দেশের মানুষ কবে করবে এমন গোসল?
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ০৩ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:১৫:১১ রাত
ক্ষোভ আর দুঃখে দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে রাজনীতি থেকে চিরবিদায় ও ভবিষ্যতে নির্বাচন না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সদ্য বহিস্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রহিজ উদ্দিন আকন্দ। জানা যায়, বিগত ৫ বছর ওই অলোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দায়িত্ব পালনকালে দুই দুইবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছিলেন রহিজ আকন্দ। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও গত নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সবশেষে রাগ, ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে রাজনীতি থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলেন তিনি। গতকাল থেকে এই খবরটি সামাজিক মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়ে গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে এ অবস্থা কি শুধু রহিজ আকন্দের একার? না। সারাদেশের কোটি কোটি জনগণের অবস্থা রহিজ আকন্দের মতই।
৫ জানুয়ারীর কলঙ্কময় দিনটির পর থেকে এদেশের বিবেকবান প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে এমন একটি গোসলের আকাঙ্খা বিরাজ করছে। যদিও বাম মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছিল জনগণের দুধের স্বাদ ঘোলে দিয়ে মেটাতে। কিন্তু দলীয় লুটেরা বাহিনীর কারণে প্রতিবারই সে উদ্যোগ হোঁচট খেয়েছে, হুমড়ি খেয়ে আছড়ে পড়েছে নির্মমভাবে। উপজেলা নির্বাচন, সিটি নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন ও সর্বশেষ ইউপি নির্বাচন। সবগুলো নির্বাচনেই দেশের মানুষ ৫ জানুয়ারীর কলঙ্কিত নির্বাচনের প্রতিবিম্ব দেখতে পেয়েছে। হামলা, ভাংচুর, কেন্দ্র দখল, ভোটচুরি, গভীর রাতে ব্যালটে সিল মারা ও বিরোধী দল সমূহের পোলিং এজেন্টদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে কি করা হয়নি? সর্বশেষ দুই দফায় ইউপি নির্বাচনে প্রাণ গেছে ৩৮ জন মানুষের। আর বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিতের হিড়িক তো আছেই। সর্বশেষ স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের আয়োজন করে দেশকে গৃহযুদ্ধের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। নির্বাচন মানেই এখন যেন মারামারি আর রক্তারক্তির অশুভ এক প্রতিযোগিতা। অথচ এই নির্বাচনের মাধ্যমেই সমাজে শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত করা যেত। অন্যভাবে বলা যায়, সমাজে জনমতের প্রতিফলন ঘটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই তো নির্বাচন। কিন্তু যে সরিষা দিয়ে ভুত তাড়ানোর কথা যে সরিষার থলি দখল করে নিয়েছে বাকশালের প্রেতাত্মারা। এখানে এখন একদলীয় শাসনের জয়জয়কার। শোষিতের চিৎকার আজ ভারী করে তুলেছে বাংলার প্রতিটি অলিগলি। এখানে জনমতের কোন মূল্য নেই। জোর যার মুল্লুক তার নীতির প্রাধান্যে রুদ্ধশ্বাস উঠেছে দিকে দিকে। মানুষ এ অসহনীয় পরিবেশ থেকে মুক্তি চায়। আশ্চার্য মনে হলেও সত্য যে, ভোটডাকাতি আর ব্যালট ছিনতাইয়ের এই কু-প্রভাব আমাদের কোমলমতি শিশুদের উপরেও পড়েছে। সম্প্রতি স্কুল কেবিনেট নির্বাচনে ব্যালট বাক্স লুটের মত ভয়ানক খবর পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা রহিজ উদ্দিন আকন্দ দুধ দিয়ে গোসল করে যে প্রশান্তি অনুভব করেছে, বাংলার প্রতিটি মানুষ আজ এরকম একটি গোসল করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার অপেক্ষায়। কিন্তু সে অপেক্ষার সমাপ্তি কবে আসবে তা আল্লাহই ভালো জানেন।
বিষয়: রাজনীতি
১৩১৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দুধ দিয়ে গোসল করার মাহাত্য কি? আমিও যখন শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে যাই, তখন দুধ দিয়ে গোসল করিয়েছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন