"দাঁত ভাঙ্গা জবাব"

লিখেছেন লিখেছেন কাওছার জামাল ২৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:৫৩:৩৭ দুপুর

গতকাল এক জ্ঞানপাপী ষ্ট্যাটাস দিছে: “মসজিদের টাইলস ইহুদীদের তৈরী, মসজিদের ভিতরের ঘড়ি, ফ্যান, লাইট ইহুদী নাসরাদের তৈরী, তাছাড়া রড, সিমেন্ট সহ আরো অনেক কিছু তৈরী হয় ইহুদী/ নাস্তিকদের তৈরী মেশিন দিয়ে। এমনকি টুপি ও এখন আমদানী করা হয় চায়না থেকে, চায়নীজরা যে শতকরা ৯৫ ভাগই নাস্তিক তাও লিখেছেন। মোটামোটি বিরাট রচনা টাইপ ষ্ট্যাটাস পুরোটা লিখতে গেলে আমি ক্লান্ত হয়ে যাবো আপনারাও পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে যাবেন। সংক্ষেপে বলছি সেই জ্ঞানপাপীর মূল কথা হলো দৈন্দিন জীবনে আমরা যা ব্যাবহার করি তার বেশির ভাগই ইহুদী-নাসরা বা নাস্তিকদের তৈরী। সব শেষে তিনি রেফারেন্স সহ উল্লেখ করেছেন ছোট্র একটি মাইক্রোফোনের কথা তাও নাস্তিকদের তৈরী এবং তার সর্বশেষ বক্তব্য হইলো নাস্তিকদের তৈরী মাইক্রোফন হাতে নিয়ে মুসলিমরা যখন নাস্তিকদের বিরুদ্ধে চিল্লাচিল্লি করে তখন মুসলিমদের কী লজ্জা করেনা? লজ্জা করেনা লেখার সাথে ঠোট ভেংচি মুলক একটি চিহ্ন ও দিয়েছিলেন সম্ভবত।

আমি খুব মনযোগ দিয়ে পড়লাম, এবং ও জ্ঞানপাপীর ওয়ালে গিয়ে কমেন্টস করতে গিয়ে দেখলাম আমার জন্য কমেন্টস অপশন উম্মুক্ত না। তাই বেক বাটনে চাপ দিয়ে ফিরে এলাম যিনি পোষ্টটি শেয়ার করেছেন। ছোট্র করে একটা বাংলিস ভাষায় কমেন্টস দিলাম…”গাছ-পালা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত সবি আল্লাহ’র সৃষ্টি। ইহুদী-নাসরা/ নাস্তিকও আল্লাহ’র সৃষ্টি আর এই সব কিছুই আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টি করেছেন তাঁর মুমিন বান্দাদের প্রয়োজনের জন্য। যেমন ইহুদী-নাসরার তৈরী কমেটে বসে আমরা আরাম করে টয়লেট-পশ্রাব করি। তাদের তৈরী ডাস্টবিনেও থু থু ফেলি।

এতটুকু লিখে আমি লগ আউট হয়ে পড়ি সময় সল্পতার কারণে। কিন্তু লগ আউট হওয়ার পরে অনুভব করলাম এই অল্প কমেন্টসে মনের তৃপ্তি মিটেনি। প্রত্যেকটি কথার জবাব না দিতে পারলে ঘুম আসবেনা তাই চিন্তা করতে লাগলাম কিভাবে প্রতিটি কথার জবাব দেওয়া যায়। মনে মনে ”ইয়া হাফিজু” ”ইয়া হাফিজু” পড়তে লাগলাম কারণ হাদিসে আছে আল্লাহ’র এই নামটি পড়লে জ্ঞান বাড়ে। তো পড়তে পড়তে পুনরায় লগ ইন করলাম। Facebook লগ ইন করতে গিয়ে দেখলাম Google কয় Recharge Your Bangla Lion Account মানে টাকা চায়। Google/ Facebook ও কিন্তু ইহুদীদের তৈরী Facebook এর নীচে দিয়ে দেখবেন লেখা আছে Its Free & It will be always free. কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা ফেইসবুক কখনও ফ্রী হইউজ করতে পারিনা। Facebook ইউজ করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই ইন্টারনেট সংযোগের জন্য টাকা ব্যায় করতে হয়। সুতুরাং কমেন্টসে জবাব দেওয়া আর হলো না।

তাই ঐই জ্ঞানপাপী ভাইয়ের উদ্দ্যেশে বলছি হ্যা ভাই আমরা ইহুদী-নাসরার তৈরী সব কিছু ব্যাবহার করি। আর তাদের তৈরী জিনিস দিয়ে আসলে তাদের বিরুদ্ধে বলিনা বরং তাদের কে বোঝানোর চেষ্টা করি। এর জন্য আমরা মুসলিমরা মোটেও লজ্জা বোধ করি না। কারণ তাদের প্রতিটি পন্যের বিনিময়ে আমরা তাদের কে টাকা পয়সা বা সম্পদ দিয়ে থাকি। সুতুরাং লজ্জাবোধের প্রশ্নই আসে না। বরং আমরা যদি তাদের পন্য না কিনি তাহলে তাদের বিবি বাচ্চারা না খেয়ে মরবে। মাইক্রোফন, ঘড়ি, রড, সিমেন্ট, গোলা-বারুত খেয়ে তো আর তারা বাচঁতে পারবে না।

আমি বলি কী বরং তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। কারণ নাস্তিকরা তাদের সৃষ্টি নিয়া এতো চেচাঁমেচি করে যে তাদের কে সৃষ্টি কে করছে সেই জ্ঞানটুকু তাদের নেই। তাছাড়া ইহুদী-নাসরা/ নাস্তিকরা আল্লাহ’র সুষ্টি ফল-মূল, মাছ-মাংস, কুত্তা-বিলাই সাপ-বিচ্ছু সহ হালাল-হারাম সব কিছুই খায় অথচ এর বিনিময়ে আল্লাহ কে কিছুই দেয় না এমন কি আল্লাহ’র শোকরিয়া আদায়টুকু কিভাবে করতে হয় জানে না। এখন আপনারাই বলুন আসলে কার লজ্জা পাওয়া উচিত? কথায় আছে ”চুরের মার বড় গলা” তারা হইলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় চোর। এর জন্যই এভাবে বড় গলায় কথা বলে।

কয়েকদিন আগে Discovery চ্যানেলে দেখলাম অষ্ট্রেলিয়ার কিছু ছেলে মেয়েরা পানির অভাবে কমেড থেকে পানি পান করছে এবং ভবিষ্যতে রেগুলার পান করার জন্য কমেডের পানি নিয়া গবেষনাও করছে। আল্লাহ’র লাখ লাখ শুকরিয়া আমরা এখনও তাঁর দেওয়া পানি খেয়ে বেঁচে আছি এবং ঠিকমত পশ্রাব করতে পারছি। এবং সেই পশ্রাব ইহুদী-নাসরা/ নাস্তিকরা পান করছে অথচ তার বিনিময়ে আমরা কোন কিছু দাবি করছি না। এখন আপনারা বলুন আসলে আমাদের লজ্জা পাওয়া উচিত না তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত? তাছাড়া তারা, আমরা যে মল ত্যাগ করি তা দিয়েও বিদ্যুৎ গ্যাস আবিস্কার করছে অথচ তার বিনিময়ে আমরা তাদের কাছ থেকে কিছুই আশা করি না বরং উল্টো টাকা দিয়ে তাদের আবিস্কৃত গ্যাস-বিদ্যুৎ ক্রয় করছি। এই রকম হাজারো উদাহরন দিতে পারি। ষ্ট্যেটাসের সৌন্দর্য়্য বজায় রাখতে গিয়ে আর দিতে চাই না। এম্নিতে রচনা হয়ে গেছে।

অন্যদিকে আমরা মুসলিমরা যেমন অমুসলিম, ইহুদী-নাসরা ও নাস্তিকদের পন্য ব্যাবহার করার আগে তাদের পন্যের দাম পরিশোধ করি। ঠিক তেমনি আল্লাহ’র সৃষ্টি থেকে তাঁর দেওয়া বিধান অনুযায়ী হারাম কে বর্জন করে হালাল কে ভোগ গ্রহন করার আগে পরে যথা সাধ্য মতো সৃষ্টিকর্তার শোকরিয়া আদায় করি, যেমন: নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, হজ্ব করি, যাকাত দেই। কারণ সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টির বিনিময় পরিশোধ করার ক্ষমতা কাউকেই দেওয়া হয়নি। তারপরও আমরা আল্লাহ তা’আলা কে আমাদের সাধ্যমত উত্তম ঋন হিসেবে ”করদান হাছানা” প্রদান করি।

সবশেষে একটি কথা বলি- জ্ঞানীরা বলেছেন ”অল্প বিদ্যা ভয়ংকর” অল্প বিদ্যা আপনাকে শুধূ আহাম্মকই বানাবে না ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে। সুতুরাং সময় থাকতে সাবধান হউন সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন। আগে শিখুন এবং পরে লিখুন কারণ শিক্ষার কোন শেষ নাই। এবং সব সময় ভাবিয়া ষ্ট্যেটাস দিয়েন ষ্ট্যেটাস দিয়ে ভাবিয়েন না। ঠিক আছে?

ধন্যবাদ সবাইকে।

বিষয়: বিবিধ

২৬২২ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

214842
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:১৯
আল সাঈদ লিখেছেন : ভাই কুকুরদের অংক শিখানোর বৃথা চেষ্টা করবেন না।
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৬
163146
কাওছার জামাল লিখেছেন : তা ঠিক তবে মুগুর দিয়ে পিটাইতে আপত্তি কি?
214852
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৩২
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : উত্তম! দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন!
কোথাও পড়েছিলাম ছোট বেলায়; মহান আল্লাহ বেধর্মীদের দ্বারা মুসলমানের খেদমত করাবেন! যেমনঃ- মুসলমানদের চুল কাঁটার নাপিত হলো হিন্দু! মিষ্টি বানায় হিন্দু খায় মুসলমানেরা! ধোপা (যারা কাপড় ধোলাই করে) হিন্দু মুসলমানদের এলাকায় দোকান দিয়ে মুসলমানদের কাপড় ধৌত করে! খ্রীষ্টানেরা টাইলস বানায়, হাই কমোড বানায় পায়খানা করে মুসলমানেরা! কিন্তু আফছূছের বিষয় হলো আজকে মুসলমানেরা তাদের ঈমান আক্বিদা থেকে সরে পড়ছে বিধায় বেধর্মীরা সুযোগের অসৎ ব্যবহার করছে! আল্লাহ আমাদের অবস্থানকে মজবুত করুন আর বেধর্মীদের গালে জুতা মারুন। আমিন।
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৭
163149
কাওছার জামাল লিখেছেন : একদম ঠিক বলেছেন আপনি।
214855
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৬
মুজিব সেনা লিখেছেন : ভাই এত কষ্ট করে এত বড় জবাব না দিলে হত না? আমি বলি কি তাদের এটা বললেই তো তারা চুপ হয়ে যেত যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান গ্রন্থ হল আল-কোরআন,যাতে এই পৃথিবীর সব সমস্যার সমাধান রয়েছে।আজকে ইহুদী-নাসারা যে চান্দে ভ্রমণ করে,মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণা করে,এই পৃথিবীর ভূমণ্ডল নিয়ে গবেষণা করে,চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করে কোত্থেকে আসলো এগুল?কোথা থেকে পেল এগুলো? উত্তর একটাই-আল-কোরআন।
214896
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৪
আহ জীবন লিখেছেন : ওরা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে। আমরা জ্বললে আনন্দ পায়।
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৯
163152
কাওছার জামাল লিখেছেন : জ্বলজ্বলির বিষয় না রে ভাই।
214919
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:১১
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন!
214931
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪০
আমি মুসাফির লিখেছেন : নাস্তিকদের তো বোধ শক্তি হাটুর নীচে কারণ যে আল্লাহ তাদের সৃষ্টি করেছে তাকেই তারা অস্বীকার করে। এত বড় বেয়াকুপ আর কেহ আছে ।
214942
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৯
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
214948
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৪
কাওছার জামাল লিখেছেন : ধন্যবাদ
215015
২৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৩৯
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : তো, হেরা গুহার ইন্দুরের গর্ত থেকে উঠে এসে আপনার আল্লা নিজেনিজেই নিধীরাম সর্দার বনে গেলন? সাভাবিক কারনেই এখন ইহুদী-নাসারা-নাস্তিকের কিল গুতা লানত ছাড়া মুমিনের কপালে আর কিবা থাকতে পারে। এরপরও ঐ অক্ষম আল্লার বড়াই?
২৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:০৯
163278
কাওছার জামাল লিখেছেন : মূর্খের সাথে তর্ক করা বোকামি ছাড়া আর কিছুনা।
১০
215128
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:৫৫
Mujahid Billah লিখেছেন : কোরআন নিয়ে বাঁচতে চাই, কোরআন নিয়ে মরতে চাই। এই
কোরআন থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে চায় কাফের
বেইমান মুশরেকেরা। ও আমার ভাই-বোনেরা,
যারা আমাদেরকে কোরআন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়
আমরা কি তাদের সাথে জেহাদের জন্য প্রস্তুত আছি ?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File