সতর্কতা - পর্ব ৪ রকমারি বোরখাওয়ালীঃ

লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:২১:৩৬ রাত



১। এলাকার রাস্তাটা বেশ চওড়া। এই রাস্তার মাঝে একটা স্কুল। আর স্কুলের সামনে অপেক্ষমান অভিভাবকদের জন্য কিছু বসার বেঞ্চ পাতা। সন্ধ্যার পর সেখানে হাঁটাহাঁটি করা ফিগার সচেতন মহিলা কিংবা এলাকায় কোন কারনে আসা পরিবার অথবা যানবাহনের জন্য অপেক্ষমান মহিলারাও মাঝে মধ্যে কিছুক্ষন বসেন। এসব মহিলা আর বাচ্চাদের মাঝে ২/৩ জন বোরখা পড়া মহিলা এসে হটাত হটাত বসেন। কিছুক্ষন পর উঠে পড়েন আর ওদের খুঁজে পাওয়া যায় না। আরও পাওয়া যায় না বেঞ্চে বসা মহিলাদের পার্স, হাতব্যাগ কিংবা দামি মোবাইল।

২। এলাকার কোন একটা এপার্টমেন্টের ঘটনা, ড্রাইভার - দারোয়ানরা আয়েশে বসে গল্পে মত্ত। চোখের সামনে দিয়ে দুজন বোরখাওয়ালী ঢুকে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠল, কারো খবর নাই। মিনিট দশেক পর নেমে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেল। টনক নড়ল যখন উপরের একটা ফ্ল্যাট হতে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হল। ড্রইং রুম হতে দামি মোবাইল, শোপিসসহ আরও কিছু জিনিস গায়েব হয়ে গেছে। দরজাটা হয়ত লক করতে ভুলে গিয়েছিল ফ্ল্যাটের লোকজন।

৩। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। দুই বোরখাওয়ালী ৩ টা বাচ্চা নিয়ে উপস্থিত।

- ভাইজান, শরিয়তপুর যাব। গাড়িভাড়া নাই, বাচ্চাদের কিছু খাওয়াব সেই টাকাও নাই।

- এখানে আসলেন কোথা থেকে?

- চাক্তাই এ বাবা কাপড়ের ব্যবসা করে। আমরা আসছি আর বাবার বাসায় গিয়া শুনি বাবা হটাত অসুস্থ হয়ে পড়ায় শরিয়তপুর নিয়া গেছে। বাচ্চাদের মধ্যে বড়টার পকেটে টাকা আর বাবার ফোন নাম্বার ছিল। হারায় ফেলছে। দুজনই কান্না শুরু করে চোখ মুছতে শুরু করল।

আরও কথা বলার পর ওদেরকে বললাম,

- তোমাদের ফোন নাই, বাবার নাম্বার জানা নাই, শরিয়তপুরের কোন নাম্বার ও জানা নাই, সাথে কোন আইডি কার্ড বা পরিচিতিমুলক কিছুও নাই, চাক্তাই থেকে এই এলাকায় কিভাবে এসে সাহায্য চাইতেছ সেটাও বুঝতেছিনা। ৫ জনের চট্টগ্রাম - ঢাকা, ঢাকা মাওয়া ঘাট, মাওয়া ঘাট-শরিয়তপুর আর খাওয়া দাওয়া মিলায় ৩-৪ হাজার টাকা চাইতেছ। কাছেই থানা আছে, চল গিয়ে সমস্যার কথা বলি।

- আমাদের বিশ্বাস করলেন না, বিপদে না পড়লে জীবনে সাহায্য চাইতাম না। লাগবে না ভাই, লাগবে না। চট করে হাঁটা দিল সবাই.........।।

৪। বাস কাউনটার এর সামনের ঘটনা। চার জন মাঝবয়সের মহিলা একজন অফিস ফেরত যুবককে বাসের ভেতর থেকে টেনে হিঁচড়ে নামাচ্ছে আর বলছে ছেলেটি নাকি এদের দলের এক মহিলার সাথে অশোভন আচরন করেছে এবং কুপ্রস্তাব দিয়েছে। মহিলাগুলি ইভটিজিং বলে চিৎকার করে লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ এর চেষ্টা করছে এবং ছেলেটির শার্ট ধরে টানা হেঁচড়া করছে। ছেলেটি বারবার চিৎকার করে নিজেকে নির্দোষ বলছে। উপস্থিত কেউ কেউ পুলিশ ডেকে মহিলা এবং ছেলে উভয় পক্ষকে থানায় নিয়ে যাবার কথা বলতেই মহিলাগুলি চোখের পলকেই কেটে পড়ে। সহজ সরল ভদ্রলোক দেখে তাকে নাজেহাল করে কিছু কামিয়ে নেয়াই এই গ্রুপের ফন্দি। (এটা শোনা ঘটনা)

৫। নতুন এক পার্টির আবির্ভাব হয়েছে - শোনেন পার্টি। একটু নির্জন রাস্তাঘাট দেখে বোরখাওয়ালী মহিলা ডাক দেন - ভাই, শোনেন। শুনলেই শেষ। তারপর নানা অজুহাতে আরও অন্ধকারে ডেকে নিয়ে ছুরি - পিস্তল ওয়ালা ভাইদের হাতে তুলে দেন। এরপর ইজ্জত নিয়ে ফিরা না ফিরা ওদের দয়ার উপর !!

আগে ছিল পুরুষদের মলম পার্টি / হাফ প্যান্ট পার্টি এগুলো। এখন বোরখা পড়া মহিলারাও রাস্তায় নামছে, সুযোগ পেলেই হাতে হারিকেন ধরায় দিবে !!

বিষয়: বিবিধ

১২০৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

267265
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৫৭
কাজী লোকমান হোসেন লিখেছেন : হুম এই রকম ঘটনা প্রায় ঘটে তবে এই নরপিসাসদের জন্য সত্যি কারের বিপদে পড়া মানুষ গুলো সাহায্য পায়না
Rose ভালো লাগলো ধন্যবাদ Rose
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৫০
211075
আতিক খান লিখেছেন : ভালো মন্দ আলাদা করা দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। নানান রকম ফন্দি ফিকির বাদ দিয়ে নিয়ত ভালো থাকলে এরা এই বুদ্ধি দিয়ে অনেক কিছু করতে পারত। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো থাকুন। Good Luck Good Luck
267338
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:২৪
কাহাফ লিখেছেন :
সর্বোচ্চ সতর্কতাই এ সব বিপদ থেকে বাচাতে পারে জনগন কে। নৈতিকতার চরম অধঃপতনে সমাজে আজ এমন অবস্হা। স্বার্থের প্রয়োজনে সব কিছুই করতে প্রস্তুত হায়েনারা।
সজাগ না হলে এখনো-ভয়াবহ আরো করুণ পরিণতি আসবে সামনে।
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:২৩
211219
আতিক খান লিখেছেন : কাহাফ লিখেছেন :
সর্বোচ্চ সতর্কতাই এ সব বিপদ থেকে বাচাতে পারে জনগন কে। নৈতিকতার চরম অধঃপতনে সমাজে আজ এমন অবস্হা। স্বার্থের প্রয়োজনে সব কিছুই করতে প্রস্তুত হায়েনারা। সজাগ না হলে এখনো-ভয়াবহ আরো করুণ পরিণতি আসবে সামনে। Applause Applause অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। Good Luck Good Luck
268518
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:০৯
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন : সকল দেশে, সবসময়ই সমাজে কতিপয় মানুষ থাকবে, যারা খারাপ কাজ করবে, পুলিশ মিলিটারি দিয়েও তাদের ঠেকানো যাবে না। আপনার কাহিনীর ‘খারাপ চরিত্র’ গুলো বোরখা পড়ে এজন্য যে – বোরখা পড়া মানুষকে এখনও আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ‘মর্যাদার চোখে দেখা হয়! এ কারনে ‘কতিপয়’ খারাপ মেয়েমানুষ ‘বোরখা পড়ছে খারাপ কাজের নিয়তে! দোষ তো বোরখার নয়! বোরখার যে অপব্যবহারের কথা জানালেন- তাতে তো মানুষ বোরখা পড়া ঈমানদার মহিলাদেরকেও আর বিশ্বাস করবে না! হয়তো সতর্ক হবে অনেকেই- কিন্তু এতে- বোরখার সুনাম হল না বদনাম?
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:০৯
212271
আতিক খান লিখেছেন : বোরখার বিরুদ্ধে কিছু বলা হয়েছে কি? ঢাকায় দামি গাড়িতে হাইজ্যাক হয়, টেকনাফে লাক্সারি জিপে ইয়াবা বহন করে এগুলো কি গাড়ির দোষ। কেউ দাড়ি রেখে, পাঞ্জাবি পড়ে বা স্যুট প্যান্ট পড়ে প্রতারনা করলে সেটা কি দাড়ি বা কাপড়ের দোষ হত? আমার এটা সতর্কতা সিরিজ। শুধু এটাতে বোরখা কাহিনীগুলো এক করা হয়েছে। আমার অন্য লেখা পড়া থাকলে হয়ত এই প্রশ্ন করতেন না। মানুষকে সাবধান করাই উদ্দেশ্য। অনেক ধন্যবাদ। Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File