দুর্নীতির জালঃ

লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ১০ মে, ২০১৪, ০৯:২৮:২৬ রাত

পত্রিকা খুললেই দুসংবাদে ভরা দেশের অবস্থা আঁচ করা যায়। যারা এসব দেখে পত্রিকা পড়া ছেড়ে দিয়েছেন, তারাই ভালো আছেন। সিঙ্গাপুরে থাকতে দেখতাম, কেউ কাউকে একটা থাপ্পড় দিলেও সেটা পত্রিকার খবর হত।

দুর্নীতি এখন রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত সবাই এখন জড়িত। সবাই যে যার পদ অনুযায়ি ভাগ পান। সন্দেহ যা ছিল, মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের দেয়া ক্রেস্টেই সেটুকু দূরীভূত। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব থেকে সবাই জড়িত। মন্ত্রীর আত্মীয় নির্মাণ ঠিকাদার পেয়েছেন ক্রেস্ট সাপ্লাইয়ের কাজের আদেশ !!

সরকার এব্যাপারে শক্ত কোন পদক্ষেপ এখনো নিতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়িরা কি এই ইস্যুতে এতটুকু লজ্জিত? সাড়া দেশের মানুষের মাথা হেঁট হয়ে গেলেও নির্লজ্জরা ঠিকই বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঠিক আছে বাবা, এতো খাই হলে বা চুরি করতে ইচ্ছা হলে ১০-২০% চুরি কর। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে পুরো ক্রেস্টের ৯০% ই মেরে দিয়েছে। এটা একটা উদাহরন মাত্র, খবর নিলে দেখা যাবে সবখানেই চলছে এরকম পুকুর চুরি।

বিমান বন্দরে এক বয়স্ক ভদ্রলোকের সাথে দেখা। উনি সেখানে চাকুরি করেন। গল্পের এক পর্যায়ে দুঃখ করে বললেন,

- আমাদের সময় আশির দশকে বিনা পয়সায় যোগ্যতা দিয়ে চাকুরি পেতাম। আর গতকাল আমার ভাগিনা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েও রেলের সামান্য পিওনের চাকুরীটা পায়নি। আরও বেশি চায়।

কয়েক হাজার টাকার একটা চাকুরি পেতে ৪ লাখ এ কাজ না হলে সেই পদে কত টাকা উপরি আয়ের সুযোগ থাকে? আর উপরের পদগুলো নিয়ে আনুপাতিক হারে ধরে নিন।

রেলের টিকেট আমরা কয়জন সঠিক মুল্যে কিনি? সবাই ধরেই নিয়েছি ৩০% অতিরিক্ত মুল্যে সাড়ে ছয়শ টাকার টিকেট ১০০০-১১০০ টাকায় আমাদের কিনতে হবে। প্রতি ট্রেনে এইভাবে প্রায় ২ লাখ টাকা কমপক্ষে অতিরিক্ত আয় হয়, যার ভাগ সম্ভবত অনেকেই পায়। কদিন আগে অনেক টিকেট নিয়ে একজন ধরা পড়ে অনেক কিছু ফাঁস করে দিলেও সেই তদন্তের ফলাফল ও নিশ্চিত ভাবে চাপা পড়তে যাচ্ছে কদিনের মধ্যে।

এক পরিচিত ভদ্রলোক উত্তরা সরকারী উদ্যোগে নেয়া এপার্টমেন্ট প্রকল্পে ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছিলেন। ১০ লাখ টাকা দিয়ে বসে আছেন, অনেকমাস ধরে। সরকারের ২ জন এমপি অবৈধভাবে রাজউক হতে টেণ্ডার নিয়ে কাজ না করে ফেলে রেখেছেন। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ফ্ল্যাট। সাধারন মানুষ হতে কত শতকোটি টাকা নিয়ে এরা ব্যাংকে ফেলে রেখেছেন।

২ বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখে টাকা নিয়ে সাধারন মানুষের আবাসন নিয়ে এরা ছিনিমিনি খেলে।

আর বিদেশে অভিজাত জীবন যাপনে অভ্যস্ত, জাতির পিতার কন্যা হবার সুবাদে বিনা পয়সায়(?) পাচ্ছেন দেড় বিঘার উপর বাড়ি। একটি আইন বানিয়ে এই উপহার আরও কতজনের স্বার্থসিদ্ধির সুযোগ করে দিচ্ছে সেগুলো কি পত্রিকায় আসে?

বিষয়: বিবিধ

১০০১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

220007
১০ মে ২০১৪ রাত ১০:৫৭
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১১ মে ২০১৪ সকাল ১১:১৬
167788
আতিক খান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
220026
১১ মে ২০১৪ রাত ১২:১৩
ফেরারী মন লিখেছেন : দূর্নীতিতে দেশটা ছয়লাব হয়ে গেলো
১১ মে ২০১৪ সকাল ১১:১৭
167789
আতিক খান লিখেছেন : শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়ন্ত্রণ না করলে সামনে অনেক কঠিন সময় Sad ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File