কোনটা আধুনিকতা? কোনটা অশ্লীলতা?

লিখেছেন লিখেছেন কাওছার জামাল ১৫ এপ্রিল, ২০১৬, ০৯:০৫:৪৪ সকাল

আমাদের পূর্ব পূরুষরা দেখছি রাস্তা ঘাট বাজার হাটে মেয়েদের একা চলাফেরা করতে দিতেন না, প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েকে এক সাথে ঘুরাফিরার সুযোগ তো অনেক দূরের কথা ঠিকমতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প গুজবও করার সুযোগ দিতেন না। তার পরের জেনারেশন কে দেখলাম এই নিয়ম নীতি কিছুটা শিতিল করতে। কিছু কিছু জায়গায় মেয়েরা একা একা যেতে পারবে যেমন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ইউনিভার্সিটি। সেই সাথে ঘুরাঘুরির উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে সহপাঠী বা ক্লাসমেইট এর সাথে টুকটাক হায় হ্যালো গল্প গুজব করতে পারবে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ছেলে বন্ধু বা মেয়ে বন্ধুকে বাসায় দাওয়াত করেও আনতে পারবে। আর বর্তমান জেনারশন তো সবকিছুর লাগাম ছেড়ে দিছে। কোন বাধ্য বাধকতা নাই, নিষেধাজ্ঞা নাই। উল্টো মাটে ঘাটে হাটে অফিসে আদালতে স্কুল কলেজে ছেলে মেয়েরা এক সাথে ঘা ঘেষে উঠাবসা চলাফেরার সুযোগ করে দেওয়ার আন্দোলন করছে। নারী পুরুষের সমান অধিকারের ব্যানারে অবাদে মেলামেশার অবৈধ কর্মকান্ডগুলিকে বৈধতা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

আধুনিকতার নামে মানুষগুলি অশ্লীলতা, নির্লজ্জতার মতো অস্বাভাবিক বিষয়গুলিকে খুবি স্বাভাবিকভাবে দেখছে। যার ধরুন দিন দিন বেহায়াপনার মাত্রা বাড়তেই আছে। প্রকাশ্যে চুম্বন করার মতো আপত্তিকর কর্ম সূচীতে রাষ্ট্র নিরাপত্তা দেয়। ভালোবেসে ভালোবাসার মানুষটাকে নিরিবিলি পরিবেশে কাছে টেনে ছোট খাটো কিছু বেহায়াপনার সুযোগ করি দিতে বন্ধু-বান্ধব সহ পরিবারিক সদস্য দেবর ভাবীরা সাহায্য সহযোগিতা করে। বিনোদনের নামে পার্ক পিকনিক স্পটের ব্যানারে নিশ্চিন্তে অসমাজিক কার্য়কলাপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সমাজ স্থান নির্ধারন করে দিচ্ছে।

আর তারি ফলাফল সরূপ আজকের এই সমাজে ধর্ষন হত্যার মতো গুরত্বর অপরাধগুলির সংখ্যা চক্রহারে বাড়ছে। বিশেষ করে ধর্ষনের মতো জগন্য অপরাধ এখন মাহমারি পর্য়ায়ে। আসলে হাতেগুনা কয়েকটি খবর আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু গড়ে প্রতিদিন শত শত নারী যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে, ধর্ষকের মূখামূখি হচ্ছে। কখনো ভালোবেসে ঘুরে আসার কথা বলে, কখনো চাকরি দেওয়ার কথা বলে, কখনো কখনো নায়িকা গায়িকা মডেল কন্যা বানানোর রূপ কথার গল্প শুনিয়ে কৌশলে নারীদের সর্বস্ব লুটা হচ্ছে। যার শতকার ৯৯ ভাগই নারী সবকিছু মূখ বুজে সহ্য করে, মান সম্মান হারনোর ভয়ে। বিচার চাইতে গেলে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা দ্বিতীয় দফা ধর্ষন করে। আমাদের সামজিক মূল্যবোধ কত নীচে নেমে গেছে আমরা কি তা কখনো চিন্তা করি। নেতা নেত্রী পুরো জাতি যেখানে আজ নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দিন রাত ঘ্যান ঘ্যান করছে সেখানে ঘরে বাইরে রাস্তা ঘাটে ট্রেনে বাসে এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্টানের মতো পবিত্র স্থানেও মেয়েদের সাথে অসভ্য আচরন করছে। আর কোন জায়গাটা বাকি আছে? এর মাত্রা আরো বাড়বে। আইন কানুন নিয়ম নীতি যতই করেন কোন লাভ হবেনা।

এর প্রতিকার এর জন্য ধর্মীয় নিয়মনীতির পাশাপাশি পরিবারিক শিক্ষাটা সবচেয়ে বেশি জরুরী। কিন্তু আমরা তা না করে আজকে রাষ্ট্রকে ধিক্ষার দেই সমাজকে দোষারুপ করি। পোষাক আষাক কে দ্বায়ী করি। আমাদের চিন্তাধারা দোষারুপ এবং সমালোচনার মধ্যে সীমাব্ধ থাকে। এর বাহিরে চিন্তা করতে পারিনা। কথায় আছে যত সমস্যা তত সমাধান। সমাধানের জন্য সর্ব প্রথম জানতে হবে সমস্যার উতপত্তিস্থল। মূলত শুরুটা হয় পরিবার থেকে। আমরা যদি আমাদের পরিবারকে সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক করতে পারি তাহলে আমাদের সমাজও সভ্য হতে বাধ্য। কারন কয়েকটি পরিবার নিয়েই একটি সমাজ গঠিত হয়। আর সমাজের সমষ্টি নিয়েই রাষ্ট্র। অতএব কাম টু দ্যা পয়েন্ট রাষ্ট্রকে শুধরাইবার আগে পরিবারকে শুধরান। আমাদের পরিবারগুলি যে গতিতে আধুনিক হচ্ছে, এই গতি অব্যাহত থাকলে আগামী প্রজন্ম ধর্ষনের মতো জগন্য একটি অপরাধকে প্রেমিকাকে জোর করে উম্মা দেওয়ার মতো ছোটখাটো মামুলি একটা অন্যায় মনে করতে শুরু করবে।

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

365780
১৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৯:৪৩
বিবর্ন সন্ধা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম

এই সব আধুনিকতায় গা ভাসানো মানুষগুলোকে ধর্মের কথা বলতে গেলে, তাদের গায়ে ফুসকা পড়ে যায়, পরলে তারা দলবদ্ধ হয়ে ঝাপিয়ে পরতে চায় Sad
১৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৫৪
303460
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : হ্যা! কবে জানি আফরা আমেরিকার নারীদের উপর যৌন নির্যাতন ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, স্বাধীনতা ইত্যাদি নিয়ে একটা লেখা লিখেছিল। সেই বরাবরই অনেক কমেন্ট ইনকাম করে আবেগী নারী পুরুষ তার লেখা পড়ে আমেরিকান নারীদের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিল। আমি মন্তব্য করলাম, আফরা, আপনি এই নারীদেরকেই যদি বলেন, তোমাদের সমাধান ইসলাম, ইসলামই তোমাদের সন্মান দিয়েছে- তখন দেখবেন মার্কিন বেটিরা বেটাদের সাথে নিয়ে গলায় গলা মিলিয়ে বলবে, ইউ উ!!... টেরোরিস্ট মোজলেম জাস্ট গু টু হেল, লিভ ম্যারিকা।বর্বর ইসলাম চাইনা, যেভাবে আছি তাই ভাল। আসলে বাংলাদেশেও ঘটনা ঠিকই তাই। এরা যতই অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করুক না কেন কোন সমস্যা নেই। আবেগ নিয়ে দুনিয়া উজাড় করে ফেলবে অথচ ইসলামের নাম শুনলে ঠিকই উল্ট বিরোধীতা করে নষ্ট পুরুষদের সাথেই গলা মিলাবে। আজব সব মানুষ।
১৫ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:০০
303461
বিবর্ন সন্ধা লিখেছেন : মাঝে মাঝে
ওদের আক্ষেপ দেখে কস্ট লাগে
কিন্তু প্রতিকারে রাস্তা দেখাতে গেলে ই
সাপের মত ফুস করে প্রতিবাদে মেতে উঠে।
তখন মনে হয়, যাদের মরা, তারা ই মাটি দিক,
আমার কি
365789
১৫ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:০০
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
365811
১৫ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:২১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমরা একসময় পর্দার অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করেছি আর এখন সেটাকে পুরাপুরি ফেলে দিচ্ছি। ১৯৯১ সালে ঘুর্ণিঝড় এর সময় পর্দার নামে অনেক মহিলাকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনার আমি প্রত্যক্ষদর্শি। সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি আমাদের এখন শেষ করছে।
365812
১৫ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:২১
শেখের পোলা লিখেছেন : সমাজের আগে যেমন পরিবার তেমনই পরিবারের আগে ব্যক্তি৷ আমিযদি নিজে সঠিক জায়গায় না থাকি তবে পরিবারের অন্যরা আমায় মানবে না৷ তাই নিজেকে আগে শুধরাতে হবে৷ আর তা হল পূর্ণভাবে ইসলামকে নিজের মধ্যে আনতে হবে৷ যারা তা পেরেছে তারা অন্যকে আটকাতে পারে৷ ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File