বিদায় মমতা দি, আবার আসলে মনে করে গ্লিসারিন নিয়ে আসবেন কিন্তু...
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১০:৫০:১৪ রাত
০১. রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস ভঙ্গ করে হঠাৎ করেই বাংলাদেশে পা রাখলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। শুনেছি বাঙ্গালী মাত্রই নাকি আবেগ প্রবন জাতি। আর তাই বিমানবন্দরে নেমেই সাংবাদিকদের দেখে আর আবেগ সংবরণ করতে পারেননি। তাই বলে ফেললেন, “মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতেই এসেছি - জয়বাংলা”। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন থেকে গেল, নিজের বাড়িতে কি কেউ পানি সরবরাহ বন্ধ করে আসে? যাইহোক, ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে মমতা দি রাজনীতিবিদ বটে তবে অভিনয়ে খুব একটা পাকা অভিনেত্রী হয়ে উঠতে পারেননি। অথবা কলকাতার হিসেবে তিনি যথেষ্ট ভালো অভিনেত্রী, কিন্তু বাংলাদেশের হিসেবে অনেক পিছিয়ে। বাংলাশের জনগণ এত সস্তা অভিনয় খায় না।
০২. এরপর বৈঠকি বাংলায় শোনালেন আশার বাণী। সীমান্তের ছিটমহল সমস্যা সেরে দেবেন, ব্যাবসায়িক চুক্তি করবেন। আর তিন নাম্বারে গিয়ে বললেন তিস্তা সমস্যার কথা। আর একথাটি তুলতেই ‘দালালাইটিস’ রোগে আক্রান্ত রোগীরা করতালি দিয়ে বসলেন। কিন্তু সে করতালির সম্মান না রেখেই মমতা জোর গলায় উচ্চারণ করলেন - ‘আপনাদেরও কিছু প্রোবলেম আছে, আমাদেরও কিছু প্রোবলেম আছে’। এমনকি করতালি থামাতে তিনি দ্বিতীয়বার আরও জোর দিয়ে বললেন ‘আপনাদেরও কিছু প্রোবলেম আছে, আমাদেরও কিছু প্রোবলেম আছে’। এটা আমি প্রধানমন্ত্রী হাশিনা দি’র সাথে আলোচনা করব, আমাদের উপর ছেড়ে দিন।” আর এটুকু শুনেই ‘দালালাইটিস’ রোগীরা ভীষণ খুশি। কেউ একটু মুখ খুলে জিজ্ঞাসাও করল না যে, ‘দিদি আমাদের প্রাপ্য পানি দিতে আপনাদের কি সমস্যা তা আপনারাই ভালো জানেন, কিন্তু দয়া করে বলবেন কি আমাদের কি প্রোবলেম আপনাদের চোখে ধরা পড়ল?’ এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও নতজানু ভঙ্গিতে বললেন - “নৌকা যেন চলে”। বাহ! নৌকা চললেই আমরা খুশি..! তবে তো যে পানি দিচ্ছে তাতে ঢের নৌকা চালানো যায়। তবে আর সমস্যার কি থাকলো?
০৩. মূলত তিনি এসেছিলেন তেল মেরে সিনেমার বাজার তৈরী করতে। আর তাই বারবার উচ্চারণ করেছেন “জয় বাংলা”। যেখানে সেখানে ঝেরেছেন আবেগ। গেয়েছেন গান, কবিতা আরও কত কি ! আর তাই সাথে করে নিয়ে এসেছেন প্রসেন জিৎ, দেব, নচিকেতা সহ আরও অনেককে। এতযুগ পরে তাই হঠাৎ করেই বাংলা ভাষার প্রতি আবেগ যেন উথলে উঠেছে তার। ৪০ বছর পরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে বললেন “এবার থেকে বাংলাদেশে আসলে এ বাড়িতে একবার আসবো”। নায়ক দেব তো বলেই ফেললো - “এপার বাংলা ওপার বাংলা এক করে দাও”। আবেগ, আবে, আর আবেগ। কিন্তু বাঙ্গালী আবেগ প্রবণ জাতি হলেও কাঁটাতারের এপাড়ের লোকেরা যে একটু ভিন্ন প্রকৃতির তা হয়তো মমতা দি’র জানা ছিল না। এপাড়ের মানুষেরা গ্লিসারিন লাগিয়ে না কাঁদলে সে কান্নার কোন দাম দেয় না। উপরন্তু আরও খুঁজে বের করে যে, আসলে পেট্রোল বোমায় পুড়েছিল নাকি মোমবাতির আগুনে?
সুতরাং মমতা দি কে বলব আগামী দিনে আসলে সাথে দেব আর জিৎ বাবুরা যে গ্লিসারিন মেখে কাঁদে, সাথে করে এক বোতল গ্লিসারিন আনতে ভুল করবেন না কিন্তু.....
পানি দেন আর না দেন... ইলিশ খাওয়ার দাওয়াত তো রইলই....
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৪৬৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ হ্যা , তবে উনারা আগে আমাদের চ্যানেল উনাদের দেশে আমাদের মত দেখানো শুরু করে দিলে ভাল হয় । দম হ্যায় ?
উনারা সব সময় “এপার বাংলা ওপার বাংলা এক করে দাও” ডায়লগটি ছাড়ে । কোন বাংলাদেশীকে এরকম বলতে শোনা যায় না । কারণ এক হয়ে গেলে ক্ষতি হবে বাংলাদেশের আর নোংরা শহর কলিকাতা জাতে উঠবে ।
বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে ফিল্ড অনেক ভাল হবার কথা প্রসেনজিত , দেব , জিতদের । তামিল ছবি কি ভারতে হিট হয় না ?
তাহলে তারা দিল্লী , বোম্বে না গিয়ে বাংলাদেশে আসে কেন ?
এতে বোঝা যায় যে সারা ভারতে হিন্দী ও তামিল এবং হলিউডি ছবির দাপটে তাদের ছবিগুলো বেদম মার খাচ্ছে । তাই বাংলাদেশের বাজার আরও শক্ত পোক্ত করার জন্য মমতার সাথে এসেছে ।
কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয় । তবে দাদাদের যে স্বভাব , উনারা পেতে চান । দিতে চান না কখনই।
কিছু দিতে গেলে কিছু আদায় করে নেবার যোগ্যতা না থাকলে আমরা শুধু দাদাদের দিয়েই যাব আর উনাদের ফাঁকা বুলি খেয়েই যাব।
মন্তব্য করতে লগইন করুন