জুমুআ'র ডিনের আবিরভাব
লিখেছেন লিখেছেন পাহারা ২৫ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:৪০:১৮ রাত
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
ানসার-হে ঐ সব লোক, যারা ঈমান এনেছো, জুম’আর দিন যখন নামাযের জন্য তোমাদের ডাকা হয় তখন আল্লাহর যিকরের দিকে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও৷ এটাই তোমাদের জন্য বেশী ভাল যদি তোমাদের জ্ঞান থাকে৷
ালোচোনা-
জুম'আ কথাটি প্রকৃতপক্ষে একটি ইসলামী পরিভাষা ৷ জাহেলী যুগে আরবের অধিবাসীরা একে 'ইয়াওমে আরূবা' বলত ৷ ইসলামী যুগে এ দিনটিকে মুসলমানদের সমাবেশের দিন হিসেবে নির্ধারিত করে এর নাম দেয়া হয় জুম'আ ৷ ঐতিহাসিকগণ যদিও বলেন যে, কা'ব ইবনে লুয়াই কিংবা কুসাই ইবনে কিলাবও এদিনটির জন্য এ নাম ব্যবহার করেছিল ৷ কারণ এ দিনেই তারা কুরাইশদের লোকজনের সমাবেশ করতেন (ফতহুল বারী) ৷ কিন্তু তার এই কাজ দ্বারা প্রাচীন এই নামের কোন পরিবর্তন হয়নি ৷ বরং সাধারণ আরবাসী এ দিনটিকে 'আরূবা'ই বলত ৷ সত্যিকার অর্থে নামের পরিবর্তন হয় তখন যখন ইসলামী যুগে এর নতুন রাখা হয় ৷
ইসলাম -পূর্ব যুগে সপ্তাহে একটি দিনকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা এবং তাকে জাতির প্রতীক হিসেবে নির্ধারিত করার রীতি আহলে কিতাবদের মধ্যে প্রচলিত ছিল ৷ ইহুদীরা ঐ উদ্দেশ্যে 'সাবতের(শনিবার) দিনটিকে নির্ধারিত করেছিল ৷ কারণ আল্লাহ তা'আলা এ দিনেই বনী ইসরাঈল জাতিকে ফেরাউনের গোলামী থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন ৷ খৃস্টানরা নিজেদেরকে ইহুদীদের থেকে আলাদা করে দেখানোর জন্য রবিবার দিনকে তাদের জাতীয় প্রতীক হিসেবে নির্ধারিত করে ৷ যদিও এ সম্পর্কিত কোন নির্দেশ না হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দিয়েছিলেন না ইনজীল তথা বাইবেলে এর কোন উল্লেখ আছে ৷ তবে খৃস্টানদের বিশ্বাস হলো ক্রুশে বিদ্ধ হয়ে প্রাণ উৎসর্গ করার পর এ দিনেই হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম কবর থেকে বেরিয়ে আসমানের দিকে গিয়ে ছিলেন ৷ এ কারণেই পরবর্তীকালে খৃস্টানরা এ দিনটিকে তাদের উপাসনার দিন হিসেবে গ্রহণ করে ৷ তারপর ৩২১ খৃস্টাব্দে রোমান সম্রাজ্য একটি নির্দেশের দ্বারা এ দিনটিকে সাধারণ ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে ৷ এ দুটি জাতি থেকে নিজ জাতিকে আলাদা করার জন্য ইসলাম এ দুটি দান বাদ দিয়ে জুম'আর দিনকে সামষ্টিক ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করেছে ৷
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও হযরত আবু মাসউদ আনসারীর বর্ণনা থেকে জানা যায়, হিজরাতের কিছুকাল পূর্বে পবিত্র মক্কাতেই নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জুম'আর ফরয হওয়ার বিধান নাযিল হয় ৷ কিন্তু সে সময় তিনি এ নির্দেশের ওপর আমল করতে পারতেন না ৷ কারণ মক্কায় সামষ্টিক কোন ইবাদত করা সম্ভব ছিল না ৷ তাই যেসব লোক নবীর (সা) আগে মদীনায় হিজরাত করেছিলেন তিনি তাদের নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন যে, তারা যেন সেখানে জুম'আ কায়েম করে ৷ অতএব প্রথম দিকে হিজরাতকারীদের নেতা হযরত মুস'আব ইবনে উমায়ের ১২ জন লোক নিয়ে মদীনায় সর্বপ্রথম জুম'আর নামায আদায় করেন ৷ (তাবারানী, দারু কুতনী) ৷ হযরত কা'ব ইবনে মালেক এবং ইবনে সিরীনের বর্ণনা মতে এরও পর্বে আনসারগণ আপনা থেকেই (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ পৌছার পূর্বে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তারা সবাই মিলে সপ্তাহে একদিন সামাষ্টিকভাবে ইবাদত করবেন ৷ এ উদ্দেশ্যে তাঁরা ইহুদীদের সাবত এবং খৃস্টানদের রবিবার বাদ দিয়ে জুম'আর দিনকে মনোনীত করেছিলেন এবং বনী বায়দা এলাকায় হযরত আসআদ ইবনে যুরারা প্রথম জুম'আ পড়েছিলেন ৷ এতে ৪০ ব্যক্তি শরীক হয়েছিল (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজা, ইবনে হিব্বান , আবদ ইবনে হুমায়েদ, আবদুর রাযযাক, বায়হাকী) ৷ এ থেকে জানা যায় ইসলামী জনতার আবেগ অনুভূতি তখণ এমন একটি দিন থাকার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছিল যেদিন অধিক সংখ্যাক মুসলমান একত্র হয়ে সামষ্টিকভাবে ইবাদত করবে ৷ তা শনিবার ও রবিবার থেকে আলাদা কোন দিন হওয়াটিও ইসলামী রুচি ও মেজাজ- প্রকৃতিরই দাবী ছিল ৷ যাতে মুসলমানদের জাতীয় প্রতীক ইহুদী ও খৃষ্টানদের জাতীয় প্রতীক থেকে আলাদা থাকে ৷ এটা সাহাবা কিরামের ইসলামী মানসিকতার একটি বিস্ময়ক কীর্তি ৷ অনেক সময় নির্দেশ আসার পূর্বে তাদের এই রুচি ও মেজাজ- প্রকৃতিই বলে দিতো যে, ইসলামের মেজাজ ও প্রকৃতি অমুক জিনিসের দাবী করছে ৷
হিজরাত করার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম যে কাজগুলো করেন জুম'আর নামায কায়েম করা তার অন্যতম ৷ পবিত্র মক্কা নগরী থেকে হিজরাত করে সোমবার দিন তিনি কুবায় উপনীত হন, চারদিন সেখানে অবস্থান করেন এবং পঞ্চম দিন জুম'আর দিনে সেখানে থেকে মদীনার দিকে রওয়ানা হন ৷ পথিমধ্যে বনী সালেম ইবনে আওফের এলাকায় জুম'আর নামাযের সময় হয় ৷ সেখানেই তিনি প্রথম জুম'আর নামায পড়েন ৷ (ইবনে হিশাম) ৷
এ নামাযের জন্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ার পরের সময় নির্দিষ্ট করেছিলেন অর্থাৎ ঠিক যোহরের নামাযের সময় ৷ হিজরাতের পূর্বে হযরত মুসআব ইবনে উমায়েরকে তিনি যে লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন তাতে বলেছিলেনঃ
-------------------------
"জুম'আর দিন সূর্য যখন মাথার ওপর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে পড়বে তখন দুই রাকআত নামাযের সাহায্যে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন কর ৷ " (দারু কুতনী) ৷
হিজরাতের পরে তিনি মৌখিকভাবেও এ নির্দেশ দিয়েছেন এবং কার্যতও ঐ সময়ে জুম'আর নামায পড়াতেন ৷ হযরত আনাস (রা) হযরত সালামা ইবনে আকওয়া (রা) , হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা) , হযরত যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা) , হযরত সাহল (রা) ইবনে সা'দ, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, (রা) , হযরত আম্মার (রা) ইবনে ইয়াসির, এবং হযরত বেলাল (রা) , থেকে হাদীস গ্রন্থসমূহে এ বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে ৷ ঐ সব বর্ণনায় আছে সূর্য মাথার ওপর থেকে হেলে পড়ার পর নবী (সা) জুম'আর নামায পড়তেন ৷ (মুসনাদে আহমাদ, বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযী) ৷
নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের কাজ -কর্ম থেকে এ বিষয়টিও প্রমাণিত যে, জুম'আর দিন তিনি যোহরের নামাযের পরিবর্তে জুম'আর নামায পড়াতেন ৷ এ নামায ছিল মাত্র দু'রাকআত ৷ নামাযের আগে তিনি খুতবা দিতেন ৷ এটা ছিল জুম'আর নামায এবং অন্যান্য দিনের যোহরের নামাযের মধ্যে পার্থক্যসূচক ৷ হযরত উমর রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেনঃ
------------------
"তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের মুখ নিসৃতবাণী অনুসারে মুসাফিরের নামায দুই রাকআত, ফজরের নামায দু রাকআত এবং জুমআর নামায দুই রাকআত ৷ এটা কসর নয়, বরং পূর্ণ নামায ৷ আর খোতবা থাকার কারণে জুম'আর নামায সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে ৷ "
এখানে যে আযানের উল্লেখ করা হয়েছে তা খোতবার বেশ আগে যে আযানের মাধ্যমে মানুষকে জুম'আর নামাযের সময় আরম্ভ হওয়ার বিষয়টি অবগত করা হয় সে আযান নয়, বরং খোতবার ঠিক আগে যে আযান দেয়া হয় সেই আযান ৷ হযরত সায়েব (রা) ইবনে ইয়াযীদ কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে , রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের যুগে শুধু একটি আযান দেয়া হতো ৷ আর তা দেয়া হতো ইমাম মিম্বরে উঠে বসার পর ৷ হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত উমরের (রা) যুগেও এ কাজটিই করা হয়েছে ৷ অতপর হযরত উসমানের (রা) সময়ে জনবসতি বৃদ্ধি পেলে তিনি আরো একটি আযান দেয়ানো শুরু -
জুম'আ কথাটি প্রকৃতপক্ষে একটি ইসলামী পরিভাষা ৷ জাহেলী যুগে আরবের অধিবাসীরা একে 'ইয়াওমে আরূবা' বলত ৷ ইসলামী যুগে এ দিনটিকে মুসলমানদের সমাবেশের দিন হিসেবে নির্ধারিত করে এর নাম দেয়া হয় জুম'আ ৷ ঐতিহাসিকগণ যদিও বলেন যে, কা'ব ইবনে লুয়াই কিংবা কুসাই ইবনে কিলাবও এদিনটির জন্য এ নাম ব্যবহার করেছিল ৷ কারণ এ দিনেই তারা কুরাইশদের লোকজনের সমাবেশ করতেন (ফতহুল বারী) ৷ কিন্তু তার এই কাজ দ্বারা প্রাচীন এই নামের কোন পরিবর্তন হয়নি ৷ বরং সাধারণ আরবাসী এ দিনটিকে 'আরূবা'ই বলত ৷ সত্যিকার অর্থে নামের পরিবর্তন হয় তখন যখন ইসলামী যুগে এর নতুন রাখা হয় ৷
ইসলাম -পূর্ব যুগে সপ্তাহে একটি দিনকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা এবং তাকে জাতির প্রতীক হিসেবে নির্ধারিত করার রীতি আহলে কিতাবদের মধ্যে প্রচলিত ছিল ৷ ইহুদীরা ঐ উদ্দেশ্যে 'সাবতের(শনিবার) দিনটিকে নির্ধারিত করেছিল ৷ কারণ আল্লাহ তা'আলা এ দিনেই বনী ইসরাঈল জাতিকে ফেরাউনের গোলামী থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন ৷ খৃস্টানরা নিজেদেরকে ইহুদীদের থেকে আলাদা করে দেখানোর জন্য রবিবার দিনকে তাদের জাতীয় প্রতীক হিসেবে নির্ধারিত করে ৷ যদিও এ সম্পর্কিত কোন নির্দেশ না হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দিয়েছিলেন না ইনজীল তথা বাইবেলে এর কোন উল্লেখ আছে ৷ তবে খৃস্টানদের বিশ্বাস হলো ক্রুশে বিদ্ধ হয়ে প্রাণ উৎসর্গ করার পর এ দিনেই হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম কবর থেকে বেরিয়ে আসমানের দিকে গিয়ে ছিলেন ৷ এ কারণেই পরবর্তীকালে খৃস্টানরা এ দিনটিকে তাদের উপাসনার দিন হিসেবে গ্রহণ করে ৷ তারপর ৩২১ খৃস্টাব্দে রোমান সম্রাজ্য একটি নির্দেশের দ্বারা এ দিনটিকে সাধারণ ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে ৷ এ দুটি জাতি থেকে নিজ জাতিকে আলাদা করার জন্য ইসলাম এ দুটি দান বাদ দিয়ে জুম'আর দিনকে সামষ্টিক ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করেছে ৷
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও হযরত আবু মাসউদ আনসারীর বর্ণনা থেকে জানা যায়, হিজরাতের কিছুকাল পূর্বে পবিত্র মক্কাতেই নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জুম'আর ফরয হওয়ার বিধান নাযিল হয় ৷ কিন্তু সে সময় তিনি এ নির্দেশের ওপর আমল করতে পারতেন না ৷ কারণ মক্কায় সামষ্টিক কোন ইবাদত করা সম্ভব ছিল না ৷ তাই যেসব লোক নবীর (সা) আগে মদীনায় হিজরাত করেছিলেন তিনি তাদের নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন যে, তারা যেন সেখানে জুম'আ কায়েম করে ৷ অতএব প্রথম দিকে হিজরাতকারীদের নেতা হযরত মুস'আব ইবনে উমায়ের ১২ জন লোক নিয়ে মদীনায় সর্বপ্রথম জুম'আর নামায আদায় করেন ৷ (তাবারানী, দারু কুতনী) ৷ হযরত কা'ব ইবনে মালেক এবং ইবনে সিরীনের বর্ণনা মতে এরও পর্বে আনসারগণ আপনা থেকেই (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ পৌছার পূর্বে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তারা সবাই মিলে সপ্তাহে একদিন সামাষ্টিকভাবে ইবাদত করবেন ৷ এ উদ্দেশ্যে তাঁরা ইহুদীদের সাবত এবং খৃস্টানদের রবিবার বাদ দিয়ে জুম'আর দিনকে মনোনীত করেছিলেন এবং বনী বায়দা এলাকায় হযরত আসআদ ইবনে যুরারা প্রথম জুম'আ পড়েছিলেন ৷ এতে ৪০ ব্যক্তি শরীক হয়েছিল (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজা, ইবনে হিব্বান , আবদ ইবনে হুমায়েদ, আবদুর রাযযাক, বায়হাকী) ৷ এ থেকে জানা যায় ইসলামী জনতার আবেগ অনুভূতি তখণ এমন একটি দিন থাকার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছিল যেদিন অধিক সংখ্যাক মুসলমান একত্র হয়ে সামষ্টিকভাবে ইবাদত করবে ৷ তা শনিবার ও রবিবার থেকে আলাদা কোন দিন হওয়াটিও ইসলামী রুচি ও মেজাজ- প্রকৃতিরই দাবী ছিল ৷ যাতে মুসলমানদের জাতীয় প্রতীক ইহুদী ও খৃষ্টানদের জাতীয় প্রতীক থেকে আলাদা থাকে ৷ এটা সাহাবা কিরামের ইসলামী মানসিকতার একটি বিস্ময়ক কীর্তি ৷ অনেক সময় নির্দেশ আসার পূর্বে তাদের এই রুচি ও মেজাজ- প্রকৃতিই বলে দিতো যে, ইসলামের মেজাজ ও প্রকৃতি অমুক জিনিসের দাবী করছে ৷
হিজরাত করার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম যে কাজগুলো করেন জুম'আর নামায কায়েম করা তার অন্যতম ৷ পবিত্র মক্কা নগরী থেকে হিজরাত করে সোমবার দিন তিনি কুবায় উপনীত হন, চারদিন সেখানে অবস্থান করেন এবং পঞ্চম দিন জুম'আর দিনে সেখানে থেকে মদীনার দিকে রওয়ানা হন ৷ পথিমধ্যে বনী সালেম ইবনে আওফের এলাকায় জুম'আর নামাযের সময় হয় ৷ সেখানেই তিনি প্রথম জুম'আর নামায পড়েন ৷ (ইবনে হিশাম) ৷
এ নামাযের জন্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ার পরের সময় নির্দিষ্ট করেছিলেন অর্থাৎ ঠিক যোহরের নামাযের সময় ৷ হিজরাতের পূর্বে হযরত মুসআব ইবনে উমায়েরকে তিনি যে লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন তাতে বলেছিলেনঃ
-------------------------
"জুম'আর দিন সূর্য যখন মাথার ওপর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে পড়বে তখন দুই রাকআত নামাযের সাহায্যে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন কর ৷ " (দারু কুতনী) ৷
হিজরাতের পরে তিনি মৌখিকভাবেও এ নির্দেশ দিয়েছেন এবং কার্যতও ঐ সময়ে জুম'আর নামায পড়াতেন ৷ হযরত আনাস (রা) হযরত সালামা ইবনে আকওয়া (রা) , হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা) , হযরত যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা) , হযরত সাহল (রা) ইবনে সা'দ, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, (রা) , হযরত আম্মার (রা) ইবনে ইয়াসির, এবং হযরত বেলাল (রা) , থেকে হাদীস গ্রন্থসমূহে এ বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে ৷ ঐ সব বর্ণনায় আছে সূর্য মাথার ওপর থেকে হেলে পড়ার পর নবী (সা) জুম'আর নামায পড়তেন ৷ (মুসনাদে আহমাদ, বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযী) ৷
নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের কাজ -কর্ম থেকে এ বিষয়টিও প্রমাণিত যে, জুম'আর দিন তিনি যোহরের নামাযের পরিবর্তে জুম'আর নামায পড়াতেন ৷ এ নামায ছিল মাত্র দু'রাকআত ৷ নামাযের আগে তিনি খুতবা দিতেন ৷ এটা ছিল জুম'আর নামায এবং অন্যান্য দিনের যোহরের নামাযের মধ্যে পার্থক্যসূচক ৷ হযরত উমর রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেনঃ
------------------
"তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের মুখ নিসৃতবাণী অনুসারে মুসাফিরের নামায দুই রাকআত, ফজরের নামায দু রাকআত এবং জুমআর নামায দুই রাকআত ৷ এটা কসর নয়, বরং পূর্ণ নামায ৷ আর খোতবা থাকার কারণে জুম'আর নামায সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে ৷ "
এখানে যে আযানের উল্লেখ করা হয়েছে তা খোতবার বেশ আগে যে আযানের মাধ্যমে মানুষকে জুম'আর নামাযের সময় আরম্ভ হওয়ার বিষয়টি অবগত করা হয় সে আযান নয়, বরং খোতবার ঠিক আগে যে আযান দেয়া হয় সেই আযান ৷ হযরত সায়েব (রা) ইবনে ইয়াযীদ কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে , রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের যুগে শুধু একটি আযান দেয়া হতো ৷ আর তা দেয়া হতো ইমাম মিম্বরে উঠে বসার পর ৷ হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত উমরের (রা) যুগেও এ কাজটিই করা হয়েছে ৷ অতপর হযরত উসমানের (রা) সময়ে জনবসতি বৃদ্ধি পেলে তিনি আরো একটি আযান দেয়ানো শুরু করেন ৷ মদীনার বাজারে অবস্থিত তাঁর যাওরা নামক বাড়ীতে এ আযান দেয়া হতো ৷ (বুখারী, আবু দাউদ, নাসায়ী, তাবারানী) ৷
বিষয়: বিবিধ
১২৪৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে এই প্রথম দেখলাম আফরা'র ব্লগে। তাই পড়তে আসলাম আপনার পোস্ট। তবে এত লম্বা পোস্ট দেখে আমি ভয় পেয়েগেছি বেশি লম্বা হলে পর্ব করে দিলে পড়তে সুবিধা হয়। আপনি বুঝি "ফোনেটিক" ইউজ করে টাইপ করেন, বানান আর খেয়াল করলে ভালো হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন