আল্লাহু আকবার; আল্লাহ সবচেয়ে বড়
লিখেছেন লিখেছেন খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ০৮ অক্টোবর, ২০১৫, ০২:১৮:৪৮ রাত
আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সবচেয়ে বলতে কী বুঝানো হচ্ছে? সবচেয়ে বলতে বুঝানো হচ্ছে সমস্ত জিনিস। সমস্ত জিনিসগুলো কত বড়? জানা নাই। তাহলে আল্লাহ কত বড় তাও বুঝা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তার সৃষ্টিজগত, তার ক্ষমতা, তার গুনাগুণ দেখে মানুষকে মেনে নিতে হবে তিনি সবচেয়ে বড়। এই মেনে নেয়ার নামই ইমান। এই ইমান যারা এনেছে তারা সফল হবে। আর যারা ইমান আনবে না তারা সফল হবে না। কেও ইমান না আনলেও আল্লাহর বড়ত্বের মধ্যে কোনো কমতি হবে না। এমনকি সমস্ত সৃষ্টিজগতও যদি আল্লাহর বড়ত্ব স্বীকার না করে তাহলেও আল্লাহর বড়ত্বের মধ্যে কোনো কমতি হবে না। আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী। বাদশাহের বাদশাহ। তিনি সবার উপরে সরদারি করতে পছন্দ করেন। সেটা তাঁকেই শুধু মানায়। আর কাওকে মানায় না। তিনি নিজের ইচ্ছায় সমস্ত জগত সৃষ্টি করেছেন। মানুষ আর জ্বিন ছাড়া সমস্ত প্রাণী তার আদেশের বাইরে এক চুলও যেতে পারে না। মানুষ আর জ্বিন কিছু সময়ের জন্য আল্লাহর আদেশের অবাধ্য হতে পারে। এই শক্তিও তিনি নিজেই দিয়েছেন। কারণ কোটি কোটি অনুগত প্রাণী তৈরি করার পর আল্লাহ তালা ভাবলেন এবার এমন কিছু প্রাণী তৈরি করব যাদের ভিতরে আমার আদেশের অবাধ্য হওয়ার ক্ষমতা দেয়া হবে। তাদের মধ্যে অবাধ্যতার ক্ষমতা থাকা স্বত্বেও যারা আমার আদেশ পালন করবে তাদেরকে আমি অন্য সবার চেয়ে বেশি পুরস্কার দেব। আর আদেশ মানতে ভুলত্রুটি হয়ে গেলে অথবা কিছু দিন অবাধ্য থাকার পরে আবার ফিরে এসে ক্ষমা চাইলে তাদেরকে ক্ষমা করে দেব।
আল্লাহর রাজত্বে টু শব্দ করার মত কেও নাই। কোটি কোটি প্রাণী রাত দিন প্রতি সেকেন্ড, প্রতি মুহূর্ত আল্লাহর বড়ত্বের ঘোষণায় রত রয়েছে। তারা আল্লাহর ইবাদত করেই চলেছে অনবরত। বছরের পর বছর যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী, সহস্রাব্দের পর সহস্রাব্দ এমনকি সৃষ্টির শুরু থেকে সৃষ্টির শেষ পর্যন্ত তারা আল্লাহর ইবাদতের মধ্যেই রত থাকবে। কেও আল্লাহকে সিজদারত অবস্থায় কেও রুকু অবস্থায় রয়েছে সেই শুরু থেকে। একবিন্দু ক্ষমতা কারো কাছে নাই এদিক সেদিক করার। তিনি বাদশাহ। তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন। অন্য সবাই তার গোলাম। সব কিছুই গোলাম। বিন্দু থেকে সিন্ধু সব কিছুর খবর তিনি পরিপূর্ণভাবেই রাখেন।
সমস্ত প্রাণীকেই তিনি অবিরত রহমত করেই যাচ্ছেন। তার রহমত ছাড়া কোনো বস্তুর অস্তিত্ব বাকি থাকতে পারে না। আসমান-জমিন-চাঁদ সূর্য, বাতাস-পানি, গাছ-পাল, তরু-লতা সব কিছুই তার গুণগান করছে। একেক সৃষ্টিকে তিনি অন্য আরেক সৃষ্টির জন্য রহমত হিসেবে তৈরি করেছেন। প্রত্যেকেই আবার তার হুকুমের গোলাম। তার অনুগ্রহ গুনে কেও শেষ করতে পারবে না। وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
আল্লাহ সব চেয়ে বড়। সমস্ত জগতের চেয়ে বড়। সমস্ত সৃষ্টি জগতের চেয়ে বড়। তিনি অসীম। তার ক্ষমতা অসীম। তার দয়া অসীম। তার বড়ত্ব অসীম। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। সমস্ত সৃষ্টির ইবাদতে অথবা সমস্ত সৃষ্টির অবাধ্যতায় তার কোনো লাভ ক্ষতি নাই। তিনি সৃষ্টিজগতের উপর নিজ থেকেই দয়া করছেন। সমস্ত সৃষ্টিকে তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। কারো কিছুই বলার নাই। তিনি স্রষ্টা। সব চেয়ে বড় অপরাধীকেও ক্ষমা করে দিলে তাকে কেও কিছুই জিজ্ঞেস করতে পারবে না।
পৃথিবী ও মহাকাশের প্রতিটি কণা তার প্রশংসায় রত। মহাকাশের সীমা কোথায় তা এখনো কেও জানে না। দূরভিক্ষণ যন্ত্র দিয়ে কোটি কোটি আলোকবর্ষ পর্যন্ত দেখেও মহাকাশের সীমানা পাওয়া যায়নি। আল্লাহ জানেন এর সীমানা কোথায়। এত বড় সৃষ্টিজগতের প্রতিটি অণুর খবর আল্লাহ পরিপূর্ণভাবেই রাখেন। তিনি একটি বিন্দুতে পুরো মহাবিশ্ব ভরে রাখতে পারেন। আবার একটি বিন্দুকে তিনি বিরাট মহাবিশ্বে পরিণত করতে পারেন। তিনি অসীম ক্ষমতার অধিকারী। فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৮ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন