নাটক সিনেমার গোপন বার্তা
লিখেছেন লিখেছেন খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ২২ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:৫৯:৪৮ দুপুর
পুর্ব প্রকাশের পর
মিডিয়াকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। দর্পণ মানে আয়না। আয়নার কাজ হল কারও চেহেরা যেরকম আছে সেরকম দেখানো। কিন্তু আয়না যদি মানুষের চেহারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাহলে? সেই আয়না দেখে মানুষ ভয়ে আঁতকে উঠে। বার বার বিকৃত চেহারা দেখার কারণে এক সময় সে ভাবতে শুরু করে যে তার চেহারা হয়ত আসলেই এরকম, যেরকম সে আয়নায় দেখছে। ফলে সুন্দর চেহারার যে দাপুটে যুবক এক সময় অসীম সাহস নিয়ে চলা ফেরা করতো, সেই যুবক এখন নিজেকে বৃদ্ধ আর অকর্মা ভাবতে শুরু করে। হীনমন্যতায় ভোগে। ধীরে ধীরে সে বাস্তবেও অসুস্থ হয়ে যায়।
সারা দুনিয়ার মিডিয়া জগতের একই অবস্থা হলেও আমি এখানে আমাদের দেশের মিডিয়ার বিশেষ করে ফিল্মি জগত নিয়ে আলোচনা করব। চেষ্টা করব ফিল্মি জগতের পরিচালকদের এমন কিছু ভুল (ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত) সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে, যে ভুলগুলোর কারণে দেশ ও জাতির মারাত্মক ক্ষতির আশংখ্যা রয়েছে। আশা করি এর দ্বারা সাধারণ মানুষ ফিল্মি জগতের পরিচালকদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্যবিকৃতি এবং মগজ ধোলাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে। আমাদের দেশে যারা নাটক সিনেমা দেখে তাদের অনেকের মধ্যে আবার ভারতীয় ফিল্মের প্রতি আসক্তি আছে। তাই আমার এই আলোচনায় আমাদের দেশের নাটক সিনেমার সাথে প্রসঙ্গক্রমে ভারতীয় হিন্দি বা বাংলা সিনেমার কথাও আসবে।
প্রথমেই একটি কথা বলে রাখি। অনেকেই হয়ত ভাবতে পারেন যে নাটক সিনেমা না দেখলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলব যে, না দেখলে তো খুবই ভাল কথা। তবে আমাদের দেশের কিছু আলেম সমাজের ঘরের সন্তানেরা হয়ত বাবা মা আর উস্তাদের নিষেধের কারণে নাটক সিনেমা দেখে না। কিন্তু আমাদেরকে পুরো দেশ ও জাতি নিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ নাটক সিনেমা দেখে এবং তাদের সন্তানদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নাটক সিনেমা দেখতে উৎসাহিত করে বা অনুমতি দেয়। আবার অনেক ছেলে মেয়ে বাবা মা'র নিষেধ উপেক্ষা করে নাটক সিনেমা দেখে। সেই সব বিরাট জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করলে আমাদেরকে মানতেই হবে যে নাটক সিনেমা বন্ধ করতে বললেও কেও শুনবে না আর দেখতে নিষেধ করলেও ক'জনে তা মানবে? বন্ধ করা বা না দেখা কোনো সমাধান নয়। সমাধান হচ্ছে খারাপ নাটক সিনেমার পরিবর্তে ভাল নাটক সিনেমা তৈরি করা, অপসংস্কৃতির আমদানি নির্ভর সিনেমার পরিবর্তে দেশীয় সংস্কৃতি নির্ভর সিনেমা তৈরি করা, মিথ্যা আর তথ্যবিকৃতির পরিবর্তে সত্য সুন্দর আর বাস্তবতানির্ভর নাটক সিনেমা তৈরি করা। বিকৃতরুচি সম্পন্ন নাটক সিনেমার পরিবর্তে সুস্থ বিনোদনের সহায়ক নাটক সিনেমা তৈরি করা। অন্তত নাটক সিনেমার যে সব বিষয় সূক্ষ্মভাবে মানুষের মগজ ধোলাইয়ের কাজ করে তার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা।
তা ছাড়া নাটক ছিনেমায় ইসলাম সম্পর্কে যে অপব্যাখ্যা আর অপ-প্রচারণা চালানো হচ্ছে তার জবাব দেয়ার জন্যও অনেক সময় তা দেখতে হয়। আর আগেই বলেছি বর্তমান যুগে মিডিয়া একটি শক্তিশালী অস্ত্র। এই অস্ত্র যারা ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে তাদের জবাব একইভাবে ইসলামের পক্ষে মিডিয়া তৈরি করেই দিতে হবে।
বাংলাদেশ আর ভারতে তৈরি সবগুলো নাটক সিনেমা নিয়ে আলোচনা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি এখানে আলোচনা করব শুধু সেই সব বিষয়গুলো নিয়ে যে গুলো ইচ্ছাকৃত ভাবে ইসলাম আর মুসলমানদেরকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য নাটক সিনেমায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। যে গুলো বাস্তবতা বিবর্জিত, মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সাধারণ মানুষের মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে মানুষের অন্তরে ইসলাম আর মুসলমান সম্পর্কে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য যে বিষয়গুলো নাটক সিনেমায় উপস্থাপন করা হচ্ছে তার কয়েকটি চিহ্নিত করাই আমার এই লেখার উদ্দেশ্য।
চলবে ........
বিষয়: বিবিধ
১৫১৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন