাবে বলেই মনে হয়।
এরকম অনেক কিছুই আছে,
- হতে পারে একদিন রাস্তায় কোন ময়লা, থুথু না ফেলে দেশটাকে পরিষ্কার থাকতে একটু সাহায্য করলেন
- হতে পারে কাজের লোক, কর্মচারীদের সাথে ভালো ব্যবহার করে আপনার প্রতি ওদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সাহায্য করলেন, এতে কাজের পরিবেশ ও বদলাবে।
- হতে পারে কাউকে স্কুলের বেতনের টাকা দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সাহায্য করলেন
- হতে পারে পঙ্গু, বৃদ্ধ ভিক্ষুককে প্রতিদিন একবেলা খাবার দিয়ে বাঁচতে সাহায্য করলেন
- হতে পারে একদিন সরকারী হাসপাতালে গিয়ে একা একা পড়ে থাকা কিছু অসহায় রোগীর সাথে কথা বলে ওদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করলেন।
এরকম অনেক কিছু ছড়িয়ে আছে আপনার আশপাশে। এরকম কিছু করলে দেখবেন একটা অদ্ভুত ভালোলাগা ছড়িয়ে যাবে আপনার মনে। নিজেকে অন্য উচ্চতার মনে হবে।
আপনি চাইলেই পারবেন।
বিষয়: বিবিধ
১২১৭ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো পাছে লোকে কিছু বলে।
পরচর্চা আর সমালোচনার কিছুটা সময় ইতিবাচক কাজে ব্যয় করলে অনেক কিছু বদলাবে। অনেক ধন্যবাদ
চাইলেই পারা যায় সঠিক বলেছেন, তবে আমাদের সমাজের মানুষদের চাওয়াটাই নাই! দৃষ্টভংগির পরিবর্তন আনা আসলেই জরুরি!শুকরিয়া
ধন্যবাদ ভাই আতিক, অনেক ভাল লিখেছেন এবং আশা করি লিখেই যাবেন।
ভাল কাজ করার মাধ্যমে যে তৃপ্তি আসে, তার তুলনা হয়না।
জাযাকাল্লাহ খাইর
ওনাকে প্রায়ই সব কাজে অনুকরণ করাতেই আমার সুখ । তাছাড়া ওনি এত ভাল এটিচুডে ফুটবল, ক্রিকেট, খেলেন। ব্রাজীলের রোনালদো, পাকিস্থানের সাথে তুলনা করতে একটু দিদ্ধা করিনা জানি এতে অনেকেই হাসিঁ হাসি করবেন তবুও.......
মন্তব্য করতে লগইন করুন