ফিরেছেন অনিরুদ্ধ, আমান আরমান ফিরবে কবে?
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ১৮ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:৪৪:০২ সন্ধ্যা
প্রায় আড়াই মাস নিখোঁজ থাকার পর ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধকুমার রায় বাসায় ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি গুলশানের বাসায় ফিরে আসেন। অনিরুদ্ধের ভাগ্নে কল্লোল হাজরা শনিবার বিকেলে জানান, একটি গাড়িতে করে তাকে বাসার সামনে নামিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে এতদিন তিনি কোথায় ছিলেন, কীভাবে ছিলেন- এসব বিষয়ে গুম থেকে ফিরে আসা অন্যান্যদের মতই অনিরুদ্ধ কোনো কথা বলেননি।
গত ২৭ আগস্ট বিকালে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সেকশন ইউনিয়ন ব্যাংকের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে অনিরুদ্ধকে তুলে নেয়া হয় বলে ওই দিন তার গাড়িচালক জানান। ওই সময় গাড়িচালক বলেছিলেন, বাংলামোটরে ব্যবসায়িক পার্টনারদের সঙ্গে মিটিংয়ে যোগ দিতে ওই দিন বিকালে অনিরুদ্ধ রায় নিজের গাড়িতে উঠছিলেন। এ সময় দুজন লোক এসে তার সঙ্গে কথা বলেন। তারপর পাশে ডেকে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
অনিরুদ্ধের এই ফিরে আসা একদিকে যেমন আনন্দের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে নিজ পরিবার ও বন্ধু মহলে। ঠিক সে মূহুর্তেই কষ্টের পাথর চাপিয়ে দিচ্ছে গুম হয়ে ফিরে না আসা ব্যক্তিদের পরিবার ও বন্ধুমহলে।
গত ১০ আগস্ট ২০১৬ তারিখ রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাদা পোশাকধারীরা রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএসের বাসা থেকে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছোট ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আরমানকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পারিবারিক সূত্র জানায়, রাত সোয়া ৯টার দিকে সাদা পোশাকের ছয়-সাতজনের একদল লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ব্যারিস্টার আরমানের মিরপুরের ডিওএইচএসের বাসায় যায়। এ সময় আরমান দরজা খুললে তাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কি না জানতে চাইলেও তারা কোনো জবাব দেয়নি।
এরপর গত ২৩ আগস্ট ২০১৬ তারিখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম এর পুত্র আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে। জনাব আযমীর বাড়ির কেয়ারটেকারের ভাষ্য মতে, প্রায় ২০টি মাইক্রোবাসে ৩০ জনের মত গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়। চলে যাওয়ার সময় গোয়েন্দা পুলিশ তার ভবনের আশেপাশে কোথায় কোথায় সিসি ক্যামরা আছে খুঁজতে থাকে। আযমী সাহেবের বাড়িতে ক্যামেরা ছিল না। কিন্তু মহল্লার নিরাপত্তার ক্যামেরা ছিল গলিতে। যাওয়ার সময় সেগুলো তারা খুলে নিয়ে যায়।
অনিরুদ্ধ রায়কে আজ পাওয়া গেল। আশা করা যায় কয়েকদিনের নিখোঁজ সাংবাদিক উৎপল দাসকেও পাওয়া যাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে এ আশা করাই যায়। কিন্তু নামের শেষে দাস বা রায় না থাকা আরমান, আমান, আমিনুর রহমানরা কবে ফিরবে? কবে ফিরবে স্বৈরাচারের কোপানলে নিখোঁজ হওয়া মেধাবী ছাত্রনেতা ওয়ালীউল্লাহ, আল মুকাদ্দাস, হাফেজ জাকির হোসাইনরা? ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, শ্রমিক নেতা আমিনুলের সন্ধানই বা কোথায় মিলবে? নাকি তাদের ফিরে পেতে আমাদের সবাইকে নামের শেষে রায়, দাশ, চট্টোপাধ্যায়, ভট্টাচার্য্য লাগাতে হবে?
বিষয়: রাজনীতি
৯৮০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন