রসবেলাঃ চায়ে ডুবানো বিস্কুট, যেন মরুভুমিতে উট
লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৮:৫৫:৫৬ রাত
বেলা বিস্কিট নিয়ে একটা ঐতিহাসিক আবিষ্কারের ঘটনা বলব। ছোটকালে আমাদের কেউ BBC মানে জানতে চাইলে গম্ভীর মুখে বলতাম - বেলা বিস্কিট কোম্পানি। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য আর খাদ্যভ্যাস বেলা বিস্কিট ছাড়া চিন্তাই করা যায় না। সেসময় গনি বেকারির বেলা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিল। এই বিস্কিট এত জনপ্রিয় যে, বিদেশে প্রবাসীরা এখনো অনেকে দেশত্যাগের সময় বেলা বিস্কিট সাথে করে নিয়ে যায় বা কারো হাতে পাঠাতে বলে। মেহমানকে দেয়া না হলেও প্রতিদিনকার বিকালের নাস্তায় এর কোন বিকল্প নাই। ধনী কারো কারো বাসায় হয়ত এটা কেনা হয় ড্রাইভার, দারোয়ান আর মিস্ত্রীদের চায়ের সাথে দেয়ার জন্য।
চায়ে না ডুবিয়ে বেলা বিস্কিট খেয়ে তেমন মজা নেই। ক্লাস টুতে পড়তাম। টেকনিকটা শিখিয়েছিল আমার পিঠাপিঠি ক্লাস থ্রিতে পড়া বড় বোন। বেলা বিস্কিট এর গায়ে একটা শক্ত আবরন থাকে। যার ফলে ডুবালেও অনেক সময় বিস্কিট ঠিক মত চায়ে ভিজে না। একটু শক্ত ভাব রয়ে যায়। সেজন্য একটা বেলা বিস্কিট নিয়ে এর দুই দিকে আড়াআড়ি ছোট্ট কামড় বসিয়ে ভেঙ্গে নিতে হয়। এরপর ভাঙ্গা একপ্রান্ত চায়ে ডুবিয়ে অন্যপ্রান্তে মুখ লাগিয়ে ফুর......ররুত করে টান দিতে হয়। এতে ভাঙ্গা অংশের ভিতর দিয়ে চা প্রবেশ করে পুরো বিস্কিটকে রসে ভেজানো বিস্কিটে পরিনত করে। সেই বেলার নাম দিয়েছিলাম রসবেলা। এর মজাই আলাদা।
সতর্কতা - চা অতিরিক্ত গরম হলে জিহ্বা পুড়ার জন্য আমি দায়ী থাকবো না :P
তখন এই রসবেলা খেয়ে এত মুগ্ধ ছিলাম যে ভেবেছিলাম, চট্টগ্রাম নাগরিক সমিতি বা বিজ্ঞান সমিতির পক্ষ থেকে ওকে এই আবিষ্কারের জন্য কেন পুরস্কৃত করা হয় নাই? এর আগে ওকে একটু বোকাসোকা ভাবতাম, তবে এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পর হতে মানতে বাধ্য হলাম যে- বুদ্ধিসুদ্ধি ওর ও আছে।
আশা করি এই পদ্ধতি আবিষ্কারের প্যাটেন্ট আর কেউ এখন পর্যন্ত দাবী করে নাই :P
বিষয়: বিবিধ
২৯৪৯ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আবিস্কারের জন্য ব্লগারদের পক্ষ থেকে আপনাকে এক প্যাকেট বেলা বিস্কিট কিনে দেয়া হোক
বেলা বিস্কুটের প্যাকেটের অপেক্ষায় রইলাম অনেক ধন্যবাদ
উপস্হাপনার জন্যে আপনাকে বেলা বিস্কুটিয় অনেক ধন্যবাদ!!!
সময় করে খেয়ে নেব,এখনো খাওয়া হয়নি।দাওয়াত কি সবার জন্যেই.......?
এই চাতে চুবাইয়া খাইলে আরো বেশী মজা পাবেন।
হ্যা, চট্টগ্রামে থাকাকালীন এই বেলা বিস্কুটের সাথে সখ্যতা হয়েছে। সিটি কলেজে পড়বার সময় রাত জাগার সাথী ছিল এই বেলা বিস্কুট আর ফ্লাক্সের চা।
অনেক সময় কাটিয়েছই আমি আর বেলা (বেলা বোস ভেবে বসনা আবার)। অনেক বেলা অবেলার কাহিনী জমে আছে আমাদের 'দুজনের'।
ধন্যবাদ তোমাকে নস্টালজিক কিছু মুহুর্তকে মনে করিয়ে দেবার জন্য।
চিটাগং এলে তোমার সাথে বেলাকে নিয়ে বসবার ইচ্ছেটা রয়েছে, ইনশা আল্লাহ।
আর তোমার প্যাটেন্টের জন্য অভিনন্দন!
ভালো থেকো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
বেলা বিস্কিট খাওয়ার ঐ সিস্টেমতো আমার একার!! আপানারা কিভাবে নকল করলেন?
আমিও ভাবছি আগে ঢাকায় কাকে কাকে শিখিয়েছিলাম এই টেকনিকটা। ব্লগে প্যাটেন্ট দাবী করলাম আর কেউ দাবী করার আগেই। মন খারাপ করবেন না, জগদীশ এর ক্রেডিট মার্কনি পেয়েছিল জায়গামত দাবী করায়। কিন্তু বাঙালি তো জানে জগদীশ এর কথা। অনেক ধন্যবাদ আপা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন