নিজের সুখই প্রকৃত সুখ নয় অপরের সুখের জন্য ত্যাগ স্বীকারেই প্রকৃত সুখ।
লিখেছেন লিখেছেন বদরুল এ হারুন ৩০ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:৫৪:৩৭ সকাল
একবার ৫০ জনের একটা সেমিনার হচ্ছিল ৷ মঞ্চে যিনি বক্তব্য রাখছিলেন হঠাৎ করেই থেমে গেলেন তিনি, আলোচনার পরিবর্তে একটা গ্রুপ অ্যাক্টিভিটির সিদ্ধান্ত নিলেন ৷ তিনি সবাইকে একটি করে গ্যাসভর্তি বেলুন দিয়ে তাতে মার্কার পেন দিয়ে যার-যার নাম লিখতে বললেন ৷ তারপর বেলুনগুলো সংগ্রহ করে অন্য একটি কক্ষের মধ্যে ছেড়ে দিলেন ৷
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদেরকে ঐ কক্ষে প্রবেশ করে পাঁচ মিনিটের মধ্যে নিজের নাম লেখা বেলুনটি নিয়ে আসতে বলা হলো ৷ প্রত্যেকে তার নিজের বেলুনটি খুঁজে পেতে ভীষণভাবে হুড়োহুড়ি শুরু করে দিল ৷ শেষ পর্যন্ত কেউই তার নিজের বেলুনটি সংগ্রহ করতে পারল না ৷
এবার প্রত্যেককে বলা হলো যেকোন একটি বেলুন পিক করে যার নাম উঠবে তাকে সেটা দিয়ে দিতে ৷ এভাবে দুই মিনিটের মধ্যে সবাই তার নিজ-নিজ বেলুনটি পেয়ে গেল ৷
অ্যাক্টিভিটিস শেষ হলে বক্তা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে লাগলেন,"আমাদের জীবনেও ঠিক এমনই ঘটে ৷ আমরা স্বার্থপরের মত শুধু নিজের সুখ তালাশ করি, পাগল হয়ে ছুটাছুটি করি, ধ্বস্তাধ্বস্তি করি, কেড়ে নিতে চেষ্টা করি,,,,,,,,,,,
কিন্তু কোথায় প্রকৃত সুখ তার সন্ধান কিছুতেই খুঁজে পাই না ৷"
আমাদের জীবনের প্রকৃত সুখ আসলে অন্যের সুখের মধ্যে লুকিয়ে আছে ৷ আল্লাহ্ সুবহানা তায়ালা সমস্ত প্রাণীকূলের তুলনায় মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন জ্ঞান-বুদ্ধি ও মানবীয় গুণাবলীর দ্বারা যাতে আমরা পশুদের মত শুধু নিজের প্রবৃত্তির পিছনে না ছুটি ৷ বরং অপেক্ষাকৃত দুর্বল কিংবা অসহায় ব্যক্তির সাহায্যার্থে এমনকি নিজের সুখ-সাচ্ছন্দ্য যথাসম্ভব ত্যাগ করে হলেও এগিয়ে আসি ৷
মক্কা থেকে পারসিকিউটেড হয়ে মুহাজিরগণ যখন মদীনাতে হিজরত করলেন, তখন তাদের হাতে আপন প্রাণটি ছাড়া আর তেমন কিছু ছিল না ৷ আনসারগণ মুক্তহস্তে তাদেরকে নিজেদের সম্পদ দান করেছেন ৷ এমনকি তারা (আনসারগণ) বলেছেন,"আমার স্ত্রীদের মধ্যে যাকে আপনার পছন্দ হয় বলুন, আমি তাকে তালাক দিচ্ছি,,অতঃপর আপনি তাকে বিবাহ করুন ৷"
সুবহানআল্লাহ্! আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে (সঃ) ভালবেসে, দ্বীন ইসলামের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন ৷ পৃথিবী থেকে তারা হাজার বছর আগে বিদায় হয়েছেন, তাদের সেই অর্থ-সম্পদের কোন হদীস আজ নেই, কিন্তু তাদের অবদান কিয়ামত পর্যন্ত মানবতা আর ভ্রাতৃত্ববোধের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে ৷
পক্ষান্তরে অত্যাচারী বাদশাহ ফির'আউনের যাবতীয় কু-কর্মের মাষ্টার প্ল্যানার, প্রভাবশালী মন্ত্রী কারুণ এর খাজানার সিন্দুকের চাবি বহন করতে একাধিক শক্তিশালী পুরুষের দরকার হতো ৷ তার সেই সম্পদের পাহাড় আজ নেই ৷ কিন্তু ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ের ভিতর কারুণের নোংরা নামটির উপরে মানুষ ঘৃণাভরে আজো থুথু দেয় ৷ অধিক সম্পত্তি থাকার জন্যে তার এ অবস্থা হয়নি, হয়েছে তার দরিদ্র মানসিকতার জন্যে ৷ নিজের জীবনের প্ল্যানটা বড় বিচ্ছিরিভাবে করেছিল সে ৷
জীবনটাকে চেটেপুটে খেয়ে অনন্ত জীবন নিজেকে আগুনের জিহ্বার কাছে সঁপে দেয়ার মধ্যে কি স্মার্টনেস আছে বলুন তো?
কৃতজ্ঞতা : মাহমুদুর রহমান
বিষয়: বিবিধ
১৩৭২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এ্ই কথা গুলো কি,র্তমান সমাজ ব্যবস্তা বুঝে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন