ত্যাগ আর ভোগঃ
লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ০৭ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৪১:৩২ দুপুর
১। ফেরি ডুবিতে দঃ কোরিয়ার প্রধান মন্ত্রির পদত্যাগ সাম্প্রতিক ঘটনা। আর লাটভিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন সামান্য সুপার মার্কেট ভবন ধ্বসের ঘটনায়।
স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সংস্কৃতি আমাদের দেশে নেই। শেষ কবে কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন মনে করতে পারছি না। জনমত আর মিডিয়ার চাপে বড়জোর দফতর গেলেও মন্ত্রিত্ব যায় না। কয়েকজন প্রশ্ন তুলেছেন, পদত্যাগ করলেই কি সমাধান? হুম, একমাত্র সমাধান নয় কিন্তু এতে দায়বদ্ধতার সংস্কৃতি অন্তত চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী তো দেশ ডুবলেও এই দেশে পদত্যাগ করেন না, তাই অন্তত মন্ত্রীই ভরসা। মন্ত্রীত্ব যাবার ভয় থাকলে আইন ও বদলাবে, মনিটরিং ও বাড়বে। সুপারিশ বাস্তবায়নের হাস্যকর পরামর্শ যার যার পকেটে রাখাই ভাল। হাজার লঞ্চ ডুবিতে যত সুপারিশ ফাইল বন্দী হয়ে আছে, তাঁর কিছু বাস্তবায়িত হলেও লঞ্চ ডুবি আর ঘটত না। কয়টা তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখে? আপনি, আমি, সচিব বা মন্ত্রী সবাই কি জানি না কি কি করা দরকার? মাথা কাজ না করলে হাত পা যে করবে না বলাই বাহুল্য। আর ক্ষতিপুরনটা কি কারো পকেট থেকে যাচ্ছে? তাও গেলে বুঝ আসত। এটা যাবে জনগনের ট্যাক্সের টাকা হতে। দায় মাথায় নিতে না জানলে হাজার ছাগল আর টাকা বিতরণে কোন পরিবর্তন এই দেশে আসবে না নিশ্চিত থাকতে পারেন।
আর কিছু মানুষ কমলে বরং এই দেশের উপকার হয়, এই একটা জিনিষ আমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্তই আছে। এই উপকারটা ক্ষমতাধররা নিয়মিতই করে যাচ্ছেন, উনাদের ধন্যবাদ প্রাপ্য!!
২। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ব্যারনেস সাইদা ওয়ারসি গাজা ইস্যুতে মন্ত্রিত্বের মায়া ত্যাগ করেছেন। শুধুমাত্র ব্রিটেনের গাজা নীতির সাথে দ্বিমত হওয়াতেই এই পদক্ষেপ। স্পেন ইসরায়েলকে কোন প্রকার অস্ত্র বিক্রয় করবে না ঘোষণা দিয়েছে। আর ৫ টা ল্যাটিন দেশ তাদের দূতাবাস ইসরায়েল হতে ফিরিয়ে নিয়েছে। এরকম আরও অনেক উদাহরন দেয়া যায়।
আর আমরা সামান্য কিছু ইহুদি পন্য ত্যাগ করতে পারছি না। আমরা না মুসলিম হতে পেরেছি না বিশ্ব মানবতার ইস্যুতে সোচ্চার হতে পেরেছি। প্রতি ঈদে বাসায় ৮-১০ লিটার কোক পেপসি ন্যুনতম প্রয়োজন হয়। এবার টাকাটা বাঁচল। শুধু কোক পেপসি নয়, অন্য ইহুদি পন্য নিয়েও আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।
ইহুদি স্বার্থ রক্ষা করে এরকম পন্যের অনেকগুলোই জীবনধারনের জন্য আবশ্যকীয় নয়। এগুলোর অনেক বিকল্প ও ছড়িয়ে আছে বাজারে। যেগুলোর প্রয়োজনীয় বিকল্প নেই, সেগুলো আপাতত ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা স্মৃতিভ্রষ্ট জাতি। যুদ্ধবিরতি হলেই ভুলে যাব নিরীহ, নিষ্পাপ শিশু আর নারীদের খণ্ড বিখণ্ড লাশের কথা। ইসরায়েলের উপর চাপ না বাড়ালে আবার কদিন পর নব উদ্যমে গাজার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে ইহুদি সৈন্যরা, নিশ্চিত থাকুন। ১৯৭১ এ আমেরিকার জর্জ হ্যারিসন, ফ্রান্সের জ্য ক্যুয়ে কিংবা বেলজিয়ান মারিও রয়মান্স কথা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, যারা মানবতার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাংলাদেশের জন্য।
আমার পাশের বাসায় ঢিল পড়ছে। আমি লুকিয়ে থাকলে, হাততালি দিলে, প্রতিবাদ না করলে বা সোচ্চার না হলে পরের দিন আমার বাসায় ও ঢিল পড়বে নিশ্চিত থাকুন।
- ত্যাগে নয় আমরা ভোগের সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। আরাম আয়েশ, পদ, বিলাসিতা কিছুই আমরা ত্যাগ করতে রাজি না। আরব বিশ্ব এর জ্বলন্ত উদাহরন। প্যালেস্টাইন এদের কাউকেই বিপদে পাশে পায়নি। কিছু কিছু ত্যাগ করতে না শিখলে আমাদের ও একসময় আমছালা সবই যাবে।
বিষয়: বিবিধ
১১৫৭ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশে তো ক্ষমতায় যে থাকে মিডিয়া তাদের আর বাংলাদেশের জনগন অনুভূতিহীন।
এটা কি দেওয়ানবাগী
হুজুর ?
আমরা স্মৃতিভ্রষ্ট জাতি। যুদ্ধবিরতি হলেই ভুলে যাব নিরীহ, নিষ্পাপ শিশু আর নারীদের খণ্ড বিখণ্ড লাশের কথা।
অনেক ধন্যবাদ
ভাই বিরোধিতা করছিনা। যেটা করা মানায় না সেটাই করছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন