শান্তির ধর্ম, জেহাদের মহিমা
লিখেছেন লিখেছেন পললব ০১ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:২৩:১৪ রাত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
উপরের শিরোনামটি আমার দেওয়া না। এটি মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ সম্পাদীত 'সংলাপ সমগ্র' বই থেকে নেয়া।ইসমাল ধর্ম সম্পর্কে আমার তেমন একটা জ্ঞান নেই। তাই এই ব্লগে ইসলামিক স্কলারদের জ্ঞাতার্থে এখানে হুবহ তুলে ধরা হলো সেই প্রশ্নোত্তর আলোচনা তা কতটুকু সঠিক ব্যাখ্যা তা জানার জন্য।
আমীনঃ হুজুর, যারা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী তাদের ইসলাম সম্পর্কে এমন একটা ধারণা বহুল প্রচলিত যে ইসলাম হচ্ছে তলোয়ারের ধর্ম-মুসলমানরা কথায় কথায় জেহাদের কথা বলে, সুতরাং এ ধর্মে শান্তির চেয়ে যুদ্ধই প্রাধান্য পেয়েছে।
গুরুঃ, ইসলামে জেহাদের প্রশ্ন যখনই উঠেছে, সেটা নিছক আত্মরক্ষার খাতিরে, অস্তিত্বের প্রশ্নে। আজকে বিভিন্ন দেশে মুসলমানেরা যে জেহাদের কথা বলে সেটা আদৌ জেহাদ কিনা সেটা ভেবে দেখার প্রশ্ন আছে। অনেক ক্ষেত্রে মুসলমান মুসলমানের সংগে যুদ্ধ করলেও সেটাকে জেহাদ আখ্যায়িত করা হয়।
আল কোরআনে জেহাদ, জেদাল এবং কেতালের কথা বলা হয়েছে। শব্দগুলো সমার্থক-তবে কিতালের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে কতল করা। ভালো তফসির না পড়লে এদের অর্থ অনুধাবন করা কঠিন।তখন শুধু আক্ষরিক অর্থটাই বড় হয়ে ওঠে। আমাদের আলেমদের মধ্যে অনেকেই অজ্ঞানবশত আক্ষরিক অর্থটাকেই প্রধান্য দেন, ফলে বিধর্মীদের যদি ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হয়ে থাকে তাহলে তাদের দোষ দেওয়া যায় না।
সুরা আনফালের ৬৫ নং আয়াতের শুরুতে বলা হয়েছে-ইয়া আইয়োহান্নাবিয়্যু হাররিদিল মু'মিনিনা আ'লাল কিতালি অর্থাৎ হে নবী মুমিনদের সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করুন। আক্ষরিক অর্থে বলতে গেলে বলতে হয়-মুমিনদের বিধর্মীদের কত্ল করতে উদ্ববুদ্ধ করুন।
এ আয়াত যখন নাজিল হয় তখন ধর্মযুদ্ধ একটা বাস্তব সত্য। কিন্তু সেটাই যদি একমাত্র অর্থ হয় তাহলে কোরআনকে সর্বকালের সর্জনীন সত্য বলবো কি করে? সুতরাং ঐ আক্ষরিক অর্থের অন্য কোন অর্থ ছিল কিনা সেটাও দেখতে হবে।তাফসিরকারগণ ঐ কিতালকে জিহাদ বলেছেন কিন্তু সে জেহাদ শুধু বিধর্মীদের বিরুদ্ধে নয়। মনে রাখতে হবে কথাটা বলা হচ্ছে মুমিনদের লক্ষ্য করে-মুসলমানদের লক্ষ্য করে নয়। এখানে নবীকে বলা হচ্ছে মুমিনদের নিজের নফসের সংগে যুদ্ধ করতে। একজন মুমিনের জন্য এ যুদ্ধের কোন শেষ নেই। প্রকৃত অর্থে বলা হচ্ছে মুমিন যেন তার অন্তরে লুক্কায়িত শত্রুর মোকাবেলা করে। এ অতি কঠিন যুদ্ধ-আর এ যুদ্ধ চিরকালের। তফসিরে বর্ণিত এ দিকটির দিকে লক্ষ্য করলেই আয়াতটির সর্বজনীন আবেদন মূর্ত হয়ে ওঠে। তখন ঐ কতল করার মত স্থুল অর্থটাই একমাত্র সত্য হয়ে ওঠে না।
দেখ আলেম এবং আরেফ দুটো পৃথক শব্দ। আলেম হলেই লোক আরেফ হয়া না। আর আরেফ না হলে আলেম কেবল সত্যের খোলসটাকেই দেখে, সত্যকে দেখতে পায় না। (চলবে---)।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন