দোলপূজা কবে হবে বাঙালি সংস্কৃতি?

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ২৪ মার্চ, ২০১৬, ০৭:৫৮:৩৯ সন্ধ্যা



যদিও আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে যে, দোলপূজার নামে নারী-পুরুষের একত্রে রঙ মাখামাখি আর ডলাডলি আদৌ কোন ধর্মীয় আচার হতে পারে কিনা। তবুও আমি এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। কারণ আমি ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাসী একজন উদারতান্ত্রিক মানুষ বলে নিজেকে মনে করি। কিন্তু তাই বলে নিজের ধর্মের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকার চেষ্টা করি। যাতে আমার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মিলেমিশে একাকার না হয়ে যায়। সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করে থাকি। আমি ধার্মিক, ধর্মনিরপেক্ষ নই। যারা অন্যের ধর্মকে অসম্মান করে তাদেরকে আমি মানবতার শত্রু মনে করি। আমি আমার সংস্কৃতিকে ভালোবাসি। এবং আমি চাই না যে, আমার সংস্কৃতির মধ্যে অন্য কারো সংস্কৃতি অনুপ্রবেশ করে আমার স্বকীয়তা নষ্ট করুক। এবং আমি জানি এটি আমার অপরাধ নয়, অধিকার। আমি চাই না আমার আচার-অনুষ্ঠান অন্যের আচার-অনুষ্ঠানের সাথে তালগোল পাকিয়ে একাকার হয়ে যাক। আমার ঐতিহ্যকে অন্য কারো খেল তামাশায় পরিণত হতেও দিতে চাই না। আমার আগামীর প্রজন্মকে উম্মাদ কিংবা অন্ধ হয়ে জন্ম দিতে চাই না। এটা আমার মানবিক চাহিদা।

পহেলা বৈশাখে আমাদের দেশে হালখাতা আর গ্রাম্য মেলার প্রচলন থাকলেও মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো কিংবা মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন কখনো আমার সংস্কৃতির মধ্যে ছিল না। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আচার এবং আমার ধর্মীয় চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমার ধর্ম বলে সকল মঙ্গল অমঙ্গলের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রব্বুল আলামীন। যিনি গোটা সৃষ্টির মঙ্গল অমঙ্গলের নিয়ন্তা। তিনি ছাড়া আর কোন প্রভূ নেই। নেই তার কোন অংশীদার। আর অগ্নি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে কল্যাণ বা মঙ্গল কামনা করা এটি একধরণের অগ্নিপূজা। যা হিন্দু বৈদ্ধসহ আরও কিছু শিরকী ধর্মাবলম্বীদের উপাসনা বলে বিবেচিত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই অগ্নিপূজা সকল আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে অনুপ্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে। হিন্দুদের মতই ভক্তি শ্রদ্ধাসহকারে জ্বালানো হচ্ছে কথিত এই মঙ্গল প্রদীপ। কিন্তু কেন এই ধর্মীয় আগ্রাসন? আমার স্বকীয়তা আর ধর্মবিশ্বাসের সাথে কেন এই শিনাজুড়ী? এসব কি কেউ খেয়াল করছে না? তবে কেন এমন অদ্ভূত ধরনের ভয়ানক নীরবতা?



গত বুধবার ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দোল পূজা। যাকে আধুনিক হিন্দুরা “হোলি উৎসব” হিসেবে পালন করে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, হিন্দুদের এই ধর্মীয় উৎসব আজ আমাদের উপর খেলাচ্ছলে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমাদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন-তরুনীরা না জেনেই জড়িয়ে পড়ছে হিন্দুদের এই ধর্মীয় উৎসবের সাথে। বুঝতেই পারছে না যে এর মাধ্যমে তারা শিরকের মত জঘন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে! সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষিকার প্রাচুর্য থাকার কারণে এবারের হোলি উৎসবে দেখা গেছে কোমলমতি শিশু এবং তাদের অভিভাবকদেরকেও মজা করার নামে রং মাখিয়ে দিতে। এতে আমাদের শিশুরা কি শিখছে? সময়ের ব্যবধানে “মঙ্গল শোভাযাত্রা”র মতই হোলি তথা দোল পূজাও যে বাঙালি সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দেয়া হবে না এর কি কোন গ্যারান্টি আছে? মুসলিম অভিভাবকমন্ডলী সজাগ দৃষ্টি না রেখে যদি হাওয়ায় পাল তুলে দিয়ে মজা লুটার চেষ্টা করে, তবে আগামীর প্রজন্ম হবে কিম্ভূত ধর্মাবলম্বী প্রজন্ম। যারা নিজেদের না মুসলমান বলে পরিচয় দিতে পারবে। আর না হিন্দু বলে পরিচয় দিতে পারবে। সজাগ হওয়ার মোক্ষম সময় এখনই...

বিষয়: বিবিধ

১৫৬০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

363521
২৪ মার্চ ২০১৬ রাত ০৯:৫৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এটা তো আগের থেকেই চলছে। শিক্ষা বর্ষের শেষে তথাকথিত র্যাগ ডে এর নামে এসব চলছেই।
363541
২৫ মার্চ ২০১৬ রাত ০৩:১৬
শেখের পোলা লিখেছেন : অবাক হবার কিছুই নেই ধীরে ধীরে সবই সহনশীল হয়ে যাবে৷ বাঙ্গালী একদিন আসল বাঙ্গালী হয়ে যাবে৷ চেতনার শেষ অধ্যায় হয়ত এটাই৷
363609
২৫ মার্চ ২০১৬ রাত ১০:১২
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আমি ঐসব পাওলন করিনারে বাপু। অন্যদের বলতে গেলেও হয়ে যাই ধর্মান্ধ! কিতা করতাম আমি!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File