বিয়ের বয়স ১৮ আর ১৬ করা একটা অর্বাচীন সিদ্ধান্ত !!
লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:০১:৩০ দুপুর
১। এক বেকারির মালিক বন্ধুর ফোন।
- দোস্ত, খুব টেনশনে আছি। আমার রুটি - বিস্কিট এর ভ্যান চালায় যে ছেলেটা, সে এক মেয়েকে ভাগায় নিয়ে আসছে। নিয়ে পালাইছে গ্রামের বাড়িতে। শালা, ভাগাবি তো এমন কাউকে ভাগা, যেখানে ঝামেলা নাই। সে ভাগাইছে এক প্রভাবশালী নেতার মেয়েকে। নেতা এখন আমাকে শুদ্ধ ভাগাইতেছে। ভাগ্যিস মেয়ের বয়স ১৮ হয় নাই। পুলিশ মোবাইল ট্রেস করে বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করছে। ছেলেটা ওখান থাকে পলাইছে। এখন পুলিশ আর নেতা মিলে আমার ঘুম হারাম করে দিছে। আমি কি করলাম বল।
- এই ভ্যান চালক শিক্ষিত মেয়েকে পটাইল কেমনে?
- আরে এই ১৬/১৭ বছরের মেয়েগুলো সব উড়তে থাকে। একটু গাধা টাইপ হয়। নিজেদের মনে করে বেশি বুঝে। পোলা এমনিতে স্মার্ট। ভ্যান চালালে কি হবে। জিন্স আর টিশার্ট পরে ঘুরে, ম্যাট্রিক পর্যন্ত পড়ছে। মাঝে মধ্যে ইংলিশ ও বলে। এইটা নিয়ে৩ টা মেয়ের সাথে ঝামেলা পাকাইছে। রাতে মোবাইলে ফ্রি কথা বলে আর গিফট পাঠায়। মেয়ের মাথা খারাপ নইলে শুধু চেহারা আর ২ টা মিষ্টি কথা শুনে পালায়? পোলাটা কাজে ভাল বলে কিছু বলি নাই। আর রাখা যাবে না। শেষ পর্যন্ত থানা পুলিশ......।।
২। আরেক বন্ধুর প্রতিবেশি মেয়ে পালাইছে সিএনজি ট্যাক্সি চালকের সাথে। পালায় বিয়েও করে ফেলছে। ভুয়া সনদ জমা দিছিল। স্কুলের সনদ বের করে দেখা গেল বয়স ২১ হয় নাই। কাজেই বিয়ে অবৈধ, ছেলেকে পুরা হল জেলে। আরও খবর নিয়ে দেখা গেল ছেলের আরেকটা বউ ও আছে।
১৬ বছরের মেয়ে মানে ক্লাস টেন আর ১৮ বছরের ছেলে মানে ক্লাস টুয়েলভ। মানে কলেজে পড়ে। এই বয়সে কিভাবে এরা বিয়ের যোগ্য হয়? এই বয়সগুলোই হল ভুল করার বয়স। এই বয়সে পালায় বিয়ে করলে যদি বিয়ে বৈধ হয়, এর ভবিষ্যৎ কি? ইন্টার ও না দেয়া ছেলে মেয়েকে খাওয়াবে কি? বাপের টাকায়? আর ম্যাট্রিক না দেয়া মেয়ে কি বিয়ের জন্য যোগ্য? শুধু বাবা-মা হওয়াই কি বিয়ের যোগ্যতা। এই কঠিন বাস্তব দুনিয়াতে কেউ কারো না। নিজেরা সব সমস্যা সামলাতে যোগ্য না হলে বিয়ের মজা ২ দিনে উড়ে যাবে। আমাদের দেশে শারীরিক পরিশ্রমের কাজ না হলে ছেলেদের উপার্জনক্ষম হতে ২৬/২৭ বছর লাগে। আর মেয়েরা কমপক্ষে গ্র্যাজুয়েট না হলে শ্বশুরবাড়ি আর স্বামীর মুখ চেয়েই সারাজীবন কাটাতে হবে। কোন কারনে একা হয়ে গেলে এই ডিগ্রিটাই সাহায্য করবে অন্তত মান সন্মান নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য। শ্বশুরবাড়ির পড়ালেখা সবার কপালে জুটে না। আগের ২১ আর ১৮ ছিল ন্যুনতম বয়স।
সরকার কি হিসাবে ছেলেদের বিয়ের বয়স ১৮ আর মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ নির্ধারণ করছে বোধগম্য নয়। আর শুধু মিষ্টি আলাপ, ভালবাসার কথা, রূপের প্রশংসা আর ফুল / রিচার্জ উপহার দিয়ে জীবন চলবে না। ভুল করলে মিষ্টি আলাপ গায়ে পড়তে হবে, রূপের প্রশংসা দিয়ে লাঞ্চ করতে হবে আর মরে যাওয়া ফুলগুলো দিয়ে ছাদ বানিয়ে তার নিচে থাকতে হবে। চোখ দুইটা আকাশে না রেখে মাটিতে রাখলেই ভাল, উশটা খেতে হবে না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নৈতিকতার চরম অধঃপতনের বর্তমান এই সময়ে, বন্ধুত্ব-প্রেমের ছদ্মাবরণে কলুষতার যে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে তা থেকে- কিছুটা হলেও মুক্ত রাখবে এমন বিধান।স্বাবলম্বীতার দোহাই দিয়েও এ থেকে যখন বিরত রাখা যাচ্ছে না,মন্দের ভালো হিসেবে আইন কে সাধুবাদ দেয়া যায়।
বিয়ের বেলায় বয়সের বাধ্য বাধকতা অনৈতিকতা কেই উস্কে দেয়।
এটা একান্তই আমার মত।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে......।
আবারো ধন্যবাদ......
ধন্যবাদ সুন্দর লিখাটির জন্য।
পোষ্টটি স্টিকি করা যেতে পারে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন