ক্ষমতাশালীরা জনগণের সম্পদ চুরি করে বলেই কিছু মানুষ গরীব হয়ে যায়
লিখেছেন লিখেছেন খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ১৪ মে, ২০১৪, ০৯:৩১:০২ সকাল
ক্ষমতাশালীরা জনগণের সম্পদ চুরি করে বলেই কিছু মানুষ গরীব হয়ে যায়
আল্লাহ তালা পৃথিবীতে মানুষের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য, পানীয় ও জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়েছেন। তবুও দেখা যায় মানুষ খাদ্যের অভাবে মরছে, ক্ষুধার কারণে বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে। এর কারণ কি? এর একমাত্র কারণ হচ্ছে কিছু ক্ষমতাশালী মানুষের জনগণের সম্পদ চুরি করা। কিছু মানুষ নিজেরা সম্পদের পাহাড় গড়ছে আর কিছু দিনদিন গরিব হচ্ছে। নিরীহ জনগণের মাথায় হাত বুলিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে জনগণের সম্পদ কেড়ে নিয়ে কেও নিজেরা ভোগ বিলাসে মত্ত হচ্ছে। আরামের অট্টালিকায় ঘুমাচ্ছে। অস্ত্রধারী দেহরক্ষীর পাহারায় পথ চলছে। মদ আর নারী নিয়ে ফুর্তি করছে। আর অন্য দিকে কিছু মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দু বেলা দু মুঠো খাবারের অভাবে কেও কেও অন্যায় পথে পা বাড়াচ্ছে। কেও দেহ বিক্রি করছে, কেও রক্ত বিক্রি করছে আর কেও নিজের প্রিয় সন্তান পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। দুর্ভিক্ষপীড়িত বিভিন্ন দেশের মানুষের ছবি দেখলে ন্যায়পরায়ণ যে কোনো মানুষের চোখে পানি চলে আসে। এসবের একমাত্র কারণ কিছু ক্ষমতাশালী মানুষের সম্পদের পাহাড় বানানো। প্রত্যকে দেশেই এমন কিছু ধনী আছে, যাদের সম্পদ ভাগ করে দিলে পুরো দেশের সব মানুষ ধনী হয়ে যাবে।
কিছু মানুষ জনগণের সুযোগ সুবিধার কথা বলে জনগণের ভোটে অথবা জোর করে ক্ষমতায় বসে দেশের সম্পদ চুরি করে বলেই স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও দেশ এখনো গরিব হয়ে আছে। দেশের জনগণ এখনো অভাবে অনটনে জীবনযাপন করে। দেশের প্রচুর সম্পদ থাকা স্বত্বেও আজকাল কাজের খোঁজে আত্মীয়স্বজন ছেড়ে বিদেশে কঠোর পরিশ্রম এর সাথে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে দেশের অনেক মানুষকে। মানুষ গুম করে মুক্তিপণ আদায়, রাজনৈতিক হত্যা, ধর্ষণ, চুরি ডাকাতির পথে পা বাড়াচ্ছে মানুষ টাকার জন্য।
আমাদের দেশে প্রত্যেক সরকারের আমলেই প্রচুর দুর্নীতি হয়। কেও একটু রেখে ঢেকে দুর্নীতি করে আর কেও প্রকাশ্যে করে, এই শুধু পার্থক্য। দুর্নীতি দমন কমিশন বানানো হয়েছে দুর্নীতিবাজদেরকে ধোয়া তুলসীপাতা বলে সার্টিফিকেট দেয়ার জন্য। তারা সেটা করেছেনও। মন্ত্রী এম পি রা চুরি করে প্রকাশ্যে ধরা পড়ার পরেও দুর্নীতি দমন কমিশন বলেছে ‘না তাদের কোনো দোষ নাই’। এভাবে সরকারী ভাবে জনগণের সম্পদ চুরির মহোৎসব চলছে দেশে। তবে জনগণের সামনে আসলে এরা বলে যে আমরা কিছুই চাই না শুধু জনগণের শান্তি চাই। এরাই আবার নিরীহ মানুষকে গুলি করে মারে। এরাই সন্ত্রাসী লালন করে। এরা দেশের শত্রু। এদের কারণে আজ কোটি কোটি মানুষ সারা জীবন গরিব হয়ে আছে।
এইসব দুর্নীতিবাজদের অনেকের কাছে এমন বেশি সম্পদ আছে যে এদের কয়েকজনের সম্পদ বণ্টন করে দিলে পুরো দেশের সব মানুষ ধনী হয়ে যাবে। এরকম বিশাল সম্পদের পাহাড় তারা গড়েছে শুধু আমার আর আপনার সম্পদ চুরি করে। দেশের জন্য জনগণের জন্য এরা শুধু ততটুকুই করে যতটুকু না করলে তাদের চুরি করার ক্ষমতা হারানোর ভয় থাকে। দেশের মানুষের জন্য বা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এরা কোনো কাজ করে না। যা করে সেটাও তাদের চুরি করার সুবিধার পরিমাণ মত করে। দেশবিরোধী চুক্তি, সরকারি সম্পদ বিক্রির মত জঘন্য দেশ বিরোধী কাজ এরা করতে পারে নির্দ্বিধায়। আর ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে এমন কোনো অন্যায় নাই যা এরা করে না। সন্ত্রাসী লালন, মিথ্যা, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা, ভয় ভীতি দেখিয়ে ভোট আদায়, প্রতিপক্ষকে চিরতরে খতম করে দেয়া এদের কাছে ডাল ভাত। এরা আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা। ভোটের আগে এদের পক্ষে কিছু মানুষ টাকার বলে শ্লোগান দেয় যে ‘অমুক ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র’। আসলে কতটা পবিত্র সেটা জনগণও ভালভাবে জানে এবং তারা নিজেরাও ভালভাবে জানে। আর জানে বলেই এরা সাধারণ মানুষের সামনে আসতে পুলিশের সাহায্য ছাড়া আসে না। অনেকে পুলিশের সাহায্য নিয়েও তাদের অঞ্চলে আসতে ভয় পায়। এরাই আমাদের দেশের নেতা। কিছু ভাল মানুষ হয়ত আছে। তারা সংখ্যায় একেবারেই কম।
এসব নেতারা কত বেশি দেশের সম্পদ চুরি করেছে তা সাধারণ মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না। দেশের প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্ট দুর্নীতিগ্রস্ত। এমন কোনো খাত নাই যেখানে দুর্নীতি হয় না। আর তার সংখ্যাও মা শা আল্লাহ বিরাট বড় বড়। ক দিন আগে এক প্রতিষ্ঠানের সাড়ে চার হাজার কোটি দুর্নীতির খবর বের হলে এক মন্ত্রী বললেন সাড়ে চার হাজার কোটি তেমন বেশি না। তাহলে পাঠক একবার ভাবুন বেশি দুর্নীতি বলতে এরা কত টাকাকে বুঝে? এ থেকে সামান্য আন্দাজ করা যেতে পারে যে এরা প্রতি বছর দেশের কত টাকা চুরি করে। মাহমুদুর রহমান একবার লিখেছিলেন যে দেশের পুরো বাজেটের চেয়ে বেশি টাকা এরা এক বছরে শুধু দুই একটি খাত থেকে চুরি করে। তাহলে পুরো দেশের হিসাব করলে সেটা কত বেশি হবে তা আল্লাহই ভাল জানেন। এইসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করতে হবে। দেশ বাঁচাতে হলে চোর, দুর্নীতিবাজ নেতাদের হঠানো ছাড়া উপায় নাই। সৎ মানুষের শাসন ছাড়া দেশে শান্তি আসতে পারে না।
এই ভাল মানুষগুলো কারা?
ভাল মানুষ কারা এবং ভাল মানুষ কিভাবে চেনা যাবে এবং ভাল মানুষ কিভাবে তৈরি করা যায় তা দেখা যেতে পারে আমার আগের পোষ্টে
বিষয়: বিবিধ
১২৭৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ সুন্দর লিখাটির জন্য।
বাংলাদেশে বছরে যে পরিমান দূর্নীতি হয় তা দিয়ে কয়েকটি পদ্মাসেতু হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন