ভয়ঙ্কর উদ্দেশ্য নিয়েই রাষ্ট্রধর্ম তুলে দেয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে
লিখেছেন লিখেছেন খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ২৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:২৩:৩৩ রাত
সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম থাকাতে আর না থাকাতে এত দিন তেমন বেশি লাভ ক্ষতি হয়নি তা ঠিক আছে। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে তা বাদ দেয়ার চিন্তা করছে লীগেরা, তা খুবই ভয়ংকর। তুর্কী সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ তুলে দেয়ার পর সেখানে কী কী ঘটেছিলো
আসুন দেখি-
১) শিশুদের ইসলামী শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়।
২) ধর্ম মন্ত্রণালয়, মাদরাসা-মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং হজ্জ-ওমরা যাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়।
৩) বড় বড় মসজিদগুলোতে নামায বন্ধ করে দিয়ে সেগুলোকে জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তুরস্কের সর্ববৃহৎ মসজিদ ‘আয়া ছুফিয়া’কে রূপান্তরিত করেছিলেন সরকারি জাদুঘরে।
৪) নারীদের জন্য হিজাব পরিধান বন্ধ করে দেওয়া হয় সরকারি নির্দেশে তুর্কী পুলিশ রাস্তায় বের হওয়া মুসলিম মহিলাদের ওড়না কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলত।
৫) আরবী অক্ষরের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়। আরবীতে কুরআন পড়া, নামাজ পড়া ও আজান দেওয়া নিষিদ্ধ হয়।
৬) তুর্কী ভাষা আরবী হরফে না লিখে ল্যাটিন হরফে লিখতে হতো।
৭) সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে রবিবারকে নির্ধারণ করা হয়।
৮) তুরস্কবাসীকে ভিন্ন ধরণের পোষাক পরতে বাধ্য করা হয়।
৮) মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদকে বর্জনীয় ঘোষনা করা হয়।
৯) তুরস্কের অধীন আজারবাইজানকে রাশিয়ার কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
১০) বক্তৃতা এবং বিবৃতিতে নিয়মিত ইসলাম ও ইসলামী
পরিভাষাসমূহ নিয়ে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনা করে সেগুলো বর্জনের প্রতি সবাইকে আদেশ-নিষেধ করা হয়।
১১) সরকারী লোকদের জামাতে নামায পড়া নিষিদ্ধ হয়।
১২) ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী সালাম দেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয় । এর পরিবর্তে সুপ্রভাত (Good Morning) বিদায় (Good Bye) ও হ্যান্ডশেক রেওয়াজ প্রবর্তিত হয়।
১৩) ইমাম-মুফতীদের পাগড়ি ও জুব্বা পরা নিষিদ্ধ করা হয়।
১৪) হিজরী সন উঠিয়ে দিয়ে ইংরেজী সন চালু করা হয়
১৬) আরবী ভাষায় নাম রাখা নিষিদ্ধ হয়। এর বদলে তুর্কী ভাষায় বাধ্যতামূলক নাম রাখতে হয়।
১৭) আলেমদের প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙ্গে দেয়া হয় এবং আলেমদেরকে প্রজতন্ত্রে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কোন আলেম তার বিরুদ্ধাচরণ করলে তাকে সাথে সাথে হত্যা করা হয়। এছাড়া ওয়াকফ সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে আলেমদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করা হয়।
এখানে লক্ষণীয় যে, এ ঘটনাগুলো হচ্ছে আজ থেকে প্রায় ৯০ বছর আগে এবং তা করা হয়েছিলো উছমানিয় খেলাফত বন্ধ করার পর। বলাবাহুল্য সে সময় মানুষের মধ্যে জোর ইসলামী চেতনা দৃঢ় থাকার পরও এতটা এগ্রেসিভ হতে পেরেছিলো
কামাল আতার্তুক।
কিন্তু এখন তো বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় চেতনা অনেকটাই দুর্বল। তার উপর কামাল আতার্তুক সে সময় যা যা করেছে তার অনেকগুলোই ইতিমধ্যে বাংলাদেশে জারি করা হয়েছে বা চেষ্টা চলছে। তবে শুধু সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম দেখে পুরোপুরি আইনত জারি করা যাচ্ছে না। কিন্তু সংবিধান থেকে রাষ্ট্র ইসলাম তুলে দেওয়ার সাথে সাথে কামাল আতাতুর্ক কেন, তার থেকে বহুগুন কঠিনভাবে বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করা হবে ইসলাম ধর্মকে, এটা বলা যায় নিশ্চিত। আমার মনে হয়, এ ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষের সতর্ক হওয়া জরুরী । কারণ আর মাত্র ১৫ দিন পরেই সুপ্রীম কোর্টে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘ইসলাম ধর্ম’ তুলে দেওয়া সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানী। আর একবার যদি আইন জারি হয়ে যায়, তবে তা পরিবর্তন করা সহজ নয়। সত্যিই আজ বাংলাদেশের আকাশের ঘনকালো মেঘের ঘনঘটা, মনে হচ্ছে বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য শিঘ্রই বড় কোন দুর্যোগ আসছে, দেখা যাক কি হয়। বিস্তারিত জানতে লিংক দেওয়া হল।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন