পথকলিঃ ( কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের স্মরণীয় একটি অভিজ্ঞতা )

লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ২৯ মে, ২০১৪, ১০:২৮:২১ রাত



প্রায় ট্রাফিক মোড়েই শিশুদের ভিক্ষার দৃশ্য আমাদের অতি পরিচিত। রাস্তায় হাঁটলে পা জড়িয়ে ধরা, গাড়িতে থাকলে জানালার কাঁচে টোকা দেয়া বা ক্ষেত্রবিশেষে গাড়ির পিছে পিছে দৌড়াতে থাকা। ফুটপাতে একটা থালা-বাটি নিয়ে বসে হাত বাড়িয়ে দেয়াও হরহামেশা দেখতে পাই। কোন চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক শিশু পঙ্গুত্ব বরন করে নিয়ে ভিক্ষা করে - এই জাতীয় ঘটনাও পত্রিকায় আসে। অথচ এই বয়সটা ছিল ওদের নিজেকে গড়ার সময়, শিক্ষা অর্জন করার সময়। এটা আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা।

কক্সবাজারের সমুদ্রপারে হাঁটছিলাম। একটা বাচ্চা ছেলে এসে বলল, স্যার একটা গান শুনবেন? সাথে আরেকটা ৫/৬ বছরের শিশু। আমার পাশে দাঁড়ানো কয়জন হাসল। আমার ও মনে হল এই পিচ্চি কি গান শুনাবে! হতাশ হয়ে ফিরতেই কি মনে করে ডাক দিলাম "ঠিক আছে, শোনা"।

দুজনের মুখেই রাজ্যের অন্ধকার কেটে গিয়ে ভোরের সূর্যের আলো। গান শুরু হল -----

"ওরে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দিওয়ানা............" ছোটটা হাত দিয়ে তাল দিচ্ছে। আমি হতভম্ব, এত ভালো গাইবে আশা করিনি। বললাম আরেকটা শোনা।

গাইল ---------

"তোমার ঘরে বাস করে কারায় / ও মন জান না / তোমার ঘরে বসত করে কজনা / মন জান না..."

অসাধারন। শিল্পীর সন্মানি দেয়া হল। নাম জানাল 'মোহাম্মদ শরিফ'। তোর গান খুব ভালো লেগেছে বলতেই মিষ্টি একটা হাসি ফুটে উঠল চেহারায়। সালাম দিয়ে অন্য শ্রোতার খোঁজে পা বাড়াল শরিফ।

গ্রুপ ছবি উঠানোর জন্য লোক খুঁজছি। একটা ৭/৮ বছরের মেয়ে এসে বলল 'আমি তুলে দেই'? খুব পেশাদার ভঙ্গিতে কয়েকটা ছবি উঠালো। চেক করে দেখলাম বেশ ভালো ধারনা ফটোগ্রাফিতে। ছবি তোলার সন্মানি দেয়া হল।

এরা দুজন সীমিত সুযোগের মধ্যেও ভিক্ষা না করে যে নিজেদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছে, দেখে খুব ভালো লাগলো। আমাদের দোয়া রইল তোমাদের সাথে..................।।

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

228147
২৯ মে ২০১৪ রাত ১০:৫১
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : অনেক সুন্দর হয়েছে ... ভালো লাগলো।
২৯ মে ২০১৪ রাত ১১:০৭
175003
আতিক খান লিখেছেন : ১ম মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, ভাল থাকুন। Happy Good Luck
228174
৩০ মে ২০১৪ রাত ১২:২৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
৩০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৫২
175075
আতিক খান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। Happy Good Luck
228243
৩০ মে ২০১৪ সকাল ১০:১৫
হতভাগা লিখেছেন : এসব পিচ্চিগুলো কিন্তু খুব একটা খারাপ ছবি তোলে না ।

হিমছড়িতে দেখেছি একটা কাপল তাদের ক্যামেরা একটা পিচ্ছির হাতে তুলে দিয়ে তাকে দিয়ে অনেক ছবি তুলছে ।
োওখানে যেসব প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার থাকে তারা আপনার পিছনে ঘুর ঘুর করতে থাকবে তাদের ক্যামেরায় আপনার ছবি তুলে দেবার জন্য । ছবি প্রতি ২০ টাকা নেয় । ফলে ১০-১৫ টার বেশী ছবি তুলতে চাইবেন না ।

ঐ পিচ্ছিকে যদি হাতে ৬০-৭০ টাকা ধরিয়ে দেন , সাথে কিছু খাবার , তাহলে সে দিব্যি আপনাদের কথা মত কাজ করে যাবে ।

সেন্ট মার্টিনেও কিছু কিছু পিচ্চি পাওয়া যায় গাইড হিসেবে , তারা ছবিও তোলে ভাল ।
৩০ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮
175076
আতিক খান লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া। এদের থেকেও অনেক কিছু শিখার আছে আমাদের। বাসার সামনে বা রাস্তার মোড়ে যখন শিশু কিশোররা হাত বাড়িয়ে দেয় ভিক্ষার জন্য, এদের কথা মনে পড়ে। ওরা যে দারিদ্রের মাঝেও মাথা উঁচু করে কিছু করার চেষ্টা করছে, সত্যিই দারুন। এদের ছবির মান ভালই, আমাদের দাঁড় করিয়ে পিচ্চি মেয়েটা বলল- বলেন 'CHEESE'. ফ্রেম ও ভালই বুঝে। ধন্যবাদ । Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File