আজ কি দু’টো ভাত বেশি খাবেন তিনি?

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ১৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০২:৪৫:৪৫ দুপুর



লাশ পড়েছে এমন খবর কানে পৌঁছলে তিনি নাকি দু’টো ভাত বেশি খেতে পারেন। এ আমার কথা নয় একান্ত তার কাছের লোকদের কথা। মনে হচ্ছে এবারের বৈশাখী পূজায় ভাজা ইলিশের সাথে দু’টো বেশি করে পান্তাভাত বেশ আয়েশ করেই খেতে পারবেন।

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যে খবর পেলাম তাতে কলিজাটা ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম। হ্যা, বলছি ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ পৌরসভা শিবিরের সভাপতি আবুজর গিফারি ও কে সি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও শিবির নেতা শামীম ভাইয়ের কথা। প্রায় মাস খানেক গুম থাকার পর আজ সকালে তাদের লাশ মিলেছে রাস্তার পাশের ডোবায়। ওদের শরীরে ছিল সদ্য শুকিয়ে যাওয়া রক্ত। ছিল তাজা বুলেট। যে বুলেট তাদের ছুটি দিয়েছে ইহকালের সকল ব্যস্ততা থেকে।

আবু জর গিফারী। দরিদ্র পিতার সন্তান। সেলুনে কাজ করে তার পিতার জীবিকা নির্বাহ হতো। গত ১৮ মার্চ জুম্মার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যায় আবু জর গিফারীকে। এ ঘটনার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

এরপর ২৪ মার্চ বিকেলে একই উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামের ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের অনার্স অধ্যয়নরত মেধাবী ছাত্র ও শিবির নেতা শামীম হোসেন (২০) কে একই ভাবে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

উভয়ের পরিবারই পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। আকুতি জানিয়েছে তাদের মুক্তি দেয়ার। জানতে চেয়েছে তাদের পুত্রের অপরাধ। কিন্তু নির্বাক ছিল অবৈধ সরকারের পদলেহী পুলিশ বাহিনী। জানাতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের গ্রেফতারের কারণ। সাজাতে ব্যর্থ হয়েছে বোমা নাটক। জোগাড় করতে পারেনি বন্দুকযুদ্ধের রসদ। অবশেষে রাতের আধারে পিতা-মাতার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। গোপনে গুলি করে হত্যা করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী। মায়ের কোলে ফিরে এসেছে গিফারী আর শামীম। তবে জীবিত নয়। লাশ হয়ে ফিরেছে।

আবু জর গিফারী আর শামীম নাম দু’টি যুক্ত হলো শহীদি ঈদগাহে। সংগ্রামমূখর ঝিনাইদহবাসীর মনে নতুন করে প্রজ্জলিত করল ঋণ পরিশোধের বাসনা। শহীদের রক্ত বেয়েই আসে বিপ্লবের সূর্য। যদি এ কথা সত্য হয়, তবে গিফারী আর শামীম ভাইয়ের রক্তই ঝিনাইদহের ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মনে চলার পথের প্রেরণা হয়ে কাজ করবে যুগের পর যুগ। শতাব্দীর পর শতাব্দী।

দু’টো ভাত বেশি খাওয়ার নেশায় যে বা যারা প্রতিদিন কোনো না কোনো মায়ের বুক খালি করে চলেছে, তাদের পতনের প্রহর গুনছে দেশের অগণিত মানুষ। নির্যাতিতের এই ক্রন্দন ধ্বনি যেদিন মহামহিমের কানে বেজে উঠবে সেদিন জালিমকে রক্ষার আর কেউ থাকবে না।

এটি আমাদের বিশ্বাস। এ বিশ্বাসে চুল পরিমান ভেজাল নেই।

বিষয়: বিবিধ

১৭১৬৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

365635
১৩ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৫৫
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ
১৩ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৫:৫১
303332
স্বপ্নচারী মাঝি লিখেছেন : ধন্যবাদ
365638
১৩ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:২৬
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ইয়া আল্লাহ, আর তো সহ্য হয় না রে আল্লাহ....তোমার কাছে বিচার চাই
১৩ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৫:৫১
303331
স্বপ্নচারী মাঝি লিখেছেন : আমীন
365678
১৩ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১১:২৯
নয়ন খান লিখেছেন : ওদের অপরাধ একটাই ওরা মহামহিম আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে, মানুষকে তাঁর দিকে ডেকেছে। হে আল্লাহ, জানি তুমি জালিমদেরকে ঢিল দাও, তারপর পাকড়াও করো। আমরা সেদিনে অপেক্ষায়ই আছি। শুধু আকাশের দিকে চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই যেন করার নাই। মানুষ ভুলে গেছে প্রতিবাদ করার, সাহস হারিয়েছে শয়তানদের মসনদ তছনছ করার। তুমিই একমাত্র ভরসা।
365709
১৪ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৮:০৪
ব্লগার শঙ্খচিল লিখেছেন : শহীদের রক্ত বৃথা জাবেনা ইনশাআল্লাহ । এ মাটিতে তাঁদের রক্ত কথা বলবে
365713
১৪ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:১০
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : এই জালিম সরকার আমাদের ভাইদেরকে হত্যার নেশায় মত্ত হয়েছে একদিন এই সকল রক্তের বদলা সাধারন জনগন নিবে ইনশাআল্লাহ
366312
১৯ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৪৩
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : কিয়ামতের ময়দানে প্রতিটি ফোঁটা রক্তের হিসাব দিতে হবে-যে ঝরিয়েছে।এক কদমও নড়তে দেয়া হবে না। অতএব সাবধান হও, রক্ত পিপাসুরা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File