নাটক সিনেমার গোপন বার্তা
লিখেছেন লিখেছেন খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০৩:০১:৫৮ দুপুর
পুর্ব প্রকাশের পর
১/ বাংলাদেশের সমাজে মসজিদের ইমাম ,মাওলানা, মৌলভী সাহেবগণ অবশ্যই দাড়ি রাখেন। তারা সবার কাছে সম্মানের পাত্র হিসেবে গণ্য হন। আর সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা দাড়ি, টুপি পড়েন তারা সাধারণত দ্বীনদার, পরহেজগার নামাজি ব্যাক্তি হয়ে থাকেন। তারা তুলনামূলক ভাবে অন্যের চেয়ে ভাল মানুষ হয়ে থাকেন। সবাই তাদেরকে মোটামুটি সম্মান করে। কিন্তু বাংলা নাটক আর সিনেমায় চিটার, বাটপার, দাগাবাজ, লম্পটদের চরিত্রে যারা অভিনয় করে তাদের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি পরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু কেন? দাড়ি টুপি যারা পরে তাদেরকে খারাপ মানুষ হিসেবে দেখানো হয় কেন? এখানে সমাজের বাস্তব চিত্রকে সম্পূর্ণ উলটে দেয়া হচ্ছে কার স্বার্থে? ইসলামকে অপমান করা আর মুসলমানদেরকে খারাপ মানুষ হিসেবে প্রচার করাই কি এর উদ্দেশ্য? কার স্বার্থে এটা করা হল? এটা কি পরিচালকগণ তাদের মনের অজান্তে করে থাকেন? নাকি ইচ্ছে করেই সমাজের বাস্তব অবস্থাকে পালটে দিয়ে ইসলাম আর মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে এটা করছেন? এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল নয়। নাটক সিনেমায় কোন দৃশ্য কিভাবে নেয়া হবে তা খুব পরিকল্পিত ভাবেই করা হয়। একবারের দৃশ্য অনেক বার চেষ্টা করে ধারণ করা হয়। নিশ্চয় এখানে ইচ্ছে করেই খারাপ মানুষের চরিত্রে অভিনয়কারীর মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি পরানো হয়। কিন্তু দর্শকদের অনেকেই অত কিছু চিন্তা করে না। তারা দেখছে যে, মুখে দাড়ি রেখে আর মাথায় টুপি দিয়ে খারাপ কাজ করছে কেও। এতে দর্শকদের মনে দাড়ি আর টুপির প্রতি ঘৃণা জন্ম নেয়। বাস্তব সমাজের সাথে এরকম দৃশ্যের আদৌ মিল নাই। তবুও নাটক সিনেমার পরিচালকগণ এই অপকর্মটি বার বার করে যাচ্ছে, আর নিরীহ দর্শকরা তা নিজের অজান্তে গিলে যাচ্ছে। সমাজের বাস্তবতার দিকে দেখলে আমরা দেখি খারাপ মানুষেরা সাধারণত দাড়িও রাখে না, আর নামাজ রোজাও করে না। কিছুটা ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। ব্যতিক্রম কখনো উপমা হতে পারে না। খারাপ মানুষের চরিত্রে অভিনয় করতে সাধারণ মানুষের পোষাক পরালে অসুবিধা কোথায়? আমাদের দেশে দাড়ি টুপিকে সম্মান করা হয়। সেটা না দেখিয়ে দাড়ি টুপিকে অসম্মান করা আর এর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হওয়ার মত দৃশ্য দেখানোর হেতুটা কি?
খারাপ মানুষের চরিত্রে অভিনয়কারীর মুখের দাড়ি আলগা লাগানো হয়েছে এটা দর্শকরা সহজে বুঝতে পারলেও তা কি উদ্দেশ্যে লাগানো হয়েছে তা অনেকেই বুঝতে পারে না। তারা জানে না যে বাস্তবতাকে সম্পূর্ণ উল্টে দেয়ার পেছনে অনেক পরিচালকদের অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করছে। আর যদি তারা নিজেদের অজান্তেও এই কাজ করে থাকে এবং শুধু ব্যবসাই যদি তাদের উদ্দেশ্য হয়ও, তাহলে বলতে হবে তাদের অজান্তে তারা দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করছে।
২/ আবার মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কোনো নাটক সিনেমা হলে তো আর কথাই নাই। সব রাজাকারের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি লাগিয়ে দেয়া যেন বাধ্যতামূলক নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে। কিন্তু কেন? দাড়ি টুপি ছাড়া কেও রাজাকার ছিল না? দাড়ি টুপি ছাড়া মানুষ দেশে সব সময় বেশি। সেই হিসেবে রাজাকারের মধ্যেও দাড়ি টুপি বিহীন মানুষের সংখ্যা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যেখানেই রাজাকারের কোনো দৃশ্য দেখানো হবে সেখানেই দাড়ি টুপি বাধ্যতামূলক ভাবেই লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে কি উদ্দেশ্য? শাহবাগে আন্দোলনকারীরা রাজাকারের কুশপুত্তলিকা পোড়াচ্ছে এবং তাদের প্রতি ঘৃণা ভরে থুথু দিচ্ছে খুব ভাল কথা। কিন্তু রাজাকারের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি লাগাতে হবে কেন? কিছু ইসলাম বিরোধী পত্রিকাতেও দেখা যায় কুকুরের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি পরিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন? দাড়ি টুপি পরা কিছু রাজাকার ছিল তা ঠিক। আবার দাড়ি টুপি ছাড়া রাজাকারের সংখ্যা বেশি ছিল তাও ঠিক। তাহলে সব রাজাকারের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি লাগাতে হবে কেন? এখানেও কি ইসলাম বিরোধিতা এবং মুসলমানদের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা সৃষ্টি করাই আসল উদ্দেশ্য?
দাড়ি আর টুপি ইসলামের নিদর্শন। এটাকে কটাক্ষ করা বা হেয় প্রতিপন্ন করা কোনো মুসলমানের পক্ষে সম্ভব নয়। কুশপুত্তলিকা বানাতে হয় বানাও। কিন্তু তাতে দাড়ি টুপি না লাগালে সমস্যা কি? কুকুরের মাথায় টুপি পরানোর উদ্দেশ্য কি? স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কি কুকুরও রাজাকার ছিল? এবং সেই কুকুরের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপিও ছিল? কুকুরের মাথায় টুপি আর মুখে দাড়ি পরানোতে শুধুই যে দাড়িকে অপমান করা হয় তা বুঝতে উকিল হতে হয় না। কেও হয়ত বলবেন যে, রাজাকারেরা কুকুরের মত কাজ করেছে। আমিও বলি, ভাল কথা তারা কুকুরের মত কাজ করেছে। কিন্তু রাজাকারকে কুকুরের সাথে তুলনা করতে হলে সেটা টুপি দাড়ি ছাড়া কুকুর হতে হবে। কারণ কুকুরের দাড়ি আর টুপি থাকে না। কাওকে যদি কুকুরের ছবি আঁকতে বলা হয় সে যদি দাড়ি টুপি বিশিষ্ট কুকুরের ছবি আঁকে তাহলে যে কেও বলবে এই ছবি ঠিক কুকুরের মত হয় নি। কুকুরকে কুকুরের মত আঁকতে হবে। তবেই সেটা কুকুরের ছবি হবে। যারা কুকুরের মুখে দাড়ি আর মাথায় টুপি পরাচ্ছে তারা আসলে রাজাকারকে নয় ইসলামকেই অপমান করছে। তারা রাজাকারকে কুকুর বানাতে পারে নি বরং কুকুরকে দাড়িযুক্ত করেছে মাত্র। তাদের আসল উদ্দেশ্য ইসলাম বিরোধিতা।
আসল রাজাকারের ফাঁসি চাই আসল বিচারের মাধ্যমে। আর যারা ইসলামকে অপমান করছেন, তারা যদি মুসলমান হন তাহলে যা করছেন তা করার আগে একটু ভাবুন যে, আপনার প্রিয় নবীকে সঃ আপনি অপমান করছেন না তো?
আর যদি হিন্দু হন তাহলে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া কি উচিৎ? এর পরিণাম কি হতে পারে তা ভেবে চিন্তেই কি আপনারা তা করছেন? ইচ্ছে করেই কি মুসলমানদেরকে উস্কানি দিচ্ছেন? যদি তাই করে থাকেন তাহলে আপনি ইচ্ছে করেই দেশের ক্ষতি করছেন।
চলবে .....
বিষয়: বিবিধ
২৫০৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যাবি কই? পালাবি কোথায়?
খাইছি তরে, ধর শালারে।
~:> ~:> ~:>
মন্তব্য করতে লগইন করুন