সোনাগাছি থেকে ম্যানইউ- এক বিস্ময়কর সফর
লিখেছেন লিখেছেন নাউন৯৯ ২১ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:৩৯:৩৫ সকাল
প্রতিভা থাকলেই হয় না। সঙ্গে থাকতে হবে স্বপ্ন দেখার সাহস। বংশ পরিচয় কিংবা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি কোনও ব্যপার নয়। সাফল্যের এভারেস্টে উত্তরণে আপনার সামনে তাহলে কোনও বাধাই টিকবে না।
সম্প্রতি এমনই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখা গেল কলকাতায়। সেখানকার এক উঠতি প্রতিভাবান টিন এজ ফুটবলার বিশ্বখ্যাত ফুটবল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ট্রেনিঙের ডাক পেয়েছেন। ফুটবলের শহর কলকাতায় এটা হয়ত বড় খবর নয়, তবে রাজীবের বংশ পরিচয়ে খবরটা রসাল হয়ে গেল। প্রতিভাবান এই ফুটবলার হল বিশ্বের সর্ববৃহৎ যৌন পল্লী সোনাগাছির এক যৌন কর্মীর ছেলে। কলকাতার রাস্তায় খালি পায়ে খেলে জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে রাজীবের। এই সপ্তাহ শেষে ওল্ড ট্রাফোর্ডের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান ১১ ভারতীয় ফুটবলারের তালিকায় ছিল রাজীবের নাম। আগামী ১৫ দিন ইউনাইটেডের বিভিন্ন কোঁচের সান্নিধ্যে নিজেদের ঝালাই করে নেবেন রাজীবরা। তার মা সূচি (ছদ্মনাম) ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নাম শোনেন নি কখনও। তাকে এই ক্লাবের ঐতিহ্য এবং গুরুত্ব বোঝাতে কত কাঠ খড়ই না পোড়াতে হয়েছে রাজীবকে।
ইংল্যান্ডে যাবেন, কিন্তু ইংরেজিটা যে একেবারেই বলতে পারেন না রাজীব। অবশ্য এই জন্য তিনি একেবারেই বিচলিত নন। উল্টো বলেন, স্প্যানিশ ফুটবলাররাও তো ইংরেজি বলতে পারেন না। নাগপুরে এই বছর অনুষ্ঠিত জাতীয় বস্তি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিল রাজীব। তার কথায়, "জাতীয় স্কুল চ্যাম্পিয়নশিপের পর গোয়া ক্যাম্পে ৩০ সদস্যের সঙ্গে ছিলাম। কলকাতা থেকে ট্রেনে করে যাওয়ার জন্য আমার পৌছুতে দেরি হয়। বাকিরা সবাই এরোপ্লেনে করে গোয়া গিয়েছিল। আমাদের তো এরকম পয়সা নেই। অবশ্য ধনী পরিবারের ছেলেগুলোর সঙ্গে আমার শীঘ্রই বন্ধুত্ব হয়ে যায়। মুম্বায়ের একটা ছেলে খুবই ভাল ইংলিশ বলে। সেই আমার দোভাষীর ভূমিকা নিয়েছিল। ইংল্যান্ডেও আমাকে কোঁচের কথা বুঝতে সাহায্য করবে বলেছে। তাছাড়া স্প্যানিশরাও তো ইংরেজি পারে না।"কলকাতা থেকে রাজীব ছাড়াও ম্যানচেস্টারে ডাক পেয়েছেন অর্ক দে। যার মা বাজারে আলু বিক্রি করেন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন