“সন্তানের বিয়েতে তার প্রতি ঈমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের (রাহিমাহুল্লাহ) উপদেশ” _________________________________________
লিখেছেন লিখেছেন বদরুল এ হারুন ০২ মে, ২০১৪, ১২:২৬:২৩ দুপুর
প্রিয় পুত্র, দশটি গুন অর্জন করতে না পারলে পারিবারিক জীবনে সৌভাগ্য অর্জন সম্ভব নয়। সুতরাং সেগুলো মনে রেখো, অর্জন করো এবং প্রবলভাবে সেগুলোর উপর অধিষ্ঠিত থেকো।
প্রথম দুইটির জন্য: নারীরা আকর্ষণ প্রত্যাশী এবং তারা যেটা ভালোবাসে সেটা সরাসরিই বলতেই পছন্দ করে। সুতরাং স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে কার্পণ্য করো না। যদি তেমনটি কর তবে তা তোমাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে দিয়ে সম্পর্কটিকে কৃত্রিম করে ফেলবে।
তৃতীয়ত: নারীরা কঠোর এবং অতিসতর্ক পুরুষদের পছন্দ করে না, যদিও কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই এগুলোর মধ্য সামাঞ্জস্য করো। এতে ভালোবাসায় আসক্তি আসবে, যা তোমাদের প্রশান্তি দিবে।
চতুর্থত: তারা তোমাদের কাছে সেটাই প্রত্যাশা করে, যেটা তোমরা তাদের কাছে প্রত্যাশা কর। যেমন: সুমিষ্ট কথা, পরিপাটিতা, পোশাকে পরিচ্ছন্নতা এবং আনন্দদায়ক আবহ। তাই এমন হালেই থাকার চেষ্টা করবে।
পঞ্চমত: মূলত ঘর থাকে রমনীর কর্তৃত্বে। যখন সে ঘরে, তখন সে একজন কর্তৃত্বশীল রানীর মতই নিজেকে অনুভব করে। তাই ঘরে তার কর্তৃত্বে বাঁধা দিয়ে তার রাজত্বটি ধ্বংস করা থেকে সতর্ক থেকো। একজন রাজা সবচেয়ে বেশি রেগে যায় যখন অন্য কেউ তার কর্তৃত্বের উপর ছড়ি ঘুরোয়, যদিও সে কোন যৌক্তিক কিছু করে থাকে। তাই ঘরে নারীদের কর্তৃত্বে নিজের জোর জবরদস্তি চালাবে না।
ষষ্ঠত: নারীরা তাদের সহধর্মকে ভালোবাসতে চায়, একই সাথে সে তার বাবার বাড়ির পরিজনদেরও হারতে চায় না। তাই, কখনো নিজের সাথে তার পরিবারের তুলনা করতেও যেও না, কারণ তখন হয় তোমাকে নয়ত তার পরিবার, যেকোন একটি হারানোর অশঙ্কায় সে দুশ্চিন্তায় ভুগবে, যেটা তোমার এবং তোমাদের দৈনিন্দ জীবনে মারাত্নক প্রভাব ফেলবে।
সপ্তমত: নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে। এটাই মূলত তাদের সৌন্দর্যের রহস্য, যা তাদের প্রতি আকর্ষিত করে। আর এটা তাদের কোন দূর্বলতাও নয়, যেমন “চোখের ভ্রুগুলো দেখতে সুন্দর, এই কারণেই যে সেগুলো বাঁকা।” যদি তারা কখনো ভুল করে ফেলে তবে অভদ্রভাবে তিরস্কার করো না, যেটাতে মূলত সরল পথে আনার কোন চেষ্টা থাকে না। না হলে তুমি আসলে তাকেই ভেঙে দিলে। আর তাকেই ভেঙে দেয়া মানে কার্যত তার বিচ্ছেদ। একই সাথে তাকে তার ভুলগুলোর উপর ছেড়েও দিয়ো না। না হলে তার ভুলগুলো দোষে পরিণত হবে এবং তা তার অহংবোধকে আরো উদ্ধত করে দিবে। ফলে সে তোমার প্রতি আর উদার থাকবে না, তোমার কথা শুনবে না। তাই মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো।
অষ্টমত: নারীদের ফিতরাহ এটাই যে তারা তাদের সহধর্মের সহচার্য চায় এবং এতে কোন অনুযোগ পছন্দ করে না। তুমি যদি সারা জীবনও তার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকো কিন্তু একবার যদি দুঃখ দিয়ে ফেলো, তখন সে হয়ত বলে বসবে, “আমি তোমার কাছে কখনোই ভালো কিছু পাই নি।” তাদের এহেন মনোভাব যদি তোমার পছন্দ নাও হয় তবুও তাকে অপছন্দ করো না অথবা তার থেকে দূরে চলে যেও না। হয়তো তার অন্য ভালো স্বভাবগুলো তোমাকে প্রশান্তি দিবে। সুতরাং সমতা বিধান করো।
নবমত: অবশ্যই এমন কিছু সময় থাকে যখন নারীদের শারীরিক ও মানসিক দূর্বলতা এবং অবসাদ কাজ করে। যেমনটি আল্লাহই সেই সময়গুলোতে তাদের কিছু ফরজ ইবাদত থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আল্লাহ তাদের পুরোপুরি সলাত আদায় থেকেও অব্যহতি দিয়েছেন এবং আরো কিছু বাধ্যবাধকতা দিয়েছেন তোমাদের জন্য, যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা শারীরিক এবং মাসিকভাবে স্বাভাবিক হয়। তাই এই সময়টিতে তাদের সাথে গভীরভাবে ধার্মিক আচরণ করো। যেভাবে আল্লাহ তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন, সেভাবে তোমারো উচিত সেই সময় তার ব্যাপারে তোমার প্রতি বিধানগুলো মেনে চলা।
শেষত: মনে রেখো, নারীরা তোমাদের অধীনস্থ, তাই তাদের প্রতি অনুগ্রহশীল থেকো।
সংগ্রহ
বিষয়: বিবিধ
১২৪৮ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন