ঢাকা এয়ার পোর্টে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিস
লিখেছেন লিখেছেন সৃজনশীল ১৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:৪৩:৪৭ সকাল
অবশেষে ভারতীয় ও বাংলাদেশী মিডিয়া গুলো পরোক্ষভাবে স্বীকার করলো বাংলাদেশের এয়ারপোর্টে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিস। এব্যাপারে আমাদের আইজিপি কিছু জানেননা। কেননা ততক্ষনে উপর থেকে কোনো বাণী আসে নাই। কোন দিন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মত কাজ করে যাবে তখনও হয়তো দেশ প্রেমিক পুলিশ ও সেনা বাহিনীর লোকেরা বাণীর জন্য অপেক্ষা করবে। কিন্তু বাণী আসবেনা কারন হাসান মাহমুদরা বহুত আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। স্বাধীন দেশে অন্য দেশের গোয়েন্দা অফিস।
এবার বলতে ইচ্ছে করে ছড়াকার আবু সালেহ-এর সেই ছড়ার লাইন
ধরা যাবেনা, ছোয়া যাবেনা, বলা যাবেনা কথা
রক্ত পেলাম শালার আজব স্বাধীনতা !
ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে এক ভারতীয় নাগরিককে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র.)। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত ভারতভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের (আইএম) সদস্য বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। জিয়াউর রেহমান ওরফে ওয়াকাস নামের ওই ব্যক্তি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করছিলেন বলে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসবির সাবেক একজন অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, ঢাকার বিমান বন্দরে ‘র’-এর কর্মকর্তাদের অবস্থানের বিষয়টি ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এখন আর কেউ নিরাপদ নন।
সূত্র জানায়, টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তা বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিকের অনলাইনে ও অনলাইন পত্রিকায় এ খবরটি প্রকাশিত হলে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে। তবে বিভিন্ন সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোন তথ্য নেই। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। এ ব্যাপারে আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমার কাছে এ সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের এসএস (বিশেষ পুলিশ সুপার) নাফিউল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সদস্য জিয়াউর রেহমান ওরফে ওয়াকাস নামের যে ব্যক্তিকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ধরে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে ইমিগ্রেশনে কোন তথ্য নেই। আমাদের ইমিগ্রেশনে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ইমিগ্রেশনের বাইরে বিমানবন্দরের অন্য কোথাও কিছু হয়ে থাকলে সে বিষয়ে আমাদের বলা সম্ভব নয় বলে ইমিগ্রেশনের ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, কোন বিদেশী নাগরিক কিংবা নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠনের কোন সদস্য বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে গ্রেফতার বা ধরা পড়লে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে ওই নাগরিককে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়। পরে ওই বিদেশী নাগরিককে আদালতে হাজির করা হয় এবং আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হয়। কিন্তু কোন নাগরিককে (দেশী-বিদেশী) বিমানবন্দর থেকে সরাসরি অন্য দেশের কোন সংস্থা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা আইনের পরিপন্থী। টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদটি সঠিক কি না তা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াকাস বাংলাদেশে লুকিয়ে ছিলেন। নেপাল হয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘র’-এর জালে বন্দী আটকা পড়লেন এই আইএম সদস্য। তবে ধরা পড়ার পর ওয়াকাসকে কীভাবে বিমানবন্দর থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হলো এবং সেখান থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা পরিষ্কার নয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট তৈরিতে আইএসআইয়ের সামান্য ভুলের কারণে তাদের দোসর ওয়াকাস ঢাকা বিমানবন্দরে ধরা পড়েন। পরে চলে যান ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার ভাষ্যমতে, ওয়াকাস যে বাংলাদেশে রয়েছেন, সে খবর ‘র’ এর কাছে ছিল। কিন্তু তিনি ঠিক কোথায় আছেন, তা তাদের জানা ছিল না।
ভারতীয় পত্রিকাটি জানায়, ওয়াকাসকে একটি পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল আইএসআই। তিনি বিমানবন্দরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের অভিবাসন কর্মকর্তারা দেখতে পান যে, তার পাসপোর্টে এন্টি স্ট্যাম্প নেই। এরপরই বাংলাদেশী কর্মকর্তারা তাকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেয়। এই বিষয়টি এক ‘র’ কর্মকর্তার নজরে পড়ে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তার স্মার্টফোনের সাহায্যে ছবিসহ খবরটি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। ‘র’ কর্মকর্তারা ঢাকা বিমানবন্দরে ৬ ফুট লম্ব^া লোকটির ছবি দেখে উল্লসিত হয়ে ওঠে। পত্রিকাটি জানায়, এরপর ‘র’ কোনো প্রমাণ না রেখেই তাকে ভারতে নিয়ে যায়। তবে কিভাবে ভারত বাংলাদেশ থেকে তাকে নিয়ে গেল তা টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়নি।
তথ্যসূত্র: ১৬ এপ্রিল ২০১৪, ০৩ বৈশাখ ১৪২১, ১৫ জমাদিউস সানী ১৪৩৫ হিজরী, দৈনিক ইনকিলাব
বিষয়: বিবিধ
১৪১২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এত মানুষের রক্তের সাথে আর কত বেঈমানী?????
মন্তব্য করতে লগইন করুন