সুজলা সুফলা বাংলাদেশ কি ভূ-স্বর্গ কাশ্মীরের পথে?
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:২১:৪৪ রাত
হঠাৎ করেই গুম পরবর্তী খুনের ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষত বিগত ৪০ মাসে (৩ বছর চার মাস) ২৪ জনের লাশ পাওয়া গেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন। এর মধ্যে বিএনপির ৩ জন, জামায়াত-শিবিরের ৬ জন ও যশোর আওয়ামী লীগের এক কর্মীও রয়েছে। আজ অপহরণের পর জনতার প্রতিরোধের মুখে ঝিনাইদহ শহরের রাস্তায় ফেলে যাওয়া হয়েছে মাহবুব হাসান লিমন (১৮) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে। আর তাই প্রশ্ন উঠছে সুজলা সুফলা বাংলাদেশ কি ভূ-স্বর্গ কাশ্মীর হওয়ার পথে এগোচ্ছে? আমার এই লেখায় বিশ্লেষণের চেষ্টা করব কাশ্মীর দখল করতে ভারত কি কি করেছিল? আপনারা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবেন বর্তমান বাংলাদেশের সাথে।
১৯২৫ সালে হরি সিং নামক এক হিন্দু কাশ্মিরের সিংহাসনে বসে। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের সময়েও মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মির সেই হিন্দু রাজার শাসনে ছিলো। সে সময় কাশ্মিরের প্রায় ৮০% মানুষ ছিল মুসলমান। দেশ বিভাগের সময় সেও কাশ্মিরের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। তা হতেও পারতো। কিন্তু হঠাৎই ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর কিছু পার্বত্য দস্যুদের আক্রমণের শিকার হয় দুর্ভাগা কাশ্মিরের অধিবাসীরা। সে সময় দস্যুদেরর হাত থেকে বাঁচতে ও ভারতীয় সেনাদের সাহায্য লাভের আশায় ভারতের সঙ্গে যোগ দেয় হরি সিং, অথচ কাশ্মিরের প্রায় ৮০% মুসলমান পাকিস্তানের সাথেই যোগ দেওয়ার পক্ষে ছিল। হরি সিং এর সেই ভারতের সাথে হাত মিলানোর অঘটন আজো কাশ্মিরিদের গলার কাঁটা হয়ে আছে। যে কাঁটা দূর করতে ব্যর্থ ভারতের মতো বিশ্বের বৃহৎ ও উদার(!)গণতন্ত্র।
তবে কাশ্মিরীদের বর্তমান গোলামী দশার জন্য শুধু ভারতই দায়ী নয়, আরও কিছু লোক দায়ী। তারা কারা? মুসলমান নামধারি সেক্যুলার ও ইসলামের প্রতি প্রচন্ড বিদ্বেষী জাতীয়তাবাদী মুনাফিক নেতারাই এর নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছে পাচাটা কুকুরের মত। বাংলা, পাঞ্জাব, সিন্ধু, সীমান্ত প্রদেশ ও বেলুচিস্তানের মুসলমানদের ন্যায় কাশ্মিরীদেরও স্বাধীন হওয়ার মোক্ষম সুযোগ এসেছিল। ভারতবর্ষের বুকে মুসলমানদের জন্য স্বাধীন দেশ রূপে যারা পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখতেন তারা কাশ্মির নিয়ে যতটা ভাবতেন কাশ্মিরীদের নিজেদের নেতারাও ততটা ভাবেনি।
১৯৪৭ সালে কাশ্মিরের স্বাধীনতার একমাত্র যে ট্রেনটি নতুন স্বপ্নের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে সেটি ধরতে তারা দারুন ভাবে ব্যর্থ হয়। এর জন্য দায়ী তাদের ইসলামের প্রতি বিদ্বেষী সেক্যুলার নেতারা। এ নেতাদেরই একজন হলেন শেখ আব্দুল্লাহ। কাশ্মিরের অমুসলিম ডোগরা রাজার বিরুদ্ধে তুমুল গণ আন্দোলনের সূত্রাপাত হয় ১৯৩১ সালে এবং সেটি জম্মুতে রাজার সৈন্যদের দ্বারা পবিত্র কুরআনের অবমাননা হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তখন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিল মুসলিম কনফারেন্স এবং তার নেতা ছিলেন শেখ আব্দুল্লাহ। তিনি ছিলেন চিন্তা-চেতনায় সেক্যুলার। পাকিস্তানের স্বপ্ন তার ভাল লাগেনি। অথচ পাকিস্তান গড়ার কাজ চলছিল তার ঘরের পাশে। তার ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ছিল কংগ্রেস নেতা জওহর লাল নেহেরুর সাথে। নেহেরুর ন্যায় তিনিও মুসলিম লীগের দ্বি-জাতি তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন না। বিশ্বাসী ছিলেন ভারতীয় এক জাতি তত্ত্বে। ফলে মুসলিম লীগের সাথে সম্পর্ক না গড়ে তিনি সম্পর্ক গড়েন কংগ্রেসের সাথে। তার কাছে যেটি অধিক গুরুত্ব পায় সেটি কাশ্মিরের মুসলমানদের ঐক্য নয়, বরং সেটি কাশ্মিরের হিন্দু পন্ডিতদের সাথে একাত্ব হওয়া। ফলে দুই টুকরায় বিভক্ত হয় কাশ্মিরী মুসলমানেরা। ১৯৩৯ সালের ১১শে জুনে শেখ আব্দুল্লাহ মুসলিম কনফারেন্সের নাম পাল্টিয়ে রাখেন ন্যাশনাল কনফারেন্স। এভাবে একতার গুরুত্ব যে সময়টিতে সর্বাধিক ছিল তখন অনৈক্যই তীব্রতর হয়। মুসলিম কনফারেন্স দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। ন্যাশনাল কনফারেন্সের বিপরীতে মুসলিম কনফারেন্সের নেতৃত্ব দেন চৌধুরি গোলাম আব্বাস এবং মির ওয়াইজ ইউসুফ শাহ। মুসলিম কনফারেন্স পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার পক্ষে জোর দাবী জানায়।
১৯৪৭ সালে হিন্দু রাজা হরি শিংয়ের সাথে শেখ আব্দুল্লাহ কাশ্মির ভূক্তির পক্ষে সিদ্ধান্ত নেন। মুসলিম স্বার্থের সাথে এরূপ বিশ্বাসঘাতকতার বিণিময়ে শেখ আব্দুল্লাহ কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী হন। এবং কারারুদ্ধ করা হয় পাকিস্তানপন্থি নেতা চৌধুরি গোলাম আব্বাসকে। কিন্তু বিশ্বাসঘাতক নিছক বিশ্বাসঘাতকই, তাদের গুরুত্ব বেশীকাল টিকে থাকে না। এমনকি যাদের কাছে নিজেদের বিক্রি করে তাদের কাছেও না। নেহেরুও সাথে শেখ আব্দুল্লাহর সম্পর্কে ফাটল ধরতে থাকে। ১৯৫৩ সালে তার মনে কাশ্মিরকে স্বাধীন দেশ রূপে দেখার স্বপ্ন জাগে। কিন্তু কুমিরের পেটে একবার ঢুকলে কি সেখান থেকে বেড়িয়ে আসা যায়? ভারত সরকার তাকে এ স্বপ্ন দেখার শাস্তি স্বরূপ ১৯৫৩ সালের ৯ই আগষ্ট কারারুদ্ধ করে। শেখ আব্দুল্লাহ যখন জেলে তখন ভারতের শাসনতন্ত্রে কাশ্মিরের যে আলাদা মর্যাদা ছিল সেটিও বিনষ্ট করা হয়। পাকিস্তান তখনও জাতিসংঘে কাশ্মির ইস্যু নিয়ে মাঝে মধ্যে উত্তপ্ত আলোচনার সূত্রপাত করতো। ১৯৬৭ সালে শুরু হয় গোপন স্বাধীনতা সংগ্রাম। নেতৃত্ব দিচিছল আল ফাতাহ নামে একটি সংগঠন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের বছরে ভারত সরকার এ গোপন আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়। কারণ তখন ভারতের পালে প্রচন্ড বাতাস। পকিস্তানকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেওয়ার সুযোগ ভারত তখন খুব ভাল ভাবেই কাজে লাগায়। আর তার কিছুটা ইফেক্ট কাশ্মীরেও পড়ে। অবশেষে ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধি সরকার শেখ আব্দুল্লাহর সাথে চুক্তি করে। এবং আবার তাকে কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী করে। শেখ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর একই চেতনার অনুসারি পুত্র ডাঃ ফারুক আব্দুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী হন। তবে এখন এ পরিবারটি রাজনীতির মৃত ঘোড়া।
এরপরের ইতিহাস আপনাদের অনেকেরই জানা। বছরের পর বছর যুগের পর যুগ ধরে কাশ্মিরীদের চোখ থেকে ঝরতে থাকা পানি আর শুকায়নি। যদিও ভারত নিজেদের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করে। কিন্তু একথা বলে না, তারাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণবাদী ও দখলদার দেশ। তার নমুনা কাশ্মির। দুনিয়ার আর কোথাও মাথাপিছু হারে এত অধিক সংখ্যক দখলদার সৈন্য নেই যা রয়েছে কাশ্মিরে। কাশ্মিরের জনসংখ্যা মাত্র এক কোটি এবং আয়তন ৮৫, ৮৬৬ বর্গমাইল। অধিকৃত সে কাশ্মিরে ভারতীয় দখলদার বাহিনীর সেনা সংখ্যা ৫ লাখ। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ১০০০ কাশ্মিরীর জন্য রয়েছে ২০জন ভারতীয় সৈন্য। প্রতিটি কাশ্মিরী পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি গড়ে ৫ জন ধরা হয় তবে অর্থ দাঁড়ায়, যে গ্রামে ২০০ ঘর মানুষের বাস সেখানে অবস্থান নিয়েছে ২০ জন ভারতীয় সৈন্য।
পাঠক হয়তো ভাবছেন যে, একটি দেশে এভাবে দখলদারিত্ব চালানোয় জাতিসংঘের ভূমিকা কি ছিল? জাতিসংঘ বসনিয়ায় মুসলমানদের জন্য যে ভূমিকা পালন করেছে সেই একই ভূমিকা পালন করছে কাশ্মীরের বেলায়ও। বাংলাদেশের বেলায়ও যে একই আচরণ করবে তা বর্তমান অবস্থাদৃষ্টে সহজেই অনুমেয়। সে আলোচনায় আরেকদিন আসার চেষ্টা করবো।
কাশ্মীরকে দখলে নিতে অপহরণ আর গুম কে প্রধান অস্ত্র হিসেবে বেছে নেয় ভারত। শুধুমাত্র ভারতবিরোধীতার কারণেই হাজার হাজার মুসলিম নেতৃত্বকে বিভিন্ন উপায়ে হত্যা করা হয়। অসংখ্য মানুষকে গুম করা হয়। চিরদিনের জন্য কাশ্মিরের মাটি থেকে হারিয়ে গেছে হাজার হাজার দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, সংগঠক, আইনজীবি, বুদ্ধিজীবি ও সাধারণ মানুষ। জনমনে ভীতি সৃষ্টির জন্য নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে বিভৎস রূপে হত্যা করে তাদের কারো কারো লাশ জনপদে জনপদে ফেলে রাখা হতো। ভারতীয় সেনাদের জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ আরেক দিকে ভারতের পদলেহি কাশ্মির রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর দমন পীড়ন, রাজ্যের বেআইনি হত্যাকাণ্ড ও অন্যায় নিপীড়ন সমান তালে চলেছে কাশ্মিরে। ভূ-স্বর্গ কাশ্মিরকে নরকে পরিণত করা হয়েছে ঠান্ডা মাথায়।
কাশ্মিরে এ পর্যন্ত ঠিক কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কত নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, কি পরিমাণ বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে এবং কত সংখ্যক মানুষকে নিরাপত্তা বাহিনী ধরে নিয়ে ফেরত দেয় নাই তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। কাশ্মিরের স্বাধীনতার প্রচারণা সংগঠন কাশ্মির আমেরিকান কাউন্সিলও (কেএসি) একটা পরিসংখ্যান করেছে। তাতে তারা দাবি করেছে, স্বাধীনতা আন্দোলনের গত বিশ বছরে নারী, শিশু ও যুবক মিলিয়ে এক লাখ নিরীহ কাশ্মিরি ইনডিয়ান সেনা এবং রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে খুন হয়। স্থানীয় এনজিও আইপিটিকের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৮৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কাশ্মির উপত্যকায় ইনডিয়ান সৈন্যদের হাতে নিহতের সংখ্যা সত্তর হাজারেরও বেশি।
এবার বাংলাদেশের দিকে নজর দেয়া যাক। চেতনার কথা বলে প্রথমেই একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিকে দ্বিধা বিভক্ত করা হয়। বিচারের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ করা হয় একের পর এক। দেশপ্রেমিক বিশেষতঃ ভারতের আগ্রাসনবিরোধী নেতৃবৃন্দকে রীতিমত হাস্যকর অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা। পাশাপাশি সমান তালে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গুম-খুন করা হয়েছে বিগত প্রায় ৬ বছর যাবত। ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০১৫ : আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৫ সালে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, গুলিবিনিময় এবং হেফাজতে মোট ১৯২ জন নিহত হন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ১২৮। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত অনেকেরই খোঁজ পাওয়া যায়নি। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে গুম হওয়ার পর লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। ২০১৫ সালে এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন মোট ৫৫ জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময় ৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে, ৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, পরিবারের কাছে ফেরত এসেছেন ৫ জন এবং বাকিদের এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ মেলেনি। বেশির ভাগ ঘটনায় অপহৃত, নিখোঁজ বা নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী, বিশেষত র্যাব ও ডিবির বিরুদ্ধে এসব ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুললেও সাধারণত এ ক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রেসনোট প্রদান বা কোনো ধরনের দায়দায়িত্ব স্বীকারসহ গুম বা গুপ্তহত্যা রোধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা কিংবা তদন্তকার্যক্রম পরিচালিত হয়নি।
গত ৩০ আগস্ট ২০১৫ আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে আসক একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, গত আড়াই বছরে এ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৭৭ জনকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, যাঁদের মধ্যে এখনো ১১০ ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। এসব ব্যক্তির বেশির ভাগকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালে একইভাবে অপহৃত হন ৮৮ জন। পরে ২৩ জনের লাশ পাওয়া যায়, মুক্তি পান ১২ জন। র্যাব গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে সাতজনকে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে পাওয়া যায় একজনকে, দুজনকে জেলে পাঠানো হয় আর একজনকে থানায় পাওয়া যায়। বাকি ৪২ জনের এখনো খোঁজ মেলেনি। ২০১৩ সালে ৫৩ ব্যক্তি অপহরণের শিকার হন। এর মধ্যে পরে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার হয়, তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় আর দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বাকি ৪৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, গুম, খুন, অপহরণের শিকার এই শত শত মানুষের অধিকাংশই বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী। গণতন্ত্র লুটের প্রতিবাদ ও একটি অবাধ নির্বাচনের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন দমন করতে গিয়ে এ সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ নেতা, সাবেক সাংসদ, পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অসংখ্য ছাত্র-যুবকর্মী গুম-অপহরণের শিকার হয়েছেন। দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে নিজেদের সেক্যুলার দাবি করে ক্ষমতা দখল করা অপশক্তি ক্রমেই বাংলাদেশকে কাশ্মির বানানোর সব প্রস্তুতি শেষ করে ফেলেছে। বাকী আছে শুধু একসময়ের কাশ্মিরের পুতুল প্রধানমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহর মত বাংলাদেশের শেখ পরিবার কর্তৃক ভারতের হাতে তুলে দেয়া। ট্রানজিট, বন্দর, সুন্দরবন প্রভৃতি হস্তান্তরের মাধ্যমে সে পথেও অনেক দূর এগিয়ে গেছে এই নাস্তিক্যবাদী ব্রাহ্ম্যাণ্যবাদী সরকার। জনগণ বেঘোরে ঘুমালে এর পরিণতি দেখতে খুব বেশি আর দেরী করতে হবে না।
বিষয়: রাজনীতি
৪১২৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ছবিটি শেখ আবদুল্লাহর নয় খান আবদুল গাফফার খান এর সাথে নেহেরুর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন