সবকিছুকেই কি কর্পোরেট ইমেজ দিতে হবে?
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ০৯ জুলাই, ২০১৫, ০৯:১৯:৩৮ সকাল
গতকাল কিছু অনলাইন পত্রিকায় একটি খবর আমার নজর কেড়েছে। বলতে পারেন আমাকে শঙ্কিত করেছে। খবরের শিরোনাম ছিল “সেহরি পার্টি: শহরে নতুন সংস্কৃতি”। খবরের বর্ণনায় বলা হয়েছে “ধনী সমাজ, কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড কিংবা শোবিজ জগতের ছোটখাট দলের মধ্যে প্রচলিত থাকলেও সময়ের ব্যবধানে এই পার্টি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন স্তরে। হ্যাঁ, বর্তমানে সেহরি পার্টির চলতি ট্রেন্ড। ভোর রাতে একত্রে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে পার্টিতে অংশগ্রহণ করছে। আবার এমনও হয়, সারারাত গল্প-গান-আড্ডাবাজি শেষে সেহরি পার্টিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন দল বেঁধে। অবশ্য সেহরি পার্টির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র সেহরি খাওয়াই নয়। পুনর্মিলনি, সবার সঙ্গে দেখা হওয়া কিংবা সামাজিক আচারের মধ্যে পড়ে গেছে এই পার্টি। আবার অনেক সময় ধর্মের সীমাবদ্ধতাও থাকছে না এই মিলন মেলায়।”!!!
আচ্ছা, সবকিছুকে এমন কর্পোরেট রূপ না দিলে হয় না? বেশ কিছুদিন আগে ফেসবুকে লিখেছিলাম, বাঙালির এক অদ্ভূত ক্ষমতা আছে। আর তা হলো - যে কোনো দিবসকেই তারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’ তে পরিণত করতে পারে।
মহান রব্বুল আলামীন রোজা দিয়েছেন তাক্বওয়া অর্জনের জন্য। আর তাই এ মাসের বিশেষায়িত সকল কাজেই রেখেছেন অফূরন্ত সওয়াব। এর সাহরীতে যেমন সওয়াব আছে, তেমনি ইফতারেও আছে সওয়াব। তেমনি অন্য রোজাদারকে ইফতার করালে ঐ রোজাদার ব্যাক্তির সমপরিমান সওয়াবের কথা হাদীসে বলা হয়েছে। আর আমাদের সমাজের ধনী সমাজ, কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড কিংবা শোবিজের তারকা এক কথায় সমাজের অভিজাত শেণির করাল গ্রাসে এসব সওয়াবের কাজও যেভাবে কলুষিত হচ্ছে, তাতে রমজানের পবিত্রতা বলতে আর কিছুই থাকে না।
রমজান মাসে দিনের বেলা রোজা আর রাতের বেলা জেগে জেগে ক্বিয়ামুল লাইল তথা তাহাজ্জুদ নামাজের প্রতি জোরালোভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। অথচ, সমাজের তথাকথিত এ অভিজাত শেণি নাকি সারারাত গল্প-গান-আড্ডাবাজি শেষে সেহরি পার্টিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন দল বেঁধে!!!
আর ঐ খবরে যেসব ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তা দেখে তো আরও অবাক হয়েছি। সবকিছুরই তো ড্রেস কোড বলে একটা কথা আছে। ঘুমুতে যাওয়ার পোষাক পড়ে যেমন অফিসে যাওয়াটা আহাম্মকি। তেমনি ডিজে পার্টির পোষাক পড়ে যদি কেউ কথিত ওইসব সেহরী পার্টি বা ইফতার পার্টিতে যায় তবে তাকে আহম্মক, গর্দভ কিংবা যা খুশি তা বলা যেতে পারে। সাহরী পার্টিতে ওইসব কথিত কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড এর লোকজন যেসব পোষাক পড়ে এসেছেন তা পড়ে ডিজে পার্টিতেই যাওয়া চলে, সাহরীতে নয়।
কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড তথা ধনিক শ্রেণির প্রতি এ অধমের অনুরোধ, দয়া করে এভাবে ধর্মীয় কার্যকলাপকে কর্পোরেট রূপ দেবেন না। এ কাজটি করার কোনো নৈতিক অধিকার আপনাদের নেই। আপনাদের যার যত খুশি পার্টির আয়োজন করে সেখানে উলঙ্গ হয়ে নাচুন। কিন্তু দয়া করে ওসব বেলেল্লাপনাকে ধর্মের সাথে জড়াবেন না। ওসব ইসলাম বিরোধী জীবনাচরণকে সাহরী বা ইফতারের সাথে গুলিয়ে একাকার করে দিবেন না। এতে আল্লাহ অনেক বেশি রাগন্বিত হন। আর আল্লাহ যদি কোন সমাজ বা জাতির প্রতি অসন্তুষ্ট হন, তাদের ধ্বংস অনিবার্য।
বিষয়: বিবিধ
১৫০০ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যাদেরকে দেখা যাচ্ছে ছবিগুলোতে তারা ঐ সময়ের কাফেরদের মতই মনে করছে ইসলামকে ।
যাদেরকে দেখা যাচ্ছে ছবিগুলোতে তারা ঐ সময়ের কাফেরদের মতই মনে করছে ইসলামকে
-মক্কার কাফেররা উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করত এবং দেবতার নামে বলি দিত..
২)এ কাজটি করার কোনো নৈতিক অধিকার আপনাদের নেই। আপনাদের যার যত খুশি পার্টির আয়োজন করে সেখানে উলঙ্গ হয়ে নাচুন। কিন্তু দয়া করে ওসব বেলেল্লাপনাকে ধর্মের সাথে জড়াবেন না।
খুবই ভাল পোস্ট.. অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন