সহ্য ক্ষমতাঃ
লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ০৫ মে, ২০১৪, ০৩:২৩:৩১ দুপুর
বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারন করতে গিয়ে একটা চমৎকার শিক্ষণীয় ঘটনা মনে পড়ল।
বাঙ্গালির সহ্যক্ষমতা নিয়ে অনেক গল্প লেখা যায়। যতক্ষন না গায়ের উপর আসে আমরা এড়িয়ে যাই বা অন্তত যাওয়ার চেষ্টা করি। সেটা ব্যক্তি পর্যায়ে হোক, সামাজিক পর্যায়ে হোক অথবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হোক।
আমাদের বাসাটা আবাসিক এলাকার মূল রাস্তায়। বাসার উল্টা দিকের গলিতে একটা স্কুল আছে। গাড়িওয়ালাদের বাচ্চারাই পড়ে বেশিরভাগ। গাড়িগুলোর উচিত বাচ্চাকে নামিয়ে দিয়ে বা উঠিয়ে নিয়ে চলে যাওয়া। বাস্তবে সেটা ঘটে না। গলিটা একটু সরু হওয়াতে অনেক গাড়ি এলাকার মুল রাস্তায় এসে যে কোনখানে পার্ক করে অপেক্ষা করতে থাকে। আমাদের বাসার সামনে হুটহাট পার্ক করা ছিল নিত্য নৈমত্যিক ঘটনা। তখন ও বাসায় কোন দারোয়ান ছিলনা। কে সারাদিন পাহারা দিবে? বের হবার সময় দেখতাম কোন না কোন গাড়ি দিব্যি পার্ক করে আছে। ড্রাইভার আয়েশ করে পান চিবুচ্ছে। বাসার সামনে প্রায় ৯০ ফুট জায়গায় ৬/৭ টা গাড়ি অনায়াসে পার্ক করতে পারে। অবস্থা এমন দাঁড়ালো, গাড়ি রাখতে রাখতে বাসার প্রবেশদ্বার ও বন্ধ হয়ে গেলো। অনুরোধ করলে এমনভাবে সরায় যেন অনেক উপকার করছে। ড্রাইভারগুলো বললে কথাও শুনে না। এই ৫ মিনিট, ১০ মিনিট বলে পার করে দেয়।
আব্বা তখন বেঁচে ছিলেন। লুঙ্গি পরে বের হলেন। ড্রাইভারদের বললেন গাড়িগুলো সরাতে। লুঙ্গিওয়ালা দেখে ড্রাইভাররা পাত্তাই দিলনা। গাড়ি ও কেউ সরাল না। বাসার গেটের সামনে নতুন মডেলের ঝকঝকে টয়োটা। আব্বা একটা সাতকানিয়ার ১ নম্বর আস্ত লোকাল ইট (১০" X ৫") হাতে উঠালেন। এবার ড্রাইভারদের টনক নড়ল। ছুঁড়ে মারলেন ইটটা, ইচ্ছা করে অল্পের জন্য নতুন মডেলের গাড়িতে লাগালেন না। ২ মিনিটের মধ্যে সব গাড়ি হাওয়া। রটে গেলো, এই বাসার সাহেবের মেজাজ গরম। রাখলে গাড়ির বারোটা বাজার সম্ভাবনা।
পরদিন থেকে বাসার সামনে আর গাড়ি দেখা গেল না.........।
মোরালঃ বাঙালি শক্তের ভক্ত, নরমের যম.....................
বিষয়: Contest_father
১৩৪৩ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসলেই সত্যি কথা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন