হে হে হে ! শামীম সাব সব জানেন !
লিখেছেন লিখেছেন ব্যতিক্রম বলছি ১০ মে, ২০১৪, ০৯:১২:২৭ রাত
আমি বলতে পারি কারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে : শামীম ওসমান
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত হত্যা এখনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এ হত্যার জন্য নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ একে অন্যকে দোষারোপ করছে। এর পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত কি না সে কথাও উঠছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা ব্যক্তিগত রেষারেষি থেকে ঘটতে পারে এমন হত্যাযজ্ঞ। এসব বিষয় নিয়ে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসনের সাংসদ ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ
ঢাকাটাইমস: প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে কী কারণে হত্যা করা হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
শামীম ওসমান: দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নয়ন বিশেষ করে জঙ্গিবাদ দমনে র্যাবের ভূমিকা প্রশংসনীয়। কিন্তু র্যাবের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রচারণা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে করা হচ্ছে। প্রথমত ওই ঘটনা র্যাবকে বিতর্কিত করার জন্য হতে পারে। দ্বিতীয়ত সরকারকে বিব্রত করার একটা প্রয়াস হতে পারে। আরেকটা হতে পারে নিছক ব্যক্তিগত শত্রুতার বশবর্তী হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে চুক্তি করে এ রকম একটি ভুল পদক্ষেপ নেওয়া। ওই হত্যার পেছনে তিনটার একটা কারণ থাকতে পারে। এটা বের করার দায়িত্ব সরকারের, আমার নয়।
ঢাকাটাইমস: ঘটনার পর পরই নজরুলের পরিবার আপনার কাছে গিয়েছিল। আপনি তাদের জন্য কী করেছেন?
শামীম ওসমান: ঘটনার পর নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের বসিয়ে রেখে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন করেছি। তারা বলেছেন, আমরা চেষ্টা করছি জীবিত উদ্ধার করার। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর আমার মনে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কেউ এ বিষয়ে কিছু জানতেন না। তবে আমি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারি যে, এই ঘটনা কারা ঘটাতে পারে।
ঢাকাটাইমস: তাহলে বলছেন না কেন?
শামীম ওসমান: আমি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তাছাড়া কোনো মামলায় তদন্ত চলাকালে সে বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়। মামলার তদন্ত চলছে। আশা করছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের ধরতে সক্ষম হবে।
ঢাকাটাইমস: নজরুল ইসলামের শ্বশুর বলেছেন ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাব তুলে নিয়ে হত্যা করেছে।
শামীম ওসমান: এটা নজরুলের শ্বশুরের কথা, আমার নয়। আর এখন ওই ভদ্রলোকের কথা ধরা ঠিক হবে না। কারণ, ওনার মাথা ঠিক নেই। আমি কিন্তু একবারও র্যাবের কথা বলিনি। নজরুল অপহরণ হওয়ার আগে কয়েক মাস নারায়ণগঞ্জেই ছিল না। কিন্তু ঘটনার আগের দিন আমার কাছে গিয়ে বলেছিল ভাই, আমার তো কাল জামিন নিতে হবে। আমি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতিকে বলে দেই যে তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা না নিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করে দিতে। কারণ তারা দলের লোক। আমি এও বলেছি একা যেও না ৬-৭ জন একসঙ্গে যেও। কিন্তু আমার ধরণাই ছিল না যে, ৬-৭ জন লোককে এভাবে দিনে- দুপুরে তুলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ঢাকাটাইমস: কেন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী
নারায়ণগঞ্জের খুন-গুমের জন্য আপনাকে দায়ী করেন?
শামীম ওসমান: আইভী শুধু অভিযোগই করে গেলেন। কিন্তু একবারও তিনি কোনো একটি ঘটনার প্রমাণ দিতে পারেননি। আইভী বিশেষ মহলের ইন্ধনে ও ইশারায় এ কাজটি করছেন।
ঢাকাটাইমস:ঘটনার পর পরই নজরুল ইসলামের পরিবার নূর হোসেনকে এর জন্য দায়ী করেছেন।
শামীম ওসমান: হ্যাঁ এটা ঠিক। ঘটনার পর পরই নজরুলের পরিবার নূর হোসেনের নাম বলেছেন।
ঢাকাটাইমস: কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি বলে নজরুলের পরিবারের অভিযোগ। অথচ ২৭ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল নূর হোসেন প্রকাশ্যে ঘুরে বেরিয়েছেন।
শামীম ওসমান: এটা আমি আজকে (৪ মে) শুনলাম। আমি আগে জানতাম না। কিন্তু ঘটনার দুই ঘণ্টা পর নজরুলের পরিবারের অনুরোধে আমি নূর হোসেনকে ডেকে নিয়েছিলাম। প্রথমে আমি তাকে আদর করেছি, বুঝিয়েছি, সব কিছু বলেছি। আমি মনে করেছি এমন গ-গোল তো হতেই পারে। তখন ও আমাকে বরাবরই অস্বীকার করলো। বুঝলাম যে এটা আমাকে দিয়ে সম্ভব হবে না। পরে ও চলে গেছে।
ঢাকাটাইমস: নূর হোসেনের সঙ্গে আপনার সম্পর্কের বিষয়ে কথা হচ্ছে।
শামীম ওসমান: আমি এলাকার সাংসদ। তাছাড়া গত ৫ বছর আমি এই পদে ছিলাম না। আমার কোনো ক্ষমতাই ছিল না। নূর হোসেন যা করেছে তা আগের সংসদ সদস্যের জোরেই করেছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও দলের নেতা হিসেবে সবাই আমার লোক।
ঢাকাটাইমস: নিহত নজরুল ইসলাম, চন্দন সরকার এবং এর আগে জহিরুল ইসলাম পারভেজ ওরফে ক্যাঙ্গারু পারভেজ এরা আপনার লোক বলে বিভিন্ন সময় আপনার বক্তব্যে মনে হয়েছে। আপনার লোকদের ধরে ধরে এভাবে মেরে ফেলা হচ্ছে কেন?
শামীম ওসমান: এ প্রশ্ন তো আমারও। এটা তো অনেক আগে থেকেই হচ্ছে। ২০০১ সালের ১৬ জুনের বোমা হামলা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আমার অনেক নেতা-কর্মীকে গুম-অপহরণ-খুন করা হয়েছে। আর বলা হচ্ছে এ সবের জন্য আমি ও আমার পরিবার দায়ী। নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে তিলে তিলে ধ্বংস করার জন্যই কাজ করছে খোন্দকার মুশতাকের প্রেতাত্মারা । আমার নিজের জীবনও হুমকির মুখে। এ জন্য আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। এখনও জিডি করার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আমি সেটা জানতে পারিনি।
ঢাকাটাইমস: আপনি কী ব্যবস্থা আশা করছেন?
শামীম ওসমান: একজন সাধারণ মানুষও যদি জিডি করে তাকে তো অন্তত জিজ্ঞাসা করতে হবেÑকেন আপনি ভয় পাচ্ছেন? আমাকে এখনও এ ধরনের কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। ২০০১ সালের ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জে একটা বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল দলীয় কার্যালয়ে। ওই বিস্ফোরণে ২০ কর্মী মারা গিয়েছিল। আমি আধাপঙ্গু হয়েছিলাম এবং অনেকে চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে। আমরা ক্ষমতায় থাকলেও কাউকে কিন্তু একটা ফুলের টোকা দেইনি। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই বোমা হামলার মামলায় আমাদেরকে আসামি বানানো হলো এবং ফাঁসানোর চেষ্টা করা হলো। আল্লাহর রহমতে পরে ভারতে মুরসালিন এবং মুক্তাকিম নামে দুই জঙ্গি ধরা পড়লো। তারা তখন নারায়ণগঞ্জের ওই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। হিন্দুসহ ভারতের বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সেই খবর বেরিয়েছে। বাংলাদেশে কারা কারা জড়িত ছিল তাদের নামও এলো। পরে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি রিভিউ করল। এখন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমি দেশে ফিরলাম। আমার এক বছর পর ফিরলেন নুরুল আমিন মাকসুদ। তরুণ লীগের সভাপতি। যার বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা একটা জিডি পর্যন্ত নেই। শুনলাম সেই নুরুল আমিন মাকসুদকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো। পরে তার লাশ মিললো গাজীপুরে। ওই হত্যার বিচার পাইনি। নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসী এলাকা বলছেন অথচ গুলশানকে বলছেন না কেন? গুলশান থেকে পারভেজকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো। আজও তার খোঁজ পেলাম না।
ঢাকাটাইমস: আপনি এর জন্য কাকে দায়ী করবেন?
শামীম ওসমান: এটাকে সরকারের ব্যর্থতা বলব না। কারণ, সরকার ইতিমধ্যে একটা পদক্ষেপ নিয়েছে। এই ঘটনায় কারা দায়ী এটা বলতে হলে একটু পেছনে তাকাতে হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংকরোড থেকে শুরু করে কাঁচপুর ব্রিজের আগ পর্যন্ত বিশাল একটা জমি আছে বাম দিকে। যেটা বিল এলাকা। যেখানে আগে কোনো বাড়িঘর ছিল না। এখন হচ্ছে। কিন্তু ওই এলাকায় কোটি কোটি টাকার মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। এত টাকা কোথা থেকে এলো? মাদ্রাসা হওয়া খারাপ এটা আমি বলব না। গোলাম আযম যখন বাংলাদেশে ফিরল তখন প্রথমে নাগরিকত্ব না পেয়ে নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিল। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জামায়াত এবং জঙ্গিদের পরিকল্পনায় তারা ঢাকা আক্রমণ করতে চায়। এজন্য ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জকে উপযুক্ত জায়গা বলে মনে করে। কারণ, নারায়ণগঞ্জ ঢাকার খুব কাছে। ৫ মে হেফাজতের কর্মসূচিতে সেটা দেখা গেছে। এ সবের সঙ্গে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী জড়িত বলে আমি মনে করি।
ঢাকাটাইমস: আপনার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ আপনি বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলেন। আর মামলা দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
শামীম ওসমান: মামলা আমি দেইনি। মামলা দিয়েছেন পারভেজের স্ত্রী সোহানা। কারণ তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার আগে নারায়ণগঞ্জের শহীদ মিনার এলাকায় তার স্বামী পারভেজের ওপর হামলা হয়েছিল। পুলিশকে গুলি করতে হয়েছিল তার স্বামীকে রক্ষা করতে। যারা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকাটাইমস: আপনি একটা সিডি পেয়েছেন। যেটার মধ্যে কিছু কথোপকথন আছে। যেটার ওপর ভর করে আপনি বলছেন নূর হোসেনই নজরুল ইসলামকে হত্যা করেছে। সিডিটা কবে, কোত্থেকে এবং কীভাবে পেয়েছেন?
শামীম ওসমান: একজন ভদ্রলোক সাংবাদিকদের মাধ্যমে সিডিটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। গত ৪ মে ওই অডিও সিডিটি আমার ও নজরুলের শ্বশুরের কাছে আসে। আমি প্রথমেই সেটি কপি করে পুলিশ সুপারের কাছে পাঠাই। পরে সেটা জনসভায় প্রচার করা হয়।
ঢাকাটাইমস: সাত হত্যার পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা বলছেন?
শামীম ওসমান: হ্যাঁ আমি তা বলছি। আমি সুনির্দিষ্টভাবেই বলেছি। কারণ, আমি রাজনীতি করি। সত্যি বলার জন্যই আমি জন্ম নিয়েছি। এ জন্যই আমার বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার। অনেকে আমার ওপর খুব অসন্তুষ্ট। কোনো একক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এভাবে দুটি গাড়িতে করে তাদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। দিনে-দুপুরে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। যখনই মানুষ বুঝতে পারবে এটার বিচার হবে, তখন আর সাক্ষীর অভাব হবে না। এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিহতদের পরিবার। যাদের ক্ষতি কোনোদিন পূরণ হবে না। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকার। সরকার আজ বিব্রত এবং বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি। তারপর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি আমি। কারণ, তারা ছিলেন আমার দলের কর্মী। আমার হাতে গড়া কর্মী।
ঢাকাটাইমস: তাহলে কী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই?
শামীম ওসমান: সব সাংবাদিক বা রাজনীতিবিদ কী এক? কখনই নয়। সব পীর সাহেব ভালো মানুষ? কখনই নয়। খারাপ-ভালো সব ধরনের মানুষ সব বিভাগে আছে। আমার কাছে কেন জানি মনে হচ্ছে এটা এক ঢিলে দুই-তিন পাখি মারা হয়েছে। কেন? যেখান থেকে তাদের অপহরণ করা হয়েছে একই জায়গা থেকে কদিন আগে আবু বকর সিদ্দিককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকার বিব্রত হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ওই ভদ্রলোক উদ্ধার হয়েছে। ওই ভদ্রলোকের স্ত্রী রিজওয়ানা হাসান। তার স্বামী মারা গেলে তিনি বিধবা হতেন। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। কিন্তু মাকসুদ ও পারভেজের স্ত্রীরা ঠিকই বিধবা হয়েছেন।
ঢাকাটাইমস:নারায়ণগঞ্জে আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু কারা?
শামীম ওসমান: আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের অনেকেই দেশে থাকেন না। তারা দেশের বাইরে থাকেন। এছাড়াও অনেক বন্ধু আমার আছে। ওভাবে কারো নাম এখন বলা যাবে না।
ঢাকাটাইমস:সবচেয়ে বড় শত্রু?
শামীম ওসমান: কাউকে আমি শত্রু ভাবি না। কিন্তু অনেকে আমার সঙ্গে দুশমনি করে। আমি শত্রু মনে করি তাকেই যে দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। স্বাধীনতার মূল্যবোধে বিশ্বাস করে না। ইসলামের মূল্যবোধে বিশ্বাস করে না। ইসলামের অপব্যাখ্যা দেয়।
ঢাকাটাইমস: আপনি বলেছেন শামীম ওসমান হেঁটে গেলে কেউ আস্ত থাকবে না। এটা দিয়ে কী বুঝাতে চেয়েছেন?
শামীম ওসমান: গত ১৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হয়েছিল। সেদিন দুটি সভা হয়েছে। একটি মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের। আর ত্বকী মঞ্চের উদ্যোগে আইভীদের। আইভীদের ওই সমাবেশ থেকে বলা হয়েছিল, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেখবেন শামীম ওসমানের চেলাচামু-াদের কী হয়। শামীম ও নাসিম ওসমানকে ১০০ হাত মাটির নিচে দাবিয়ে দেওয়া হবে। এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য হতে পারে না। ওই কথার প্রেক্ষিতেই আমি বলেছি তাদের প্রতিহত করার জন্য প্রশাসনের দরকার নেই। যখন লাখ লাখ লোক হেঁটে যাবে তখন এই ধরনের কীটপতঙ্গ লাখ লাখ লোকের পায়ের তলায়ই পড়ে যাবে। এই বক্তব্যই অনেকে অন্যভাবে নিয়েছে।
ঢাকাটাইমস:ত্বকী মঞ্চ কোনো কর্মসূচি ডাকলে আপনি পাল্টা কর্মসূচি ডাকেন এমন অভিযোগ আছে। অথচ ত্বকীর বাবা রাফিউর রাব্বি স্বাধীনতার মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন। গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তাদের একজন ছিলেন?
শামীম ওসমান: ওপর দিয়ে আপনাদের কাছে তাকে (রাফিউর রাব্বি) যতই ভালো মানুষই মনে হোক আসলে ভেতরে অতটা ভালো নয়। আর নারায়ণগঞ্জে অন্যদের মতো আমিও চাই ত্বকী হত্যার বিচার হোক। আমার নিজের স্বার্থেই চাই। কিন্তু ত্বকী হত্যা মামলায় দুইজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রথমজন বলেছেন, সে নিজে ওই হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। সে অন্যদের নামও বলেছে। সেখানে আমার পরিবারের কারো নাম ছিল না। কিন্তু তার বক্তব্য আমলে নেওয়া হয়নি। যখন মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হলো তখন আরেকজনের হাত-পায়ের নখ তুলে জবানবন্দি নেওয়া হলো। সে বললো ওই ঘটনায় জড়াতে তাকে বাধ্য করা হয়েছে। সে আমার ভাতিজার কথা বললো। আগের বক্তব্যটি না ধরে পরের বক্তব্যটি ধরা হলো। মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার করা হলো। যেখানে মিডিয়া ট্রায়াল বলে। এখানে একইভাবে টাকার খেলা চলছে।
ঢাকাটাইমস: আপনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন সাবেক সাংসদ কবরী সারওয়ারের মতো আপনি নন।
শামীম ওসমান: একের পর এক খুন-গুমের ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে অনেক গোপন কথা জানিয়েছি। তিনি আমাকে বলেছেন, শামীম আমি মা-বাবা-ভাই হারিয়েছি। আমি জানি স্বজন হারানোর দুঃখ কী। এ ধরনের কর্মকা- যাতে আর না ঘটে সে জন্য যা করার তাই করতে হবে। এ সব অন্যায়ের জন্য কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। নেত্রীর কথা না মানলে কারোর জন্যই ভালো হবে না।
বিষয়: বিবিধ
১৪২২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন