একটি খারাপ অভ্যাস নিয়ে শিক্ষণীয় গল্পঃ---
লিখেছেন লিখেছেন জিরো ফাইব ১৯ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:২০:০৩ সন্ধ্যা
শফিক ও রফিক। ২জনের গলায় গলায় ভাব।
গ্রাম্য পরিবারে জন্ম হওয়ায় পড়ালেখা করতে পারেনি।
পেশায় দু'জনই কৃষক। মাঠে বিভিন্ন ফসলের চাষ করে গঞ্জের
হাটে তা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলছিলো খুব ভালোভাবেই।
আজ বুধবার।
গঞ্জে আজ হাট বসবে।
তাই তারা ভ্যান গাড়িতে তাদের পণ্যসামগ্রী নিয়ে যথাসময়ে বের হয়ে পড়লো। তারা ঊভয়েই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সহিত আদায় করতো। গঞ্জের হাট দূরে হওয়ায় তারা যোহরের নামাজ পড়েই বের হয়ে পড়লো। দুজনেই যথাসময়ে হাটে এসে পৌঁছলো। তাদের সমস্ত পণ্যসামগ্রী বিক্রি হতে হতে মাগরীবের নামাজের আযান দিয়ে দিলো।
সাধারণত আছরের সময়েই তাদের পণ্য বিক্রি হয়ে যায়,
কিন্তু, আজ একটু দেরী হয়ে গেলো।
রাতে ডাকাতের ভয় থাকায় শফিক সিদ্ধান্ত নিলো সে মাগরীবের নামাজ কাযা করবে।
শফিক একটা সিগারেট টানতে টানতে তার ভ্যানসহ বাড়ির
পথ ধরলো।
কিন্তু, রফিক বললোঃ
আমি ইচ্ছে করলেই নামাযটা পড়ে যেতে পারি।
ইচ্ছাকৃত ভাবে নামাজ কাযা করাটা ঠিক হবেনা।
সে নামাজ পড়ে যাবে বলে মনস্থির করলো।
ডাকাতের ভয় তাকে কাবু করতে পারলোনা।
সে অযু করে মসজিদে প্রবেশ করলো।
নামাজ আদায় করে আল্লাহর দরবারে হাত
তুলে দোয়া করলোঃ-
"হে আল্লাহ্!! তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই জান-মালের
ঝুঁকি নিয়ে নামাজ পড়তে গিয়ে সঙ্গীকে হারিয়ে একা হয়ে গেলাম।
পথে আমার যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে আমাকে হেফাযত
করো.........................।"
মুনাজাত শেষ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে, সবকিছু
গুছিয়ে,মুখে একটা সিগারেট ধরিয়ে রফিক পথ চলতে শুরূ করলো।
আর, মনে মনে চিন্তা করতে লাগলো পাহাড়ের ওপর দিয়ে সে কী করে এ ভ্যান গাড়িটা নিয়ে একাকি পার হবে।
এসব চিন্তা করতে করতে সে পাহাড়ি পথটির কাছে চলে আসলো।
পথটি ঊচুঁ হওয়ায় ভ্যান গাড়িটিকে ঠেলে ঊপরে ওঠানো তার একার পক্ষে প্রায় অসম্ভব ছিলো।
সে মনে মনে নিজেকে ভৎসনা করতে লাগলো এই বলে যে,
কেন যে শফিকের সাথে চলে গেলামনা!!!
তারপরও আল্লাহর ঊপর ভরসা করে সাহায্যের আশায় চারিদিকে তাকাতে লাগলো।
কাঊকে দেখতে না পেয়ে অবশেষে নিজেই ঊপরে ঊঠাতে চেষ্টা করতে লাগলো।
কিন্তু সে প্রত্যেক বারই ব্যর্থ হতে লাগলো।
তার নিজের ঊপর তার প্রচণ্ড রাগ হচ্ছিলো।
রাগে তার চোখ গড়িয়ে পানি পড়তে লাগলো।
হঠাৎ,
কারো অট্টহাসির শব্দে নিরবতা ভেঙ্গে খান খান
হয়ে গেলো!!!
রফিক চোখ তুলে তাকালো পাহাড়ের ঊপরের দিকে।
হ্যাঁ সেখান থেকেই শব্দটা ভেসে আসছিলো।
রফিক তাদেরকে ডাকার ঊদ্দেশ্যে এগুতে চাইলো।
কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো - রফিক এক
পা এগুলো তাঁরা এক পা পিঁছিয়ে যায়!!!
রফিক বিষয়টি খেয়াল করলো।
প্রচণ্ড রাগে সে বলে ঊঠলোঃ
-তোমাদেরকে দেখে তো ভালো মানুষ বলে মনে হচ্ছেনা!!
-কেন?
-আমি বিপদে পড়েছি,তোমরা আমাকে সাহায্য করার
পরিবর্তে হাসছো!!
আবার,
তোমাদেরকে ডাকতে আমি এক পা অগ্রসর
হলে তোমরা এক পা পিছিয়ে যাচ্ছো।
তোমাদের মতলবটা কী??
-তুমি যে নামাজের পরে আল্লাহর কাছে সাহায্য
প্রার্থনা করেছিলে,আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত
সাহায্যকারী।
-তাহলে ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?আর
কেনইবা পিছিয়ে যাচ্ছো ??
-তুমি যে সিগারেট খেয়েছিলে,সেজন্য তোমার মুখ
থেকে দূর্গন্ধ বের হচ্ছে!!
আর এজন্যই আমরা সামনে এগুতে পারছিনা!!
-ও! এখন আমাকে কি করতে হবে ??
-তুমি এখান থেকে ১০০গজ দুরে যাও।
আমরা তোমার গাড়িটাকে ঊঠিয়ে দিচ্ছি.......
রফিক সেখান থেকে পিছনে আসলো এবং সাহায্যকারীরা তার
ভ্যানটিকে ঊপরে ঊঠিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
রফিক বাড়ি গিয়ে সমস্ত কথা শফিককে বললে রফিক আর
শফিক দু'জনেই সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিলো..........
[] আসুন,আমরা যারা ধুমপান করি তারাও এ গল্পটি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি। আজ থেকে ধুমপান করা ছেড়ে দেই।
**ধুমপানে বিষপান-বুঝেও বুঝিনা**
বিষয়: বিবিধ
১২০৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধুমপান শুধু নিজের নয় পরিবার ও পরিবেশের ক্ষতি করে । ধন্যবাদ সুন্দর শিক্ষনীয় গল্পের জন্য ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন