একজন আদর্শ শিক্ষকের করুন পরিণতি :(

লিখেছেন লিখেছেন জিরো ফাইব ৩০ মে, ২০১৪, ০৪:৫৭:১৯ বিকাল

আমরা ভিকারুননিসা নূন.স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধর কথা জানি। যে প্রাইভেট পড়ানোর নামে তার দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছিল। সেই ছাত্রীর সাহসী প্রতিবাদের মুখে লম্পট পরিমল এখন জেলে।

আমরা কুষ্টিয়ার স্কুল শিক্ষক পান্না মাস্টারের কথা জানি।

তার পুরো নাম হেলাল উদ্দিন পান্না। পান্না মাস্টার গণিত প্রাইভেট পড়ানোর নামে প্রায় দেড় শতাধিক স্কুলছাত্রীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে গিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। শুধু শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেই ক্ষান্ত হয়নি এই বর্বর, এগুলো সে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করে পরবর্তীতে বাজারজাত করেছে এবং অনেক ছাত্রীর সাথে ব্ল্যাকমেইল করতেও ব্যবহার করেছে।

অামরা মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল আজিজের কথা জানি।

আব্দুল আজিজ চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকার আবদুল লতিফ হাটের বায়তুল মনছুরকমপ্লেক্স নূরানি ইসলামিক কিন্ডারগার্টেন নামের মাদ্রাসার শিক্ষক। সে তাঁর মাদ্রাসার পাঁচ বছরের ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে।

আমরা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের আলোচিত মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল জলিলের কথা জানি। যে ১১ বছরের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে গর্ভবতী করেছে। পরবর্তীতে ২৫ লাখ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র ছাত্রীর পিতামাতাকে হাত করতে চেয়েছিল। কিন্তু মেয়ের বাবা প্রলোভনে রাজি হন নাই। তার একটাই দাবি মানুষরূপী এই কুলাঙ্গার জলিলের উপযুক্ত শাস্তি।

আমরা রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাংশা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশান্ত কুমার মুখার্জি এবং সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের কথা জানি। প্রশান্ত তার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন। এরপর ওই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি মাঝেমধ্যেই শিশুটিকে ধর্ষণ করতে থাকেন। ঘটনাটি একদিন অপর শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম দেখে ফেলেন। বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সিরাজুলও শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ওই দিনের পর থেকে ওইদুই শিক্ষক পালাক্রমে শিশুটিকে ধর্ষণ করতে থাকেন। এক শিক্ষক ধর্ষণ করতেন এবং অপর শিক্ষক পাহারা দিতেন। ছাত্রীটি ভয়ে বিভৎসতম এই ঘটনাটি কাউকে বলতে পারেনি। অবশেষে স্কুলের দপ্তরীর কাছে ঘটনাটি ধরা পড়লে বিষয়টি জানা যায় এবং প্রশান্ত কুমার পালিয়ে যায়। সিরাজুল ইসলাম এখন জেলে।

এই যে পরিমল জয়ধর, হেলাল উদ্দিন পান্না, আব্দুল আজিজ, আব্দুল জলিল, প্রশান্ত, সিরাজুল এরা অামাদের সমাজেই বাস করে। এরা ভিনগ্রহের কোনো প্রাণী নয়। এদেরকে যতই নরপশু, লম্পট, চরিত্রহীন, শিক্ষকরূপী জানোয়ার বলে গালি দেই না কেন, এরা আমাদের সমাজ থেকেই ধর্ষণের মানসিকতা পেয়েছে। এরা হয়তোবা শিক্ষকজাতির প্রতিনিধিত্ব করে না, এদের এই উপস্থিতি আমাদের সমাজে শিক্ষকতা পেশাকে কলুষিত করে নিঃসন্দেহে।

উপরে যে কয়জন শিক্ষকরূপী লোলপুরুষের কথা বললাম, এর বাইরে এবার একজন আদর্শ শিক্ষকের করুণ পরিণতির কথা বলি।

আদর্শ শিক্ষকের স্বরূপ কেমন হতে পারে জেনে নিবেন নীচের এই ঘটনা থেকে।

গত ১৬ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়া ভয়াবহ এক ফেরি দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০৪ জন মারা গিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি আরো অনেকেই নিখোঁজ যাদের লাশ খুঁজে পাওয়া যায় নি।

এই মৃত্যুতালিকায় বড় অংশ দানওন নামের একটি স্কুলের ছাত্রছাত্রী। যে স্কুলের এতগুলো ছাত্রছাত্রী প্রাণ হারাল, তার উপাধ্যক্ষও গলায় দড়ি বেধে আত্মহত্যা করেছেন দুর্ঘটনার দিন কয়েক পর।

কারণ তাঁরই পরিকল্পনায় এক ট্যুরে যাওয়ার সময় এই বাচ্চাগুলো বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে। এ বেদনার ভার তিনি আর সইতে পারছিলেন না।তাই শেষমেশ আত্মহত্যার আগে নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করে একটা চিরকুটে লিখে গেছেন,

‘স্বর্গে হয়তো আমি আবার ওই শিশুগুলোর শিক্ষক হব, যাদের শরীর খুঁজে এখনো পাওয়া যায় নি।’

বিষয়: বিবিধ

১৩০১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

228408
৩০ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
হতভাগা লিখেছেন : এটাই দঃকোরিয়া আর বাংলাদেশের মধ্যে ডিফারেন্স
228528
৩১ মে ২০১৪ রাত ০১:০০
জিরো ফাইব লিখেছেন : হুম Confused

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File