সাংবাদিক তুমি কার?

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০২:৪৬:১৬ দুপুর

চেতনার কথা বলে মিডিয়া ও তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে এদেশের সহজ সরল মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করে মিথ্যার প্রাসাদ গড়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলে তোমরা। সাংবাদিকতার নামে করেছ তথ্য সন্ত্রাস। সাংবাদিক পরিচয়ের চেয়ে নিজেদের তথ্যসন্ত্রাসী পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেছ। বলেছ আমরা নিরপেক্ষ নই আমরা .... ইত্যাদি ইত্যাদি। মিথ্যাশ্রিত আবেগ নির্ভর রিপোর্টিং হয়ে উঠেছিলো তোমাদের পেশা। নিত্য নতুন সাজানো ঘটনা তৈরী করে প্রচার করা হয়ে উঠেছিল তোমাদের দৈনন্দিন কাজের অংশ। উদ্দেশ্য মোল্লাদের দমানো। তোমাদের রিপোর্টিং দেখে মনে হতো - মোল্লারাই বুঝি দেশের এক নম্বর সমস্যার নাম।

মোল্লাদের দমাতে গিয়ে নিজেদের অলক্ষ্যেই কখন যে তোমরা স্বৈরাচারের হাতের পুতুল বনে গিয়েছ তা ভাবতেও পারোনি। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে সাংবাদিকদের মাঝে যে দেশপ্রেম দেখেছি নবাগত স্বৈরাচারের আমলে অধিকাংশের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। আর তাই লোভাতুর বনে গিয়েছিলে তোমরা। কেননা, স্বৈরাচারের নির্দেশ তলব করলে যদি হলুদ খামে বাড়তি সম্মানী পাওয়া যায়। যদি সামান্য ভাতা বেড়ে যায় সমস্যা কি? সেইসাথে যদি মেলে স্বৈরাচারের সাথে দাঁড়িয়ে মুখ বাঁকিয়ে সেলফি তোলার সুযোগ তাহলে তো আর কথাই নেই!

দেশটা গোল্লায় যাক তাতে কি? যদি পত্রিকা আর চ্যানেলগুলো বেঁচে যায় তাই তো অনেক! কারণ, ওগুলোর সাথে সাংবাদিক নামক অনেক দালালের রুটি রুজির ব্যাপার জড়িত। চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত আর আমার দেশের ভাগ্য বরণ তো আর করতে হচ্ছে না।

এতকথা বলছি গতকালের দু’টি মন্তব্য দেখে। সিটি নির্বাচনে স্বৈরাচারের রক্ষীবাহিনী ইচ্ছা হয়েছে তাই সকল ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়নি। কোথাও কোথাও কিছুক্ষণ অবস্থান করতে দিয়ে দূর দূর করে ফকির মিসকীনের মত তাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরেও যেভাবে মিডিয়ায় উঠে এসেছিল ভোট ডাকাতির চিত্র, তা কোন গণতান্ত্রিক দেশের চিত্র হতে পারে না।



তাই রকিব উদ্দিন আর পুলিশ কর্তারা এবার নিয়েছেন ভিন্নধর্মী পদক্ষেপ। যেহেতু ভোট ডাকাতদের শায়েস্তা করে ভোট ডাকাতি নির্মূল করতে তারা অক্ষম, তাই এ ভোট ডাকাতির খবর যেন মিডিয়ায় প্রচার হতে না পারে তাই সিইসি রকিব গণমাধ্যমকর্মীদের ভোট কেন্দ্রের পাশে দীর্ঘক্ষণ না থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশ কর্তারা গণমাধ্যমকর্মীদের হুশিয়ার করে বলেছেন - ভোটের দিন সাংবাদিকদের আচরণের ওপর বিশেষ নিয়মকানুন প্রণয়ন করা হোক। অন্যথায় তা অতীতের ন্যায় ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করা এবং বাইরে অবস্থান করা নিয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি তৈরি করতে পারে। বৈঠকে কিছু পুলিশ কর্মকর্তা এ বলেও অভিযোগ করেন যে, মিডিয়ার একটা অংশ তাদের ব্যবসায়ীক নীতি অনুসারে সবসময় নেতিবাচক সংবাদগুলো তুলে ধরে।



বাহ! ভালো তো। ভোটকেন্দ্রে ভোটার ব্যাতিত ভোট ছিনতাইকারীরা যাতে প্রবেশ না করতে পারে সে ব্যবস্থা না করে, ভোট ছিনতাইয়ের দৃশ্য যাতে গণমাধ্যমে উঠে না আসে সেই ব্যবস্থা করছে স্বৈরাচারী প্রশাসন। এখন সাংবাদিক ভাইয়েরা বলুন- কি লাভ হলো এত স্বৈরাচারের দালালী করে? না জনগণের ভালোবাসা পেলেন, না পেলেন সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারের অধিকার। তাই বলি - সাংবাদিক তুমি কার?

বিষয়: রাজনীতি

১২০১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

354719
২০ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৭
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
354743
২০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৭
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন :
স্বৈরাচার এরশাদের আমলে সাংবাদিকদের মাঝে যে দেশপ্রেম দেখেছি নবাগত স্বৈরাচারের আমলে অধিকাংশের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি।

তখন কেমন ছিল জানিনা, তবে এখনকারটার দেখছি এবং অসহায় বোধ করছি।
354747
২০ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:১৮
শেখের পোলা লিখেছেন : সাংবাদিক কারোই নয় চাঁদির জুতার৷অর্থাৎ টাকার৷ রুটি রুজীর জন্য তারা সব করতে আর দিতে পারে৷ ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File