ইয়াবাঃ মাদকের ছোবলে ডুবে যাচ্ছে যুবসমাজ, ডুবে যাচ্ছি আমরা

লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ২৭ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:০১:০২ সন্ধ্যা



গত শনিবার সাগরপথে পাচারের সময় কর্ণফুলীর কাফকো চ্যানেল থেকে দুই লাখ পিস ইয়াবাসহ একটি ফিশিং বোট আটক করেছে কোস্টগার্ড। এর মুল্য ১০ কোটি টাকা।

বেশ ক'বছর আগে প্রথম পত্রিকায় ইয়াবা সংক্রান্ত খবর পড়ি। তখন ভাবতেই পারিনি এই ইয়াবা তার বিশাল থাবা বিস্তার করে পুরো দেশে বিশেষ করে যুব সমাজকে গ্রাস করবে। এর ক্ষতিকর দিকগুলো জানা সত্ত্বেও একজন সুস্থবুদ্ধির মানুষ কিভাবে এটাতে জড়িয়ে যায়? প্রতিদিন নানা পথে প্রায় ৩০ লাখ ইয়াবা দেশে ঢুকছে। প্রশাসন এতদিন নির্বিকার থাকায় বা প্রভাবশালীদের কাছে নতিস্বীকার করায় এই ইয়াবা এখন দেশের বিশাল এক সমস্যা। পরিচিত মহলে কেউ কেউ এই মাদকের ছোবলে বিপর্যস্ত।

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, বস্তি হতে সর্বত্র ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত। একপিস ইয়াবাতে লাভ হয় ৫০ টাকা, তাই ইয়াবা ব্যবসা একটা সহজে ধনী হবার পথ ও। এজন্য এক শ্রেণীর অমানুষ নানা ছলেবলে কৌশলে ফাঁদে ফেলছে নিরীহ জনগোষ্ঠীকে আর আসক্ত করে গড়ে তুলছে তাদের নিয়মিত খদ্দের হিসাবে। আশা করি যে কোন সুস্থ মানুষ এই নেশায় নিজের জীবন বরবাদ করবে না আর আসক্ত হয়ে থাকলে দ্রুত চিকিৎসা করে সুস্থ জীবনে ফিরে আসবেন।

একটাই ভালো খবর, ইদানিং প্রশাসন ইদানিং এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, ধরা পড়ছে কিছু চালান আর অপরাধী। চাই এই নষ্টের বীজ একেবারেই উপড়ে যাক পুরো সমাজ হতে।।

ইয়াবার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া: নিয়মিত ইয়াবা সেবনে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, নিদ্রাহীনতা, খিঁচুনি, মস্তিষ্ক বিকৃতি, রক্তচাপ বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, হার্ট অ্যাটাক, ঘুমের ব্যাঘাত, শরীরে কিছু চলাফেরার অস্তিত্ব টের পাওয়া, অস্বস্তিকর মানসিক অবস্থা, কিডনি বিকল, চিরস্থায়ী যৌন-অক্ষমতা, ফুসফুসের প্রদাহসহ ফুসফুসে টিউমার ও ক্যান্সার হতে পারে। এ ছাড়া ইয়াবায় অভ্যস্ততার পর হঠাৎ এর অভাবে সৃষ্টি হয় হতাশা ও আত্মহত্যার প্রবণতা। এ মাদক সাধারণ শান্ত ব্যক্তিটিকেও হিংস্র ও আক্রমণাত্মক করে তুলতে পারে। ইয়াবা গ্রহণে হ্যালুসিনেশন ও সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়াটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। হ্যালুসিনেশন হলে রোগী উল্টোপাল্টা দেখে, গায়েবি আওয়াজ শোনে। আর প্যারানয়াতে ভুগলে রোগী ভাবে অনেকেই তার সঙ্গে শত্রুতা করছে। তারা মারামারি ও সন্ত্রাস করতেও পছন্দ করে।

ইয়াবা সংক্রান্ত কিছু তথ্য পত্রিকা হতেঃ (বিস্তারিত লিঙ্কে)

১। বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে ভয়াবহ মাদক ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে টেকনাফের আলোচিত ৭ প্রভাবশালী। একই সঙ্গে এর সাথে ৭ পুলিশ কর্মকর্তাও জড়িত রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখার এক তালিকায় এদের চিহ্নিত করা হয়। সূত্র জানা যায়, ইয়াবা রোধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানের টার্গেট তালিকাভুক্ত ৭৬৪ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী। একইসঙ্গে মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের ৩৬ ইয়াবা গডফাদারের নাম রয়েছে।

২। মিয়ানমারে উৎপাদিত ইয়াবা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় ৪৩টি পয়েন্ট দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে পৌঁছে দেওয়া হয় এদেশে। এর মধ্যে টেকনাফ ও শাহপরীর দ্বীপের মধ্যবর্তী প্রায় ১৪ কিলোমিটার নাফ নদীর চ্যানেল এলাকা ইয়াবা পাচারের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন কেবল বাংলাদেশেই পাচার হয় ৩০ লাখ পিস ইয়াবা।

৩। মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন কেবল বাংলাদেশেই পাচার হয় ৩০ লাখ পিস ইয়াবা। মিয়ানমারের শীর্ষ কয়েকজন ডিলার এসব কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের ৩০ লাখ পিস ইয়াবা প্রতিদিন ৭ প্রভাবশালী ব্যবসায়ির ১৭ জন ডিলারের কাছে পৌঁছে দেয়। এসব ডিলারের আবার রয়েছে ‘ক’ শ্রেণির প্রায় ৭শ’ সাব ডিলার। যারা ৫ হাজার থেকে ৫ লাখ পিস ইয়াবা সারাদেশের খুচরা ডিলারদের কাছে পৌঁছে দেয়।

৪। ৩৭ টি কারখানায় উৎপাদিত হয় ১৩ ধরনের ইয়াবা : মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমারের আটটি সংগঠন গড়ে তুলেছে ৩৭টি ইয়াবা কারখানা! অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশের মইং, শানাইস্টিস, টেংইং, সেন, কাইয়াং, কেউও, কাশিন ও আইক্কা নামক শহরগুলোতে ইয়াবা উৎপাদনের কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ইয়াবা উৎপাদন করা হয় মায়ানমারের সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ড থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে। এসব কারখানায় ১৩ ধরনের ইয়াবা তৈরি করা হয়। এরমধ্যে ডব্লুওয়াই, ৮৮৮আর২, ওকে, গোল্ড, টাইগার, এইচসিআর্ট, চিকেন ওয়ার্ল্ড, স্কালহোয়ে, হর্স-সুয়ে, হর্স হেড এবং ফ্লাওয়ার অ্যান্স এলর্টাট উল্লেখযোগ্য।

http://dainikazadi.org/details2.php?news_id=2886...

http://en.wikipedia.org/wiki/Ya_ba

http://www.prothom-alo.com/.../%E0%A6%B0%E0%A6%82%E0%A6...

http://www.samakal.net/2014/08/27/81907

বিষয়: বিবিধ

১২৫১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

258872
২৭ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০২
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া। আঁতকে উঠার মতো ভয়াবহ অবস্থা। জাজাকাল্লাহু খাইর।
২৭ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫১
202536
আতিক খান লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আসলেই ভয়াবহ অবস্থা। ৩০ লাখ ইয়াবা কারা সেবন করছে? এখন নাকি ইয়াবা তৈরির যন্ত্র এসেছে, ঘণ্টায় ২৫০০ ট্যাবলেট বানাতে পারে। নিরীহ যুবসমাজকে ধ্বংস করে একটা শ্রেণী বড়লোক হবার ধান্দায় মগ্ন। খুব দ্রুত কিছু করা দরকার। :Thinking :Thinking জাযাকাল্লাহ খাইর Good Luck Good Luck
258882
২৭ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৫
মামুন লিখেছেন : খুবই উদ্বেগের কথা। এতোদিন ছিল ফেন্সিডিল সিরাপের অবাধ রাজত্ব। এর সাথে এখন এই ইয়াবা যোগ হল। ফেন্সিডিল সিরাপ এর বোতল ইয়াবার তুলনায় আকারে বেশ বড়- সি নিরিখে গুটি গুটি ইয়াবা ট্যাবলেট সহজে পাচারযোগ্য। তোমার লিখাটায় বিস্তারিত রয়েছে, এগুলো পড়ে নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। আমরা অভিভাবক এবং সচেতন প্রতিটি মহল যদি এখন থেকেই সচেতন না হই, তবে অচিরেই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হবে। একবার সেখানে পৌঁছে গেলে, আমাদের করণীয় আর কি-ই বা থাকবে??
সুন্দর এবং সময়োপযোগী একটি দারুন পোষ্টের জণ্য তোমাকে ধন্যবাদ দেয়াটাও কম হয়ে যায়। আমার হৃদয়ের গভীর থেকে তোমার জন্য অনেক অনেক শুভাশিষ রইলো। ভালো থেকো সবসময়ের জন্য। আল্লাহ পাক তোমাকে অনেক ভালো প্রতিদান দিক। Rose Rose Good Luck
২৭ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
202537
আতিক খান লিখেছেন : ভারতের ফেন্সিডিল আর বারমার ইয়াবা, প্রতিবেশিরা দেখি ভালই অস্ত্র বানাচ্ছে আমাদের পঙ্গু করে দেবার জন্য। আমরা লেখা ছাড়া আর কিইবা করব, যারা করতে পারে তারা জেগে ঘুমাচ্ছে Worried Crying অনেক ধন্যবাদ Good Luck Good Luck
258885
২৭ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৭
মামুন লিখেছেন : হ্যা, আমরা লেখার দ্বারা প্রতিবাদ জানাতে থাকব। আর সবাইকে সচেতন করার অন্য কোনো পথও তো দেখছি না। তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ। Rose Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File